Tata Tigor EV: টাটার এই নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি কিনবেন? ভালো ও খারাপ দিক দেখে নিন

ভারতের বাজারে গাড়ি প্রস্তুতকারী বিভিন্ন সংস্থাগুলি একে একে নিজেদের ইলেকট্রিক মডেলের গাড়ি আনছে। ক্রমশ বেড়ে চলা পরিবেশ দূষণ এবং আগামী দিনে জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ি বিক্রয় বন্ধের কথা বিবেচনা করে ইদানিং বহু মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এখন বিষয় হচ্ছে কোন সংস্থার বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনলে পড়তায় কুলানোর সাথেই ফিচার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে লাভবান হওয়া যায়। এই বিষয়ে সন্দিহান অনেককেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়। অথবা নিজের মুনাফাকে প্রাধান্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অতি তৎপর কোনো সংস্থার কর্মকর্তাদের দ্বারা ভুল পথে পরিচালিত হওয়ার মতো ঘটনার নিদর্শনও নেহাত কম নেই। তাই আগেভাগে যদি পছন্দের গাড়ির মডেলটির খুঁটিনাটিগুলি জানা থাকে তবে বেশ সুবিধাই হয়। আজ আমরা এই প্রতিবেদনে Tata Tigor EV-এর ভালো ও খারাপ দিক আপনাদের কে জানাবো।

সম্প্রতি ভারতের বাজারে লঞ্চ হয়েছে গাড়িটি। ইতিমধ্যেই টাটা টিগর ইভি গাড়িটির সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। 2020 Tigor facelift ভার্সনটির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে Tigor EV। XE, XM ও XZ+ – এই তিনটি ভ্যারিয়েন্টে আনা হয়েছে গাড়িটি। Tata-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা কোনো অথরাইজড শোরুম থেকে ২১,০০০ টাকার বিনিময়ে গাড়িটি বুকিং করা যাবে। নিম্নে গাড়িটির সুবিধা ও অসুবিধা গুলি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করা হল –

Tata Tigor EV-এর সুবিধা

১) টাটা টিগর ইভি গাড়িটিতে রয়েছে চমকদার ডিজাইন। এর স্মার্ট ফিচারগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – প্রোজেক্টর হেডলাইট, নতুন ফগ ল্যাম্প, এলইডি ডে রানটাইম ল্যাম্প বা ডিআরএল, ১৪ ইঞ্চির চাকা এবং নতুন এলইডি টেলল্যাম্প।

২) অত্যাধুনিক ফিচারে ঠাসা গাড়ির কেবিনটিতে রয়েছে ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার, ৭ ইঞ্চির একটি ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম যা অ্যাপেল কারপ্লে এবং অ্যান্ড্রয়েড অটো প্রযুক্তি সমৃদ্ধ, উন্নত iRA সিস্টেম। এছাড়াও আরো অসংখ্য ফিচার পাওয়া যাবে এই গাড়িটিতে।

৩) আপডেটেড টিগর ইভি-তে মিলবে টাটা মোটরসের জিপট্রন ইভি (Ziptron EV) প্রযুক্তি যুক্ত মোটর, যা উন্নত কার্যকারিতার সাথে একক চার্জে ৩০৬ কিমি রেঞ্জ দেবে বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

৪) ইলেকট্রিক সেডান গাড়িটি ২৬ কিলোওয়াট আওয়ার শক্তির লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির সাথে এসেছে। এছাড়াও এর মোটরটি থেকে সর্বোচ্চ ৭৩ বিএইচপি শক্তি এবং সর্বাধিক ১৭০ এনএম টর্ক পাওয়া যায়। এমনকি ০ থেকে ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ তুলতে এতে সময় লাগে মাত্র ৫.৭ সেকেন্ড।

৫) গ্লোবাল NCAP প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের সুরক্ষার বিষয়ে গাড়িটিকে চার তারার (ফোর স্টার) মানপত্র দিয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত অন্যান্য ফিচারগুলি যেমন ISOFIX মাউন্টস ডুয়েল এয়ার ব্যাগ, এবিএস এবং ইভিডি-র মতো প্রযুক্তির রয়েছে এতে।

Tata Tigor EV-এর অসুবিধা

১) যেখানে একক চার্জে টাটা টিগর ইভি গাড়িটির রেঞ্জ ৩০৬ কিমি বলে দাবি করেছিল সংস্থাটি, সেখানে বাস্তবে দেখা গেছে যদি একটানা স্পোর্ট মোডে গাড়িটি চালানো হয় তাহলে ২১০ কিমি রেঞ্জ পাওয়া যায়।

২) এর স্টিয়ারিংটি বেশ হালকা, যা চালকের ক্ষেত্রে অসুবিধার কারণ হতে পারে।

৩) সুরক্ষার ক্ষেত্রে এটি চার তারা পেলেও পিছনের যাত্রীদের মধ্যে কেবলমাত্র মাঝের জনের জন্যই ল্যাপ বেল্ট দেওয়া রয়েছে এতে। এছাড়া ইলেকট্রনিক স্টেবিলিটি কন্ট্রোল (ESC) ফিচারটি এতে অনুপস্থিত।

৪) যেখানে পাবলিক ডিসি ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করে টাটার এই বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারিটিকে মাত্র ১ ঘন্টায় ০ থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ করা যায়, সেখানে বাড়ির এসি চার্জারে চার্জ হতে ব্যাটারিটির সময় লাগে ৮.৫ ঘন্টারও অধিক।

৫) যেহেতু ভারতে বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশনের পরিকাঠামো এখনো ততটা উন্নত নয় সেক্ষেত্রে এর কম রেঞ্জের কারণে কোনো দূরের গন্তব্যে যাত্রার ক্ষেত্রে আপনাকে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করেই এগোতে হবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন