Mobikwik এর নতুন ঘোষণা, নেওয়া হবে ১৪০ টাকা পর্যন্ত ‘রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ’

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় ক্রমশ বেড়েই চলেছে ইউপিআই অ্যাপ্লিকেশন বা ই-ওয়ালেটের ব্যবহার। ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও বারবার অনলাইন পেমেন্টের দিকে নাগরিকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে; বাড়ানো হচ্ছে এই জাতীয় প্ল্যাটফর্মগুলির সুযোগ-সুবিধাও। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কার্যত বিপরীত পথে হেঁটে বড়সড় পদক্ষেপ নিল জনপ্রিয় ই-ওয়ালেট পরিষেবা Mobikwik। রিপোর্ট অনুযায়ী, সংস্থাটি সম্প্রতি তার নিষ্ক্রিয় ইউজারদের কাছ থেকে ‘ওয়ালেট রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ’ হিসেবে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা অবধি চার্জ নেবে বলে ঘোষণা করেছে।

ভারতীয় বাজারে উপলব্ধ ই-ওয়ালেট পরিষেবার ক্ষেত্রে এই ধরণের পদক্ষেপ একেবারেই নতুন! সেক্ষেত্রে মোবিকুইক (Mobikwik), গত রবিবার সন্ধ্যায় এই নতুন নীতিটি ঘোষণা করেছে এবং প্রায় সাথে সাথেই সেটি কার্যকর করেছে৷ বলা হয়েছে, কোনো ইনঅ্যাক্টিভ ইউজার, সংস্থা প্রদত্ত সাত দিনের নোটিশ পিরিয়ডের পরেও ওয়ালেটটি পুনরায় সক্রিয় না করলে তাদের নির্দিষ্ট চার্জ দিতে হবে। তবে জানিয়ে রাখি, মোবিকুইকের আধিকারিকরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, কোনো নিষ্ক্রিয় ইউজার যদি উক্ত মেইনটেনেন্স ফি মেটানোর পর তার ওয়ালেটটি পুনরায় অ্যাক্টিভেট করেন এবং একটি ট্রানজাকশন করেন – তাহলে সেই ইউজারকে ফি বাবদ নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

যদিও এরপরও জনপ্রিয় ই-ওয়ালেট প্ল্যাটফর্মটির এহেন পদক্ষেপের চরম সমালোচনা শুরু করেছেন নেটিজেনরা। সেক্ষেত্রে, যাবতীয় সমালোচনায় আমল না দিয়ে মোবিকুইক পেমেন্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও চন্দন জোশী বলেছেন যে, নির্দিষ্ট নোটিফিকেশন পাওয়ার পরেও কোনো ইউজার যদি অ্যাপটিতে আর কখনও ফিরে না আসেন বা লগ ইন না করেন তবেই তার থেকে উক্ত চার্জ নেওয়া হবে। তবে এই চার্জ মেটানোর ৪০ দিনের মধ্যে ইউজার ফের ওয়ালেটটির ব্যবহার শুরু করলে চার্জ অ্যামাউন্ট ফেরত দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই যে সমস্ত ইউজার বিগত ৪-৫ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন, তারা নোটিশ পেতে শুরু করেছেন বলেও জানিয়েছেন জোশী।

ওয়ালেটগুলি সক্রিয় রাখতে মোবিকুইকের তরফে চার্জ ধার্য করা হয়েছিল ন্যূনতম ১০০ টাকা, তবে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রশ্নের জবাবে সংস্থার তরফে জোশী বলেছেন যে, ইউজারের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে চার্জের অঙ্ক নির্ধারণ করা হবে। সেক্ষেত্রে তিনি আরও বলেছেন যে, সংস্থার উদ্দেশ্য ব্যবহারকারীদের থেকে চার্জ নেওয়া নয় বরঞ্চ তারা নিষ্ক্রিয় ব্যবহারকারীদের সহজে চিহ্নিত করতে চান।

এই মুহূর্তে মোবিকুইকের প্রায় ১০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে; যার মধ্যে ৭০-৮০ মিলিয়ন সক্রিয় বলে দাবি করেছে সংস্থাটি। সেক্ষেত্রে, যেহেতু PhonePay বা Paytm-এর মতো অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী ই-ওয়ালেট সংস্থাগুলি এরকম কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তাই Mobikwik-এর এই সিদ্ধান্ত তাদের নিজেদেরই কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা RBI-এর নিয়ম অনুযায়ী, ই-ওয়ালেট সংস্থাগুলি, তাদের নিষ্ক্রিয় ওয়ালেটগুলির জন্য ব্যবহারকারীদের থেকে কোনো চার্জ আদায় করবে কিনা – সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে কোনো ইউজার চাইলে রেগুলেটরের কাছে অভিযোগ করতে পারে যে তিনি এই সমস্ত ওয়ালেট ব্যবহার শুরু করার সময়ে এমন কোনো ঘোষিত নীতি ছিল না।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন