এখানে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হচ্ছে রেকর্ড পরিমানে, পেছনে ফেলল ডিজেল গাড়িকেও

যত দিন যাচ্ছে ততই অটোমোবাইল সংস্থাগুলির পাশাপাশি মানুষও বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দুই এবং চার চাকার গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নিজেদের কোম্পানিকে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক কার প্রস্তুতকারী সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। পাশাপাশি ইন্টার্নাল কম্বাশন ইঞ্জিনের গাড়ি প্রস্তুত বন্ধের কথাও ঘোষণা করেছে এদের অনেকেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ির তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি অধিক আকৃষ্ট হচ্ছেন দেশ-বিদেশের ক্রেতারা। ইতিমধ্যেই এমন এক রিপোর্ট সামনে এনেছে JATO Dynamics, যেখানে বলা হয়েছে ইউরোপে এবছর এখনো পর্যন্ত ১.৩২ মিলিয়ন ইলেকট্রিক গাড়ি এবং প্লাগ-ইনস বিক্রি হয়েছে। এমনকি সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে ইউরোপে বিক্রি হওয়া গাড়িগুলির মধ্যে ২১% হল বৈদ্যুতিক গাড়ি। তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল এ বছরের শুধু আগস্টে জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ির তুলনায় ১০,১০০ টি অধিক বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে ইউরোপ মহাদেশে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি মানুষের উৎসাহ কতটা বাড়ছে।

উক্ত রিপোর্টে এবছর ১৫১,৭৩৭ টি বৈদ্যুতিক গাড়ি নথিভুক্তকরণ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় শতকরা ৬১% বেশি। এর ফলে ইলেকট্রিক ভেহিকেল সেগমেন্টের গাড়িগুলি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (২১%) মাসিক বাজার শেয়ারের মাইলস্টোন ছুঁতে পেরেছে। পাশাপাশি ইউরোপের ২৬টি বাজারে জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭১৩,৭১৪, গত বছরের তুলনায় যা ১৮% কম।

JATO-র এই রিপোর্টে বৈদ্যুতিক গাড়ির কয়েকটি মডেল যেমন ফিয়াট ৫০০ (Fiat 500), পাজোট ২০৮ (Peugeot 208), হুন্ডাই কোনা (Hyundai Kona), ওপেল কোর্সা (Opel Korsa) এবং কিয়া নিরো (Kia Niro) মডেলগুলির চাহিদা অধিক বলে উল্লেখ রয়েছে। আবার ভক্সওয়াগেন আইডি.৩ (Volkswagen ID.3) সর্বাধিক বিক্রিত মডেল হিসেবে উঠে এসেছে।

সর্বাধিক বিক্রিত গাড়ির তালিকায় মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা ভক্সওয়াগেনের আইডি.৩, বিক্রি হয়েছে ৭,৯০৪ টি, টেসলা মডেল ৩ বিক্রি হয়েছে ৭,৮২৪ টি এবং এর পরের স্থানে রয়েছে ভক্সওয়াগেন আইডি.৪, যা বিক্রি হয়েছে ৪,৬২৪ টি। পঞ্চম স্থানে রয়েছে ফোর্ড মাস্ট্যাঙ্গ মাচ-ই, যার বিক্রির সংখ্যা ৩,৬২১টি। যেখানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে রেনল্ট জো।

জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ির বিক্রির সংখ্যা পতনের বিষয়ে বিশ্ব তথ্য বিশ্লেষক সংস্থা JATO Dynamics এর প্রধান ফিলিপ মুনোজ (Felipe Munoz) মন্তব্য করেছেন, “বিশ্বব্যাপী মহামারীর কারণে চিপের কম উৎপাদনের জন্য যন্ত্রাংশ উৎপাদন মার খেয়েছে। উৎপাদনে ঘাটতি এবং নতুন গাড়ির বিতরণে বিলম্ব হওয়ার কারণে অনেক ক্রেতাই পুরনো গাড়ি কিনতে অথবা দেরি করে গাড়ি কিনতে বাধ্য হয়েছেন। সাধারণ পরিস্থিতিতে, ক্রেতারা ফেরারির একটি নতুন গাড়ির জন্য অনেক মাস অপেক্ষা করতে পারেন, কিন্তু বর্তমানে নিয়মিত মডেলগুলির জন্যেও তাদের বিলম্বের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।”

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন