২০২৭ সালের শেষে ভারতে ৫০ কোটি 5G ব্যবহারকারী থাকবে, বলছে Ericsson Mobility-র রিপোর্ট

5G-কে কেন্দ্র করে ভারত সহ গোটা বিশ্বে ব্যাপক পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে, এবং ইতিমধ্যেই বিশ্বের বেশ কয়েকটি জায়গায় 5G-র আগমনও ঘটে গেছে। কিন্তু ভারতে ঠিক কবে যে 5G নেটওয়ার্ক চালু হবে, সে সম্পর্কে কিন্তু এখনও ধোঁয়াশা রয়েই গেছে। তবে 5G এলে কী কী ঘটনা ঘটতে পারে, সেই নিয়ে কিন্তু একের পর এক সমীক্ষা বা সার্ভের খবর আমরা প্রায়শই শুনে থাকি। সম্প্রতি এরকমই এক সমীক্ষার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। Ericsson মঙ্গলবার নভেম্বর ২০২১-এর জন্য Ericsson Mobility Report লঞ্চ করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অনুমান করা হচ্ছে যে, ২০২৭ সালের শেষের দিকে ভারতে প্রায় ৩৯ শতাংশ মোবাইল গ্রাহকই 5G-র হাত ধরবে, অর্থাৎ ভারতে আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) 5G সাবস্ক্রাইবারের দেখা মিলবে।

ফলে ৪জি-র একচ্ছত্র রাজত্ব যে ৫জি-র আগমনে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৪জি সাবস্ক্রিপশন ২০২১ সালে ৭৯০ মিলিয়ন থেকে ২০২৭ সালে ৭১০ মিলিয়নে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আরও সোজা ভাষায় বললে, বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ৫জি-কে আলিঙ্গন করার ফলে, বার্ষিক গড় ২ শতাংশ হ্রাসের দরুন ৪জি সাবস্ক্রিপশন ২০২১ সালে ৬৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭ সালে ৫৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালের শেষে সারা বিশ্বে দুই বিলিয়নেরও বেশি মানুষকে ৫জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে দেখা যাবে। আশা করা হচ্ছে যে, সারা বিশ্বে এই বছরের শেষের দিকে প্রায় ৬৬০ মিলিয়ন ৫জি সাবস্ক্রিপশন হবে। চীন এবং উত্তর আমেরিকায় ৫জি নেটওয়ার্কের ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি ৫জি ডিভাইসের দাম হ্রাসের জন্যেও এই ঘটনা ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়াও, ২০২১ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বিশ্বজুড়ে ৯৮ মিলিয়ন ৫জি সাবস্ক্রিপশনের দেখা মিলেছে, যেখানে ৪জি সাবস্ক্রিপশনের সংখ্যা মাত্র ৪৮ মিলিয়ন। পাশাপাশি ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের ৭৫ শতাংশ এবং বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ট্র্যাফিকের ৬২ শতাংশ বহন করে বিশ্বব্যাপী সমস্ত মোবাইল সাবস্ক্রিপশনের প্রায় ৫০ শতাংশ ৫জি-র দখলে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইন্টারনেট ছাড়া বর্তমান যুগে এমনিতেই জীবন অচল, তার ওপর আবার সাম্প্রতিককালে করোনা পরিস্থিতিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবাদে ইন্টারনেটের ব্যবহার বিগত বছরগুলির তুলনায় চরম হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ২০২১ সালে স্মার্টফোন পিছু গড় ট্র্যাফিকের পরিসংখ্যান দাঁড়িয়েছে প্রতি মাসে ১৮.৪ জিবি, যা ২০২০ সালে প্রতি মাসে ১৬.১ জিবি ছিল।

আবার, ভারতে মোট মোবাইল ডেটা ট্র্যাফিক ২০২০ সালে প্রতি মাসে ৯.৪ ইবি থেকে বেড়ে ২০২১ সালে প্রতি মাসে ১২ ইবি হয়েছে এবং ৫জি-র আগমনের ফলে এই সংখ্যাটি ২০২৭ সালে প্রতি মাসে ৪৯ ইবিতে পৌঁছোবে বলেও অনুমান করছেন এরিকসন ইন্ডিয়ার প্রধান (Head of Ericsson India) এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ওশিয়ানিয়া ও ভারতের নেটওয়ার্ক সলিউশনের প্রধান (Head of Network Solutions) নীতিন বনসাল। ভারতে বহু মানুষই দীর্ঘদিন ধরে 5G-র আগমনের স্বপ্ন দেখছেন এবং এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সর্বোত্তম টেকনোলজি ব্যবহার করে Ericsson সম্প্রতি Airtel এবং Vi-এর সাথে 5G ট্রায়াল চালিয়েছে বলেও জানা গেছে। যেভাবে জোরকদমে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতে ভারতে খুব শীঘ্রই 5G চালু হবে বলে আশা করা যেতেই পারে।