পাঁচ বছর পর্যন্ত একই রকম ব্যাকআপ দেবে ব্যাটারি, নতুন উপাদান আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে হার্ডওয়্যার-সফ্টওয়্যার পারফরম্যান্স বা অন্যান্য ফিচারের মতই জরুরি সেটির ব্যাটারি ক্যাপাসিটি। কারণ ফোনের ডিজাইন, ফিচার সবই আকর্ষণীয় অথচ দুর্বল ব্যাটারি ব্যাকআপের জন্য সেটিকে দিনে বারবার চার্জ করতে হচ্ছে – এমন হলে বোধহয় ল্যান্ডলাইন ও মোবাইলের মধ্যে পার্থক্য থাকেনা! এই অস্বস্তির সমাধানের জন্য হালফিল সময়ের বহু হ্যান্ডসেটে ৬,০০০ এমএএইচ পর্যন্ত ব্যাটারি প্যাক করা হচ্ছে, কিন্তু তাতেও ইউজাররা খুব বেশি সন্তুষ্ট নন। আসলে বিগত কয়েক বছরে ফোনের ব্যাটারি পারফরম্যান্সে উন্নতি হলেও বেশিরভাগ স্মার্টফোনেরই ব্যাটারি (যেমন ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রিমিয়াম মডেলগুলি) টানা ব্যবহারের পর সেগুলির কর্মক্ষমতা হারায়। এমনকি অধিকাংশ স্মার্টফোনের ব্যাটারির ক্ষমতা, ফোন কেনার প্রথম একবছরের মধ্যেই তাদের ক্ষমতা এক পঞ্চমাংশ অংশে নেমে যায়। সেক্ষেত্রে এবার, মোবাইল ব্যাটারি জনিত সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কীভাবে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করা যায়, তার দিশা পেতে মাঠে নামল একটি জাপানি ইন্সটিটিউট।

রিপোর্ট অনুযায়ী, জাপান অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (JAIST) গবেষকরা, অধ্যাপক নরিওশি মাতসুমির নেতৃত্বে সম্প্রতি এমন একটি বিপ্লবী উপাদান নিয়ে এসেছেন, যা ব্যাটারিকে তাদের মূল ক্ষমতা কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য (৯৫% অবধি) ধরে রাখতে সহায়তা করতে পারে। ফলত, এই প্রযুক্তির সাহায্যে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ জাতীয় ডিভাইস এবং বৈদ্যুতিক যানের অভ্যন্তরে ব্যাটারির আয়ু বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

JAIST-এর গবেষকদের মতে, বর্তমানে ব্যাটারির নেগেটিভ টার্মিনালগুলিতে পলিভিনাইলিডিন ফ্লোরাইড (PVDF) নামক একটি বাইন্ডার উপাদান ব্যবহৃত হয় এবং এই PVDF উপাদানটি প্রভাবে মাত্র ৫০০ বার চার্জের পরে সাধারণ ব্যাটারিগুলি তাদের মূল ক্ষমতার ৩৫% পর্যন্ত হারাতে পারে। একইভাবে, নতুন ক্রয়ের এক বা দুই বছর পরে স্মার্টফোনে ব্যাটারি লাইফ অবনমিত হয়। সেক্ষেত্রে, ইনস্টিটিউটটি যে নতুন বাইন্ডার উপাদানটি নিয়ে এসেছে সেটিকে বিস-ইমিনো-অ্যাসেনফিথেনিকুইনোন-প্যারাফিনিলিন (BP) নামে ডাব করা হয়েছে, এবং এই বাইন্ডারটি ১,৭০০ বারেরও বেশি চার্জ হওয়ার পরেও ৯৫% ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ধরে রাখতে সক্ষম হবে বলে দাবি করা হয়েছে।

সুতরাং, আগামী দিনে স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি তাদের ডিভাইস বা গ্যাজেটে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে এবং পরবর্তী সময়ে নতুন ফোন কিনলে সেটিতে প্রায় পাঁচ বছর অবধি ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যাবে এমনটা আশা করাই যায়। তবে মাতসুমি এও জানিয়েছেন যে, এই নতুন প্রযুক্তি আরো টেকসই পণ্যগুলির বিকাশে সহায়ক হতে পারে। ফলে, বৈদ্যুতিন গাড়ির মতো ব্যয়বহুল ব্যাটারি-ভিত্তিক সম্পদ কেনার ক্ষেত্রেও গ্রাহকদের ব্যাটারি সংক্রান্ত অস্বস্তি কমবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন