মাথায় হাত জুকারবার্গের, ৬ ঘন্টা WhatsApp বন্ধ থাকায় ৭ কোটি মানুষ ডাউনলোড করল Telegram

কথায় আছে, কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। এবং সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি এই প্রবচনের চরম দৃষ্টান্ত হয়ে দেখা দিল। গত ৪ অক্টোবর সোমবার রাতে প্রায় ছয় ঘণ্টারও বেশি সময়ের জন্য অকেজো হয়ে পড়েছিল WhatsApp, যা বিশ্বজুড়ে ৩.৫ বিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারীকে প্রভাবিত করে। পাশাপাশি Facebook ও Instagram-ও একই অবস্থার মুখোমুখি হয়। এর আগে কখনো সংস্থাগুলি এত বড়ো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়নি। এই সমস্যার কারণ হিসেবে Facebook রাউটারগুলির কনফিগারেশন পরিবর্তনকে দায়ী করেছে, এবং এর দরুন মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৬০০ কোটি ডলার হারিয়েছেন মালিক মার্ক জুকারবার্গ। এর ফলে বিশ্ববরেণ্য ধনীদের তালিকায় মার্কের অবস্থান একধাপ নেমে গেছে। তবে মালিকের পাশাপাশি WhatsApp-এর খারাপ দিনে বাজিমাত করলো অন্য দুই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম Telegram এবং Signal।

হোয়াটসঅ্যাপ অকেজো হয়ে পড়ায় সেদিন প্রায় ৭০ মিলিয়ন ইউজার টেলিগ্রামে যোগ দেন। ফলে এখন বিশ্বজুড়ে ৫০০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারীর মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলল মেসেজিং অ্যাপটি। এই ঘটনায় যারপরনাই খুশি সংস্থার সিইও পাভেল দুরোভ (Pavel Durov)। বিশেষ করে মার্কিন মুলুকের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম (হোয়াটসঅ্যাপ) বিকল হয়ে পড়ায় অধিকাংশ মার্কিন ব্যবহারকারী যে সেদিন টেলিগ্রাম ডাউনলোড করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন, এই ব্যাপারটি যেন তাঁকে আরেকটু বেশিই খুশি করেছে!

Telegram ছাড়াও অপর আরেকটি অ্যাপ, সিগন্যাল (Signal)-ও সেদিন বিশাল সাফল্যের মুখ দেখেছে। অধিক সংখ্যক ইউজার সেদিন হোয়াটসঅ্যাপের অবর্তমানে Signal কে আলিঙ্গন করে নিয়েছেন। এর আগে একদিনে এত সংখ্যক মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করেননি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই বছরের শুরুতে যখন WhatsApp-এর প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে সমস্যা চলছিল এবং সংস্থাটি ইউজারদের এই পলিসি অ্যাকসেপ্ট করতে বাধ্য করছিল, তখনও বিপুল সংখ্যক ইউজার Telegram এবং Signal অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলেন।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বিভ্রাট সম্পর্কে Facebook জানিয়েছে যে, “আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম সমস্যার কারণ হিসেবে রাউটারগুলির কনফিগারেশন পরিবর্তনকে দায়ী করেছে। এর ফলে নেটওয়ার্ক ট্র্যাফিকের সাথে আমাদের ডেটা সেন্টারগুলি কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যার কারণে সমস্ত পরিষেবা অচল হয়ে পড়ে।” তবে Facebook নিশ্চিত করেছে যে, এই গোলযোগের মধ্যেও ব্যবহারকারীদের ডেটা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে, তার সাথে কোনোরকম আপোষ করা হয়নি। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, প্ল্যাটফর্মগুলি সেদিন অকেজো হয়ে পড়ায় খোদ ফেসবুকের কর্মীরাই অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন