Royal Enfield অভাবনীয় দামে দুর্ধর্ষ ক্রুজার বাইক লঞ্চ করল, রইল ইঞ্জিন-ফিচারের খুঁটিনাটি

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ভারতে লঞ্চ হল রয়্যাল এনফিল্ডের (Royal Enfield) সবচেয়ে আলোচিত ক্রুজার বাইক সুপার মিটিয়র ৬৫০ (Super Meteor 650)। ভারতবর্ষের মতো বাজারে যানবাহনের দাম বরাবরই খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্মাতাদের অনেক ভাবনা-চিন্তা করে মূল্য ঘোষণা করতে হয়। এক্ষেত্রেও ভারতবাসীর মন জিতে নিয়েছে রয়্যাল।

Royal Enfield Super Meteor দাম ও ডেলিভারি

সুপার মিটিয়র ৬৫০ এর বেস ভার্সন Astral এর এক্স শোরুম প্রাইস রাখা হয়েছে ৩.৪৯ লাখ টাকা। অন্যদিকে মাঝামাঝি থাকা Interstellar ও টপ ভ্যারিয়েন্ট Celestial ভ্যারিয়েন্টের দাম যথাক্রমে ৩.৬৪ লাখ টাকা ও ৩.৭৯ লাখ টাকা (এক্স শোরুম)। উল্লেখ্য,াগত বছরে নভেম্বরে আয়োজিত মিলান মোটরসাইকেল শো-র সৌজন্যে সমগ্র বিশ্বের আঙিনায় প্রথমবারের জন্য দেখা দিয়েছিল সুপার মিটিয়র ৬৫০। রয়্যাল এনফিল্ডের এই ফ্ল্যাগশিপ ক্রুজার বাইকটি সাতটি আলাদা কালার স্কিমে ইউরোপ ও ভারতের মাটিতে পাওয়া যাবে।

বাইকটির দাম যথেষ্ট আকর্ষণীয় করা হলেও তা Interceptor 650 এর তুলনায় খানিকটা বেশি। তবে এই অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে আরো উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং উচ্চ পারফরম্যান্স পাবেন ক্রেতারা। ভারতে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই ডেলিভারি শুরু হবে। আয ইউরোপবাসীদের জন্য লঞ্চের দিন থেকে বুকিং চালু হলেও ডেলিভারি হবে মার্চ মাস থেকে।

Royal Enfield Super Meteor স্পেসিফিকেশন ও ফিচার

রয়্যাল এনফিল্ড সুপার মিটিয়র ৬৫০ ক্রুজারকে চালিকাশক্তি যোগাতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬৪৮ সিসির প্যারালাল টুইন ইঞ্জিন, যা সর্বোচ্চ ৪৬.৭ বিএইচপি শক্তি এবং ৫২.৩ এনএম টর্ক উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত ও ইংল্যান্ডে কয়েক লক্ষ কিলোমিটার চালিয়ে এর টেস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। এই মডেলটি ১৯৫০ সালে বিক্রি হওয়া অরিজিনাল রয়্যাল এনফিল্ড সুপার মিটিয়র ৭০০ নামকেই মান্যতা দিয়েছে। যদিও এর ডিজাইন আগের তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক। এটিই সংস্থার প্রথম আপাদমস্তক ক্রুজার মোটরসাইকেল।

সুপার মিটিয়র ৬৫০ বাইকটিতে প্রথমবারের জন্য Showa থেকে নেওয়া ইউএসডি ফর্ক এবং ডুয়েল শক অ্যাবজর্ভার ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি এই সাসপেনশনকে খানিকটা দৃঢ় করার জন্য একটি অতিরিক্ত সিলিন্ডার হেড মাউন্ট যুক্ত করা হয়েছে এতে। ইন্টারসেপ্টর ৬৫০-র তুলনায় সুপার মিটিয়রের হুইলবেস ১০০ কিমি পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে। ১৯ ইঞ্চির অ্যালয় হুইল থাকলেও পিছনে রয়েছে ১৬ ইঞ্চির অ্যালয় হুইল। বাইকটির সিটের উচ্চতা ৭৪০ মিমি, যা বেশিরভাগ রাইডারদের জন্য সুবিধাজনক।

সুপার মিটিয়র ৬৫০-র অন্যান্য আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে অ্যাডজাস্টেবল ক্লাচ ও ব্রেক লিভার, ডিজিটাল ডিসপ্লে সহ অ্যানালগ ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল, ট্রিপার নেভিগেশন সিস্টেম, ইউএসবি চার্জিং, এলইডি হেডলাইট এবং নতুন ফুয়েল ট্যাঙ্ক ব্যাচ যা বিশেষভাবে এর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। সাথে রয়েছে ১৫.৪ লিটারের ফুয়েল ট্যাঙ্ক।

বাইকটির লঞ্চ প্রসঙ্গে রয়্যাল এনফিল্ডের মূল সংস্থা আইশার মোটরস এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থলাল বলেন, “মধ্যবর্তী ওজনের সেগমেন্টে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আমাদের লাগাতার পরিশ্রমের ফসল নিয়ে বাজারে এসেছে সুপার মিটিয়র ৬৫০, যা আদতে এক বিবর্তনের সমান। এর ডিজাইন আকৃতি উৎপাদনশৈলী এবং সর্বোপরি ৬৫০ সিসির টুইন সিলিন্ডার ইঞ্জিন থেকে ক্রুজার ক্যাটাগরিতে অনেক বেশি যোগ্য করে তুলেছে। আমরা বাইকটির রিফাইনমেন্ট লেভেল অনেকটাই বর্ধিত করতে পেরেছি। যা যাত্রাপথের সর্বসময় থ্রটেল থেকে আপনি অনুভব করতে পারবেন।”

তিনি যোগ করেন, হাইওয়েতে এই বাইকের সাহায্যে পর্যাপ্ত মানসিক দৃঢ়তা এবং স্টেবিলিটি অনুভব করা যাবে। মিড সেগমেন্টের এই মোটরসাইকেলটি যে সকল ব্যক্তি ক্রুজারের ব্যাপারে অনিচ্ছুক তাদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। আমরা বিশ্বাস করি যে সমগ্র বিশ্বের বুকে ক্রুজার এর বাজারকে অনেকটাই বিস্তারিত করবে এই সুপার মিটিয়র।

অন্যদিকে রয়্যাল এনফিল্ডের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক বি গোবিন্দরাজন বলেন, “আমরা শুধুমাত্র একটি ভালো মোটরসাইকেল প্রস্তুত করার ব্যাপারেই আগ্রহী নই বরং চিরাচরিত মোটরসাইকেল এর সেগমেন্টকে নতুন আঙ্গিকে সাজানোর লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। রয়্যাল এনফিল্ড মিটিয়র ৩৫০, যা থান্ডারবার্ডের বদলি হিসাবে আনা হয়েছে তা এই লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছে। বর্তমানে ইউরোপ সহ সমগ্র বিশ্বের বাজারে সহজ ক্রুজিং এর জন্য সবচেয়ে বেশি বিক্রিত হওয়া বাইকের তকমা অর্জন করেছে এটি। সুপার মিটিয়র ৬৫০ ক্রুজিং সেগমেন্টে এক নতুন আশা নিয়ে হাজির হয়েছে এবং নিজের স্বতন্ত্রতায় মিড সেগমেন্টের ক্রুজার হিসেবে একটি আলাদা পরিচয় বহন করবে।”