পাকিস্তানের নাগরিকদের সংবেদনশীল তথ্য চুরির অভিযোগ Huawei-এর বিরুদ্ধে

সংবেদনশীল তথ্য চুরিকে কেন্দ্র করে Huawei-এর বিরুদ্ধে এক বড়োসড়ো অভিযোগ প্রকাশ্যে এল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ফার্ম অভিযোগ করেছে যে, Huawei Technologies Co পাকিস্তানকে না জানিয়ে তাদের নাগরিকদের তথ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে চিনা প্রযুক্তি সংস্থাটি পাকিস্তানের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের (national ID card) রেকর্ড, ট্যাক্স রেকর্ড এবং আরও অনেক কিছু অবৈধভাবে ব্যবহার করতে পারে।

বুধবার ক্যালিফোর্নিয়া জেলা আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় এই অভিযোগ করা হয়েছে। Huawei-এর বিরুদ্ধে মামলাকারী সংস্থাটি হল বিজনেস এফিসিয়েন্সি সলিউশনস এলএলসি (Business Efficiency Solutions LLC) বা BES। মামলাটিতে BES বলেছে যে, হুয়াওয়ে চীনে বেআইনিভাবে এমন একটি সিস্টেম স্থাপন করতে চাইছে, যার মাধ্যমে তারা লাহোরের “safe-cities surveillance project” থেকে সংবেদনশীল তথ্যের অ্যাক্সেস পায়। এর জন্য BES প্রাথমিকভাবে Huawei-কে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন চাওয়ার আর্জি জানিয়েছিল, কিন্তু হুয়াওয়ে তার না করায় সংস্থাটি হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক মামলাটি দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি আইনি বিরোধের উত্তরসূরি। Huawei এবং BES প্রাথমিকভাবে ২০১৬ সালে লাহোরের সেফ-সিটি প্রোজেক্টে একসাথে কাজ করেছিল। হুয়াওয়ে এই প্রকল্পের জন্য সফ্টওয়্যার এবং অন্যান্য সার্ভিস প্রদানের জন্য BES-কে নিয়োগ করে। এই অন্যান্য সার্ভিসের মধ্যে একটি ছিল ডেটা এক্সচেঞ্জ সিস্টেম বা DES তৈরি করা। এই ডেটার মধ্যে ন্যাশনাল আইডি কার্ড রেকর্ড এবং বিদেশী নিবন্ধন (foreigner registrations) থেকে শুরু করে ট্যাক্স রেকর্ড এবং ক্রিমিনাল রেকর্ড পর্যন্ত থাকতে পারে। কিন্তু ক্রমে ফার্মগুলির মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে এবং উভয় সংস্থাই পাকিস্তানে একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে, যা আজ পর্যন্ত চলছে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় সাম্প্রতিক মামলায় BES অভিযোগ করেছে যে, লাহোরে DES ইনস্টল করার পর Huawei দাবি করেছে যে তারা পূর্ব চীনের সুঝৌ শহরে একটি ডুপ্লিকেট DES ইনস্টল করবে। BES-এর বিবৃতি অনুসারে, এই DES লাহোরের মূল DES-এর ব্যাকডোর হিসেবে কাজ করতে পারে, যা হুয়াওয়েকে পাকিস্তানে সংগৃহীত তথ্যের সরাসরি অ্যাক্সেস দেয়।

লাহোর প্রকল্পের তত্ত্বাবধানকারী পাঞ্জাব সেফ সিটিজ অথরিটি (Punjab Safe Cities Authority) BES-এর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। কর্তৃপক্ষ Huawei-এর কাছ থেকে যথাযথ ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একটি ডেটা সিকিউরিটি চেকও করছে। যদিও জানা যাচ্ছে যে Huawei কর্তৃক কোনো তথ্য চুরির প্রমাণ এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি। প্রসঙ্গত হুয়াওয়ের একজন মুখপাত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন যে, সংস্থাটি অন্যদের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টির কদর করে এবং এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন