Royal Enfield Scram 411: মঙ্গলবারে লঞ্চ, রয়্যাল এনফিল্ডের নতুন স্ক্র্যাম নিয়ে কেন এত হৈচৈ, রইল পাঁচটি হাইলাইট

মেঠোপথ, আর তার উপরে একটি মোটরসাইকেলের ছায়া। সেই ছায়াতে দেখা যাচ্ছে হেলমেট একটু আঁটোসাটো করে নিয়ে হ্যান্ডেলবারে হাত রেখে থ্রটল চাপলেন জনৈক রাইডার। সোমবার গোধুলির সময় রয়্যাল এনফিল্ড (Royal Enfield) তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ভাগ পাঁচ সেকেন্ডের একটি ছোট্ট ভিডিও টিজার অনুরাগীদের ভাগ করে নিয়েছে। আর তাতেই আহ্লাদে আটখানা রয়্যাল এনফিল্ডপ্রেমীরা।

সংস্থার তরফ থেকে নিশ্চিতবার্তা পাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন তারা। আর তা পেয়েও গেলেন। রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১ (Royal Enfield Scram 411) আগামী ১৫ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে লঞ্চ হচ্ছে। এর মধ্যেই ডিলারদের কাছে পৌঁছতে শুরু করেছে মোটরসাইকেলটি। আবার ব্র্যান্ডেড অ্যাক্সেসরিজ এবং রাইডিং গিয়ারও ডিলারশিপে চলে এসেছে।

রয়্যাল এনফিল্ডের প্রতিটি মোটরবাইক নিয়েই মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা কাজ করে, সে বাজারে আসার আগের মুহূর্তগুলিতে হোক বা পরে। স্ক্র্যাম ৪১১-ও তার ব্যতীক্রম নয়। তবে আপকামিং স্ক্র্যাম ৪১১ যে সংস্থার হিমালয়ান (Himalayan) অ্যাডভেঞ্চারের উপরে ভিত্তি করে তৈরি, তা শোনার পর মোটরসাইকেলটি নিয়ে আগ্রহের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে বহুগুণ।

অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী বাইকারদের জন্য ভারতে পথ চলা শুরু করেছিল রয়্যাল এনফিল্ড হিমালয়ান। পাহাড়-জঙ্গলের দুর্গম থেকে দুর্গমতর রাস্তা জয় করে মোটরসাইকেলে লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার পছন্দ যাদের, তাদের কাছে হিমালয়ানের ভ্যালুই অন্য রকম। অফ-রোডিং বা চড়াই-উতরাই রাস্তা পেরোতে হিমালয়ানের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু অফিস-কলেজ বা টুকটাক বাজারে যাওয়া অর্থাৎ নিত্যদিন ব্যবহারের প্রসঙ্গে এলেই, অন্যান্য অ্যাডভেঞ্চার বাইকের মতো হিমালয়ানের সীমাবদ্ধতা বর্তমান। আর এখানেই রয়্যাল এনফিল্ডের বাজি তাদের নতুন স্ক্র্যাম্বলার ডিজাইনের বাইক তথা হিমালয়ানের স্ক্র্যাম্বলার ভার্সন, স্ক্র্যাম ৪১১।

রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-কে মেঠোপথ, পাথুরে অমসৃণ রাস্তার পাশাপাশি সাধারণ পথেও দেদার চালানোর মতো করে ডিজাইন করা হয়েছে। অর্থাৎ অন-রোড বা অফ-রোড উভয় ক্ষেত্রেই স্ক্র্যাম ৪১১-এর বহুমুখীভাবে ব্যবহার করা যাবে‌। রয়্যাল এনফিল্ড একটি সম্পূর্ণ নতুন প্ল্যাটফর্মের উপরে স্ক্র্যাম ৪১১ তৈরি করতে পারত। কিন্তু, ঝুঁকির ভয়ে বেশি সাহসী না হয়ে এগজিস্টিং হিমালয়ানকে নতুন বাইকটির ভিত হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা। রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-এর পাঁচটি হাইলাইট সম্পর্কে নীচে আলোচনা রইল।

Royal Enfield Scram 411 ডিজাইন

এক কথায়, রয়্যাল এনফিল্ড হিমালয়ানের রোড-ফ্রেন্ডলি ভার্সন হল স্ক্র্যাম ৪১১। হিমালয়ানের অনুরূপে স্ক্র্যাম ৪১১-ও সাবেকি ডিজাইনের সাথে আসছে। তবে অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে বাইকটিকে হালকা করার জন্য পিছনের ডেডিকেটেড লাগেজ র‍্যাগ সরানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে নতুন ট্যাঙ্ক শ্রাউড। এছাড়া, রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-এ যে সব বিষয়গুলি হিমালয়ানপ্রেমীরা মিস করবেন, সেগুলির মধ্যে উইন্ডস্ক্রিন, স্প্লিট সিট, ট্র্যাডিশনাল বিক উল্লেখযোগ্য।

Royal Enfield Scram 411 ইঞ্জিন

রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-এর ইঞ্জিন হিমালয়ান থেকে নেওয়া হয়েছে। এতএব, বাইকটি ৪১১ সিসি এয়ার কুল্ড ইঞ্জিনে দৌড়বে, যা ২৪.৩ বিএইচপি শক্তি এবং ৩২ এনএন টর্ক উৎপন্ন করবে। অনুমান, অন-রোড পারফরম্যান্সে উন্নতি আনতে ইঞ্জিনের অভ্যন্তরে কিছুটা পরিবর্তন করার পথে হাঁটতে পারে রয়্যাল এনফিল্ড

Royal Enfield Scram 411 হার্ডওয়্যার

রয়্যাল এনফিল্ড হিমালয়ানের চেয়ে স্ক্র্যাম ৪১১ যে আরও রোড-ফ্রেন্ডলি, তা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে অফ-রোডিংয়ের জন্য উপযুক্ত ২১ ইঞ্চি চাকা (ফ্রন্ট) তুলে দিয়ে স্ক্র্যামে ১৯ ইঞ্চি চাকা পড়ানো হয়েছে। এতে অন-রোড ও অফ-রোড পারফরম্যান্সের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকবে। তবে হিমালয়ানের মতো এর পিছনেও ১৭ ইঞ্চি চাকা রাখা হয়েছে। আগেকার দিনের বাইকে যেমন থাকত, রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-এর দু’চাকায় তেমন স্পোক লাগানো। বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ২০০ মিমি।

Royal Enfield Scram 411 ফিচার

রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-এর ব্রোশার সম্প্রতি ফাঁস হয়েছিল। যা এর বেশ কয়েকটি ফিচার নিশ্চিত করেছে।  ডুয়াল ডিস্ক ব্রেক (সামনে ও পিছনে একটি), অফসেট স্পিডোমিটার ও ট্রিপার নেভিগেশন সিস্টেম-সহ ডিজিটাল-অ্যানালগ ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার, অ্যালুমিনিয়াম সাম্প গার্ড, সিগনেচার কাস্ট মেটাল হেডল্যাম্প কাউল, প্রভৃতি থাকতে চলেছে রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১ মোটরসাইকেলে।

Royal Enfield Scram 411 দাম ও কালার অপশন

রয়্যাল এনফিল্ড স্ক্র্যাম ৪১১-এর দাম ১.৯৫ লাখ টাকার মধ্যে রাখা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। হালে একটি শোরুমে বাইকটির তিনটি কালার ভ্যারিয়েন্টের দর্শন মিলেছে – সাদা, লাল, এবং কালো।