Ola S1 Pro নিয়ে ফের বিপত্তি, মাথা ফাটল বৃদ্ধের, হাতে বসাতে হল প্লেট

স্কুটার স্রেফ পার্ক করতে গিয়ে মাথা ফাটা বা বড় কোনও দুর্ঘটনার খবর কী আজ পর্যন্ত শুনেছেন? শোনার কথাও নয়। কিন্তু ওলার বদান্যতায় সেটাও ঘটল। এই নিয়ে Ola S1 Pro ইলেকট্রিক স্কুটারের সফটওয়্যারে ত্রুটির তৃতীয় ঘটনা সামনে এল। বাইরে থেকে এনে বাড়ির ভিতরে পার্ক করতে গিয়ে গুরুতর জখম হলেন একজন।

ওলার রিভার্স মোড নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছে অনেক। এবার ফুল স্পিডে রিভার্স হওয়ার ফলে আহত হলেন ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ। পল্লব মহেশ্বরী নামে যোধপুরের এক ব্যক্তি তাঁর বাবার সাথে ঘটা সেই দুর্ঘটনার কথা লিঙ্কডইনে পোস্ট করেন৷ এরপর  নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে সেটি।

পল্লব লিখেছেন,  ৬৫টি বসন্ত পার করলেও তাঁর বাবার এখনও চনমনে শরীর। ওলার স্কুটার চালিয়ে পরখ করে দেখতে অত্যন্ত উৎসুক ছিলেন তিনি৷ সেদিন পল্লবের ওলা এস১ প্রো ই-স্কুটারটি বাড়ির বাইরে থেকে ভেতরে আনছিলেন। অ্যাক্সেলারেটর সামান্য ঘোরানো মাত্রই সেটি তুমুল গতিতে পেছন দিকে ছুটতে শুরু করে। একটি পাঁচিলে গিয়ে ধাক্কা মেরে পড়ে যায় স্কুটারটি। মাথা ফেটে প্রায় ঘিলু বেরিয়ে আসে। দশটা সেলাই পড়েছে। আবার বাঁহাত ভেঙে যাওয়ায় দুটো প্লেট বসাতে হয়েছে।

এই দুর্ঘটনার জন্য স্কুটারের ত্রুটিপূর্ণ সফটওয়্যারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন পল্লব। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ওলার স্কুটারটি হাতে পান পল্লব। এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে তিনি জানান, ডেলিভারি পাওয়ার পরের দিন থেকেই সমস্যা দেখা দেয় স্কুটারে। বয়স মাত্র ক’দিন হওয়ার কারণে তিনি বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেননি। তবে সম্প্রতি স্কুটারের ভেহিকেল কন্ট্রোল ইউনিট বা VCU কোম্পানির থেকে মেরামত করিয়েছিলেন। এই সময় সফটওয়্যারের ত্রুটি ঠিক করা উচিত ছিল বলে মত পল্লবের। তা না করে ব্যাটারির চার্জ যাতে তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে না যায়, সেটা নিশ্চিত করে চুপিসারে ভিসিইউ ঠিক করে ছেড়ে দেয় ওলা।

তবে ওলার স্কুটার কিনে পল্লব যে ভীষণ রকম পস্তাচ্ছেন, তাঁর কথায় ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, “আমি একটি বৈদ্যুতিক স্কুটার খুঁজছিলাম। এবং যেহেতু সকলেই এই ক্ষেত্রে নতুন, সে দিক থেকে ওলাকে সেরা বলে মনে হয়েছিল। কারণ তারা নেদারল্যান্ডসের একটি সংস্থাকে অধিগ্রহণ করে। যা আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। ” প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ওলা নেদারল্যান্ডসের Etergo BV নামক একটি সংস্থাকে কিনেছিল। Ola S1 সেই সংস্থার ব্যাটারিচালিত স্কুটারের উপর ভিত্তি করেই তৈরি৷

দুর্ঘটনার দায় নিতে কি প্রস্তুত ওলা?

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দুর্ঘটনার কথা ভাইরাল হওয়ার পর মহেশ্বরীর সাথে ওলার এক আধিকারিক যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোনোরকম সাহায্যের আশ্বাস ওলার থেকে পাননি বলেই জানিয়েছেন পল্লব। “সেই আধিকারিক চেয়েছিলেন, তাঁকে হাসপাতালের পরিস্থিতি এবং আমার বাবার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে যেন জানানো হয়। যদিও তাঁর থেকে কোনও আশ্বাস পাইনি”, বলেন পল্লব।

এরকম দুর্ঘটনা এই প্রথমবার নয়

ওলার স্কুটারে সফটওয়্যার বিভ্রাট আগেও ঘটতে দেখা গেছে। গত ১৫ এপ্রিল গুয়াহাটি নিবাসী বলবন্ত সিংয়ের ছেলে স্কুটার চালানোর সময় ব্রেক কষেন। কিন্তু সেটি থামার বদলে উল্টে আরও দ্রুতগতিতে ছুটতে আরম্ভ করে। এবং ঘটে ভয়ংকর দুর্ঘটনা৷ যদিও ওলা এই দুর্ঘটনার দায় স্বীকার না করে ব্যবহারকারীর উপরে দোষ চাপায়৷ এমনকি টেলিমেট্রি ডেটা টুইটারে প্রকাশ করে। পরে যা তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার মৌলিক অধিকার নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।