ফোনের Bluetooth সবসময় অন থাকে? সাবধান! সেকেন্ডের মধ্যেই পড়বেন হ্যাকিংয়ের কবলে

কী-প্যাড মোবাইল (যার পোশাকি নাম ফিচার ফোন) হোক কিংবা স্মার্টফোন, যেকোনো হ্যান্ডসেটেই আবশ্যিক ফিচার হল Bluetooth। যখন স্মার্টফোন, ইন্টারনেট বা বিভিন্ন ফাইল ট্রান্সফার অ্যাপ-প্রযুক্তি তেমনভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি, ঠিক সেই সময় থেকে Bluetooth, ডিভাইস কানেক্টিভিটির জন্য একটি বিশ্বস্ত ভরসা হয়ে রয়েছে। আর শুধু আমাদের সবার ফোনেই নয়, বছরের পর বছর ধরে ট্যাবলেট বা ল্যাপটপের ক্ষেত্রেও এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ফাইল ট্রান্সফারের সুবিধা দিচ্ছে এই ওয়্যারলেস প্রযুক্তিটি। কিন্তু যেমন প্রতিটা জিনিসের ভালো-খারাপ দুটি দিক আছে, ঠিক তেমনই কোনো ডিভাইসে উপস্থিত Bluetooth সুবিধাজনক হলেও ততটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। ভাবছেন কীভাবে? আসলে হ্যাকাররা Bluetooth-এর মাধ্যমে আপনার ডিভাইস সহজেই হ্যাক করতে পারে, যাতে চুরি যেতে পারে আপনার গোপনীয় ডেটা; এই ঘটনাটিকে প্রযুক্তির ভাষায় Bluebugging-ও বলা হয়। সেক্ষেত্রে আজ আমরা Bluetooth হ্যাকিং কীভাবে হয় এবং কীভাবে আপনারা এর থেকে নিরাপদ বা সতর্ক থাকতে পারেন সে বিষয়ে কথা বলব।

কীভাবে কাজ করে Bluetooth হ্যাকিং?

ব্লুটুথ হ্যাকিং বা ব্লুবাগিংয়ের জন্য হ্যাকাররা একটি নির্দিষ্ট সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানে নিজে নিজেই ব্লুটুথযুক্ত ডিভাইসগুলিকে শনাক্ত করে। এক্ষেত্রে ভিক্টিমের ডিভাইসটি আগে কোন নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত ছিল বা ভবিষ্যতে কোন নেটওয়ার্কের সাথে অটোমেটিক্যালি সংযুক্ত হবে হ্যাকাররা তাও দেখতে পায়। এর মধ্যে, এই সাইবার অপরাধীরা যদি ডিভাইসে সেভ থাকা একটি বিশ্বস্ত নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পারে, তাহলে তারা কায়দা করে সেই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনার ডিভাইসের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। এতে ডিভাইসটি সহজেই হ্যাক হয়ে যায়, আর পরবর্তী সময়ে হ্যাকাররা তাতে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে ইউজারের উপর নজরদারি চালায়। এই গুপ্তচরবৃত্তির দরুন টেক্সট মেসেজ, ডেটা – কোনো কিছুই সুরক্ষিত থাকেনা, সমস্তই হ্যাকারদের মুঠোয় পৌঁছে যায়।

কীভাবে Bluetooth হ্যাকিংয়ের হাত থেকে নিরাপদ থাকবেন?

এত গেল ব্লুটুথ হ্যাকিংয়ের হাল-হকিকতের কথা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে এই কেলেঙ্কারির হাত থেকে বাঁচবেন বা এর থেকে নিজের ডিভাইসকে নিরাপদ রাখবেন? সেক্ষেত্রে আপনাদের সতর্কতার জন্য বলি –

১. ব্যবহার না করা হলে আপনার ডিভাইসের ব্লুটুথ অপশন ডিস্যাবেল বা অফ রাখুন, সবসময় এটি অন করে রাখবেননা। এছাড়া ফাইল ট্রান্সফারের জন্য এয়ারড্রপ (AirDrop) বা নিয়ারবাই শেয়ার (Nearby Share)-এর মত অপশন কাজে লাগাতে পারেন।

২. ব্লুটুথ পরিষেবার অ্যাক্সেসেবিলিটি বা সেটিং সীমিত করুন। এতে করে ব্লুবাগিং এড়ানো যাবে।

৩. আপনার স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং ব্লুটুথ এনাবেল্ড কম্পিউটারে কোনো অ্যান্টিম্যালওয়্যার অ্যাপ ইতিমধ্যেই ইনস্টল করা আছে কিনা, তা নিশ্চিত করুন। কারণ হ্যাকার জাতীয় দুরভিসন্ধিরা আপনার ডিভাইসে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে, অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার অ্যাপ আপনার গোপনীয়তা এবং ব্যক্তিগত ডেটা তো রক্ষা করবেই, একইসময়ে এটি সন্দেহজনক কার্যকলাপ শনাক্ত করতে এবং তা ব্লক করতেও সক্ষম হবে।