অভাবী পড়ুয়াদের বিনামূল্যে স্মার্টফোন ও SIM দেওয়ার উদ্যোগ নিল KP, CRY ও Airtel

সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর বড়োরকমের থাবা বসিয়েছে, যার জেরে গত বছর মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই বছরের গোড়ার দিকে সামান্য…

সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর বড়োরকমের থাবা বসিয়েছে, যার জেরে গত বছর মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই বছরের গোড়ার দিকে সামান্য কয়েক দিনের জন্য কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দরুন তা আবার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সরকার। ফলে গত এক বছর ধরে অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা, এবং ভবিষ্যতে আরও কতদিন চলবে সে সম্পর্কেও নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় এই ভার্চুয়াল পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে অনেক গরীব পড়ুয়া। তাই এই করোনা পরিস্থিতিতে তারা যাতে কোনোভাবেই পিছিয়ে না পড়ে, সেজন্য তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police বা KP) ও ভারতী এয়ারটেল (Bharti Airtel), এবং এর জন্য তারা চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইউ-র (Child Rights and You বা CRY) সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।

ডিজিটাল পড়াশোনায় গরিব পরিবারের শিশুরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে বাকিদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে, তা নিশ্চিত করবে #PoraSynaDarabeNa (#SikshaNahiRukegi)। এই উদ্যোগে অভাবী পড়ুয়াদের স্মার্টফোন ও এক বছরের ডেটা প্যাক দেওয়া হবে। ফলে খুব সহজেই তারা অনলাইনে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে। কারণ বর্তমান ডিজিটাল অগ্রগতির যুগে টিকে থাকার জন্য কেবলমাত্র পুঁথিগত বিদ্যাই যথেষ্ট নয়, অন্যান্য ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনের জন্য অনলাইন শিক্ষাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, যারা অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারছে না তাদের জন্য এটা একটা ছোট্ট পদক্ষেপ। পড়াশোনা থেকে দূরে থাকায় অনেকেই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সেটাও রোখা যাবে।

উদ্যোক্তারা কলকাতা পুলিশের ৭৩ টি থানায় ৫০০ জন পড়ুয়াকে এই উদ্যোগে শামিল করার কথা চিন্তাভাবনা করেছেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সহযোগিতা করা হবে। অভাবী পড়ুয়াদের যৌথভাবে চিহ্নিত করবে কলকাতা পুলিশ ও CRY, এবং উপযুক্ত নথি যাচাইকরণের (ভেরিফিকেশন) পর তাদের হাতে মোবাইল ফোন ও SIM তুলে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, অনলাইন ক্লাস যাতে সঠিকভাবে চলে তা নিশ্চিত করতেও কলকাতা পুলিশকে সহযোগিতা করবে CRY।

এই উদ্যোগটির সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার Bharti Airtel-এর সিইও সিদ্ধার্থ শর্মা জানান, এই ধরনের উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত থাকতে তাদের সংস্থাটি অত্যন্ত গর্বিত। আবার, CRY-এর আঞ্চলিক ডিরেক্টর ত্রিনা চক্রবর্তীর কথায়, “পরপর দুটি করোনা সুনামির জেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পড়়ুয়াদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার সঙ্গে পড়ুয়াদের যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে অন্ধকার জগতের হাতছানি তাদের সামনে প্রবলভাবে দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এই উদ্যোগের মারফত অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পড়ুয়ারাও বিশেষভাবে উপকৃত হবে।”

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন