রাস্তা-ঘাটে ফোন ঘাটতে গিয়ে হোঁচট বা ধাক্কা খাচ্ছেন? আপনার সাহায্যার্থে “The Third Eye”

মাথা নীচু করে স্মার্টফোনের টাচ স্ক্রিনে অবিরাম আঙুলের স্পর্শ৷ চলছে মেসেজ করা, গেম খেলা, বা ভিডিও দেখা। আজকাল রাস্তায় যেন ঠিক এই ভঙ্গিতেই আমরা হাঁটতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। নিত্যসঙ্গী স্মার্টফোনের ওপর থেকে নজর যেন সরাতেই চাই না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা নিয়েও কোনও হুঁশ নেই। ফলে স্মার্টফোনে মুখ গুঁজে রাস্তায় বেরিয়ে হোঁচট বা ধাক্কা খাওয়া, খোলা ম্যানহোলের মধ্যে পড়ে যাওয়া বা গাড়ির সাথে অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার মতো দুভার্গ্যজনক খবরও মাঝেমধ্যে সামনে আসে। এবার আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটত মুঠোফোন ঘাটাঘাটি করবো কিন্তু অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। এমন কোনও সমাধান কি আছে?

আসক্তি কাটানো ছাড়া এর কোনও সমাধান আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আপনি তৃতীয় চোখ বা ‘থার্ড আই’ লাগিয়ে নিতে পারেন। কি ভাবছেন, মস্করা করছি? দক্ষিণ কোরিয়ার এক ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার কিন্তু এমনই এক মজাদার রোবোটিক চোখ বানিয়ে ফেলেছেন। তবে এরজন্য অপারেশনেরও প্রয়োজন নেই। স্কিন ফ্রেন্ডলি জেল প্যাডের মাধ্যমে তৃতীয় চোখটি কপালে লাগালেই কেল্লাফতে।

লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অফ আর্ট এন্ড ইমপেরিয়াল কলেজের ইনোভেশন ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর Paeng Min Wook-এর “দ্য থার্ড আই” (The Third Eye) ডিভাইসটি নিয়ে এখন জোরদার চর্চা চলছে। যখনই স্মার্টফোনের দিকে তাকানোর জন্য আপনি মাথা নীচু করবেন, এর ভেতরে থাকা জাইরো সেন্সর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি ধরে ফেলবে। আর আপনার এক মিটার পরিধির মধ্যে কোনও বস্তু চলে আসলে ডিভাইসটির আল্ট্রাসনিক সেন্সর দূরত্ব পরিমাপ করে জোরে বিপ শব্দ বার করে আপনাকে সতর্ক করে দেবে। সেন্সর দু’টি ব্যাটারি প্যাকের সাথে ওপেন সোর্স সিঙ্গল বোর্ড মাইক্রোকন্ট্রোলারের সাথে লিঙ্ক করা থাকবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী শহর সিওলে বছর আটাশের যুবক Paeng তাঁর থার্ড আই ডিভাইসটির পরীক্ষা করতে বেরিয়েছিলেন। সামনে স্কুটার থাকলেও এটি যেমন বিপ শব্দে সতর্ক করেছে আবার রোড ব্লকার থাকলেও থার্ড আই থেকে বিপ শব্দ বেজে ওঠেছে। তা দেখে সিওলের বাসিন্দা Lee Ok-jo বলেছেন, “কপালে ওই চোখ লাগিয়ে ওকে অনেকটা ভিনগ্রহীদের মতো লাগছিল।” তিনি যোগ করে বলেছেন, “আজকাল অনেক যুবক রাস্তায় ফোন ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন৷ থার্ড আই তাঁদের পক্ষে ভালই হবে।”

Paeng অবশ্য বলেছেন, “থার্ড আইটি তিনি সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য বানিয়েছেন। কোথায় যাচ্ছে সেদিকে মনোযোগ থাকে না এমন স্মার্টফোন আসক্তদের জন্য এটা আসল সমাধান নয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, “এই ব্যঙ্গাত্মক সমাধান উপস্থাপনের মাধ্যমে, আমি আশা করি লোকেরা তাদের গ্যাজেট আসক্তির তীব্রতা স্বীকার করে নিজের দিকে ফিরে তাকাবে।”

থার্ড আই ডিভাইসটির প্রোটোটাইপ ভার্সন বানাতে Paeng ছ’সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, এটি ডেভেলপমেন্টের পর্যায়ে রয়েছে ফলে বেশি মানুষের ওপরে পরীক্ষা করা এখনও বাকি। তবে ডিভাইসটির সেন্সর বা নোটিফিকেশন মেথড ইমপ্রুভ করার জন্য আমি পরামর্শ পাচ্ছি। থার্ড আই আরও ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তোলাই আমার লক্ষ্য।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন