যৌন অপরাধ বাড়ার জন্য দায়ী মোবাইল ফোন! ট্রোলের শিকার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

মোবাইল ফোন আমাদের এখনকার দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। অন্যান্য সমস্ত জিনিসের মতোই এরও কিছু ভালো এবং কিছু খারাপ দিক তো অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু এবার মোবাইল ফোনের অপব্যবহারকে কেন্দ্র করে অযৌক্তিক মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার এক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের কারণে দেশে যৌন অপরাধ বাড়ছে। ইমরান খান আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন। প্রসঙ্গত, লাহোরের গ্রেটার ইকবাল পার্কে এক মহিলা টিকটকার এবং তার সহযোগীদের ওপর একদল জনতা কর্তৃক হয়রানি ও আক্রমণের কয়েক দিন পরে ইমরান খানের তরফ থেকে এই বিবৃতি পাওয়া গেছে।

The Express Tribune-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইমরান খান আরও বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি তরুণদের উন্নত গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করা ছাড়াও চরিত্র গঠনের জন্য সিরাত-ই-নবী (PBUH)-র সেরা গুণাবলী সম্পর্কে তাদের মার্গদর্শন ও শিক্ষিত করা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, এর আগে ইমরান খান একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, মহিলাদের ছোটো পোশাক পুরুষদের প্রলুব্ধ করে। তাঁর এই মন্তব্যও তাঁকে প্রবল সমালোচনার সম্মুখীন করেছিল।

মিনার-ই-পাকিস্তানে ঘটনাটি কী ঘটেছিল?

The Express Tribune-এর রিপোর্ট অনুসারে, আক্রান্ত পাকিস্তানি টিকটকার থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলেছেন যে, গত ১৪ আগস্ট তিনি লাহোরের মিনার-ই-পাকিস্তানের কাছে তার বন্ধুদের সাথে একটি ভিডিও তৈরি করছিলেন, তখন প্রায় ৪০০ লোকের একদল জনতা তাদের আক্রমণ করে। যদিও সেদিন ছিল দেশের স্বাধীনতা দিবস, কিন্তু তা সত্বেও সেদিন ওই টিকটকার এই ধরনের বিশ্রী ঘটনার সম্মুখীন হন। তিনি অভিযোগ করেন যে, জনতা তাকে শূন্যে তুলে নিয়ে লোফালুফি খেলতে থাকে এবং তারপরে তাদের কাপড়ও ছিঁড়ে দেওয়া হয়।

মিনার-ই-পাকিস্তান ট্র্যাজেডি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়েই পুরুষদের নারীবিদ্বেষীতাকে প্রত্যক্ষ করে ইমরান খান সম্প্রতি এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত ঘৃণ্য ও বিরক্তিকর এবং এই ধরনের ঘটনা আমাদের সংস্কৃতি ও ধর্মের পক্ষে যথেষ্ট নিন্দাজনক। অতীতে আমাদের দেশে মহিলারা যে উচ্চ মর্যাদার সম্মান পেতেন, তা বিশ্বে আর কোথাও দেখা যেত না। এমনকি পাশ্চাত্যের মহিলারাও আমাদের এখানকার মহিলাদের মতো স্তরের মর্যাদা পেতেন না। বর্তমানে আমাদের সন্তানরা সঠিকভাবে ও সঠিক পথে পরিচালিত হচ্ছে না বলে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, পাশাপাশি মোবাইল ফোনের অপব্যবহারও মূলত এর জন্য দায়ী।” শিক্ষাক্ষেত্র এবং পাঠক্রমের ওপর যথাযথ নজর এবং অগ্রাধিকার না দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পূর্ববর্তী সরকারকে দোষারোপও করেন।

তবে সাম্প্রতিক নিন্দাজনক ঘটনাটির পিছনে কারণ যাই থাকুক না কেন, খানের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। যৌন সহিংসতার জন্য প্রকৃত অপরাধীদের দায়ী না করে অহেতুক বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য টুইটার ব্যবহারকারীরা তাঁকে চরম তিরস্কার করেছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যঙ্গ করে একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আমার পরিবারের প্রত্যেকের কাছে মোবাইল ফোন রয়েছে। এখন আমাকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে ফোনগুলি তাদের কাউকে যৌন নিপীড়ন না করে।”

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন