এপ্রিলের শুরুতেই ফিরতে পারে ওটিপি বিভ্রাট! মেসেজ টেমপ্লেট নিয়ে নতুন মত TRAI-এর

চলতি মার্চের শুরুতেই সময়মত প্রয়োজনীয় এসএমএস বা OTP (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) মেসেজ না পাওয়ায়, প্রায় প্রতিটি ভারতীয় টেলিকম সংস্থার গ্রাহকরাই বেশ ভোগান্তির মুখে পড়েন। কারণ গত ৮ই মার্চ, টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া অর্থাৎ TRAI দেশের সমস্ত টেলিকম অপারেটরকে একটি নতুন মেসেজ বা এসএমএস টেম্পলেট বিধি চালু করার নির্দেশ দেয়; কিন্তু সংস্থাগুলি এই নিয়ম বাস্তবায়িত করা মাত্রই এগুলির নেটওয়ার্কে কয়েকশো মিলিয়ন মেসেজ ব্লক হয়ে যায়, যার মধ্যে OTP জাতীয় প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ এসএমএসও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে গ্রাহকদের এই অস্বস্তি কমাতে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি তড়িঘড়ি মাঠে নামে এবং ১৭ই মার্চ থেকে সমস্ত টেলিকম কোম্পানিকে নিজেদের নেটওয়ার্কে শুধুমাত্র এসএমএস ফিল্টার করার আদেশ দেয়। ওই সময় বলা হয় যে টেলকোগুলি, কোনো মেসেজ নির্দিষ্ট টেমপ্লেট বিধি না মানলেও সেই মেসেজ ব্লক না করে ডেলিভার করবে, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র মেসেজটির ঘাটতি রেকর্ড করে রাখা হবে; ফলত, গ্রাহকদের মেসেজ সংক্রান্ত কোনো অসুবিধার মুখে পড়তে হবে না। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, আগামী ১লা এপ্রিল থেকে এই ওটিপি (OTP) বা মেসেজ সংক্রান্ত সমস্যা ফের শুরু হতে চলেছে কারণ, ফের একবার মতবদল করেছে TRAI।

ইকোনমিক টাইমস (ET) টেলিকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, TRAI, গতকাল অর্থাৎ ২৫শে মার্চ একটি চিঠিতে সমস্ত টেলিকম অপারেটর এবং টেলিমার্কেটিং ফার্মগুলিকে জানিয়েছে যে, ১লা এপ্রিল থেকে তাদের সমস্ত এসএমএস ফিল্টার চেকিং তো করতে হবেই, পাশাপাশি কোনো মেসেজ নিয়ন্ত্রক নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ না করলে সেগুলিকে পুনরায় ব্লক করতে হবে। সংস্থার মতে, আগে রেগুলেটরী বিধিতে প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলিকে যথেষ্ঠ সুযোগ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু এতে গ্রাহকরা সেই বিধি-নিয়মের পর্যাপ্ত সুবিধা পাননি – তাই আগামী মাস থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকরী হবে। এই নতুন নিয়মে মেসেজ স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে ভুয়ো-পেস্কি মেসেজ ছড়িয়ে পড়া আটকানো যাবে বলেই অভিমত টেলিকম নিয়ন্ত্রকের।

এদিকে TRAI-এর এই নতুন সিদ্ধান্ত জানার পর একাংশ টেলিমার্কেটাররা মনে করছেন যে, এসএমএস ট্র্যাফিক ঠিকঠাক রাখার জন্য এই নিয়ম আনা হলেও এটি কার্যকরী হওয়ার পর মেসেজ পরিষেবায় ফের বড়সড় বিপর্যয় দেখা যাবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে ফিনান্সিয়াল এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির মেসেজ পরিষেবার ওপর। অর্থাৎ আগামী মাসেও ফের গত ৮ই মার্চের পরিস্থিতি উদ্ভূত হতে চলেছে বলে তাঁরা দাবি করছেন।

যেমন শিবটেল কমিউনিকেশনের প্রতিষ্ঠাতা নিতীশ গোপালানী বলেছেন যে, মার্চের ৮ তারিখ তারা মেসেজ পরিষেবার ৮০% ব্যাহত হয়েছে যা, সংস্থার পাশাপাশি এটির ক্লায়েন্টদের ওপরেও প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া ভারতে রোজ ১ বিলিয়নের কাছাকাছি মেসেজ আদান প্রদান হয়; তাই এত সহজে এবং একবারেই এই এসএমএস টেম্পলেটিং সিস্টেম বাস্তবায়িত হবে না বলেই মনে করছেন গোপালানী। আবার কালেয়রা (Kaleyra)-র চিফ রেভেনিউ অফিসার অনিকেথ জৈন-ও এই একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এক্ষেত্রে শিবটেল, TRAI-এর এই নতুন নিয়মের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লী হাইকোর্টে আবেদন করেছে বলেও রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে। তবে এত কিছুর পরেও আগামী ‘মেসেজ বিভ্রাট’ কতটা এড়ানো যাবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না!

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন