ছ’টি এয়ারব্যাগ দিতে হলে গাড়ির দামও বাড়বে হুহু করে, এখনই অশনি সংকেত শোনাল Maruti Suzuki

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে সামরিক ঘাত-প্রত্যাঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ‘মূল্যবৃদ্ধি’ আমজনতার একটি নিত্যদিনের অনভিপ্রেত দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেট্রল-ডিজেলের ঝাঁঝালো দামের চোখ রাঙানিতে জেরবার সকলে। খাদ্যপণ্য থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য চোকাতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান মূল্যের নিত্য ঘোষণায় প্রমাদ গোনা ছাড়া আপাতত আর কোনো উপায় নেই। এহেন অবস্থায় যদি গাড়ির শিল্পও মূল্যবৃদ্ধির খবর শোনায়, তবে ক্রেতাদের চোখের জলই হয়ে উঠবে একমাত্র সম্বল। এবার বৃহত্তম যাত্রীবাহী গাড়ি প্রস্তুতকারী মারুতি সুজুকি (Maruti Suzuki)-র কথাতেও মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত মিলল। সম্প্রতি সংস্থার চেয়ারম্যান আর সি ভার্গঘ (R C Bhargava রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।

হঠাৎ কেনই বা এমন অশনিসংকেত শোনালেন মারুতি সুজুকির চেয়ারম্যান আর সি ভার্গঘ? আসলে গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে দেশের সমস্ত ৮-আসন বিশিষ্ট যাত্রীবাহী গাড়িতে ৬টি এয়ারব্যাগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব জারি করা হয়েছিল। যা ১ অক্টোবর ২০২২ থেকে কার্যকর হতে চলেছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্র।

গাড়িতে এয়ার ব্যাগের সংখ্যা বাড়ালে যাত্রীদের নিরাপত্তা যে বাড়বে সে বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু এর ফলে তালে তাল মিলিয়ে চড়বে সমস্ত গাড়ির মূল্যও। স্বভাবতই গাড়ির বিক্রিতে পতন ঘটবে। সেই আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন ভার্গঘ। এমনিতেই কাঁচামালের ব্যয় বৃদ্ধির কারণে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত দু’বার ক্রেতাদের কাঁধে বর্ধিত মূল্যের ভার চাপিয়েছে সংস্থাটি। ফের যদি দাম বাড়াতে হয় তবে গাড়ির বিক্রিতে প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন ভার্গঘ।

ভার্গঘের কথায়, “এমনিতেই মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে ছোট গাড়ির বিক্রিতে পতন ঘটেছে। ছ’টি এয়ারব্যাগ যুক্ত হলে গাড়ির দাম বৃদ্ধি পাবে। এই মূল্যবৃদ্ধির চাপ সামলানো মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের পক্ষে অসম্ভব, ফলে ফের কমবে গাড়ির বেচাকেনা।” এদিকে ২০১৯-এ ভারতে গাড়ির চালকের এবং ২০২১-এ চালকের পাশের যাত্রীর জন্য এয়ারব্যাগ আবশ্যিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গাড়ি সংস্থার তথ্য প্রদানকারী সংস্থা জাটো ডায়নামিকস (JATO Dynamics) সূত্রে খবর, যদি আরও চারটি এয়ারব্যাগ যোগ করতে হয় সে ক্ষেত্রে ১৭,৬০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। এরপরও দাম বাড়তে পারে কারণ, অতিরিক্ত এয়ার ব্যাগ যোগ করতে হলে গাড়ির কারিগরিতেও অদলবদল করতে হবে।

এদিকে, ভারতে পথ দুর্ঘটনায় প্রতি বছর অসংখ্য যাত্রী প্রাণ হারান। সরকারি সূত্রে ২০২০-তে ৩,৫৫,০০০টি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১,৩৩,০০০-র অধিক মানুষের। যার মধ্যে ১৩% হচ্ছে গাড়ির যাত্রী। সেই কারণে যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়াতে কেন্দ্রীয় সরকার গাড়ি নির্মাতাদের এয়ারব্যাগের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে।