জম্মু এবং কাশ্মীর চীনের অংশ! যান্ত্রিক ত্রুটি বলে সাফাই টুইটারের

এবার সামাজিক মাধ্যম Twitter এর কার্যকলাপ বিতর্কের জন্ম দিলো! ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ জম্মু এবং কাশ্মীরকে এই সংস্থা গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অন্তর্ভুক্ত করায়, ভারতীয় নেটিজেনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের জাতীয় সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ নীতিন গোখলের একটি টুইটকে কেন্দ্র করে মার্কিন সামাজিক মাধ্যমের এই হঠকারিতা প্রকাশ্যে আসে।

লেহ লাদাখের অন্তর্গত Hall of Fame সংগ্রহশালাটি দেশের সেই সমস্ত নিবেদিতপ্রাণ বীর ভারতীয় সৈনিকদের স্মরণ করায়, যারা জাতীয় স্বার্থের সামনে নিজের জীবনের মূল্যকে তুচ্ছ করেছেন। জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের একটি প্রখ্যাত পর্যটন ওয়েবসাইট lehladakhindia.com অনুযায়ী Hall of Fame সংগ্রহশালা লেহ-কার্গিল রোডের ওপরে, লেহ শহর থেকে মাত্র চার কিমি দূরত্বে অবস্থিত। ভারত-পাক যুদ্ধের শহীদদের অসংখ্য স্মৃতি এই সংগ্রহশালাটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে। ভারতীয় সেনা খোদ এই সংগ্রহশালার নির্মাতা।

অথচ এদিন নীতিন গোখলে তার টুইটে লাইভ লোকেশনে এই সংগ্রহশালাটিকে ট্যাগ করলে টুইটার তার অবস্থানসহ জম্মু-কাশ্মীরের এক বিশাল ভূ-খণ্ডকে চীনের অন্তর্ভুক্ত বলে দেখায়। টুইটারের এই কীর্তিতে জাতীয় সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ নীতিন গোখলে বিস্ময় প্রকাশ করেন! এরপরেই তিনি আরেকটি টুইটে সামাজিক মাধ্যমটির বিরুদ্ধে তার মনের ক্ষোভ উগড়ে দেন।

গোখলের টুইটের প্রত্যুত্তরে আরেকজন ভারতীয় Twitter ব্যবহারকারী, কাঞ্চন গুপ্তার টুইটটিও এক্ষেত্রে সকলের নজর কেড়েছে। কাঞ্চন গুপ্তা ভারতের তথ্য সম্প্রচার এবং প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদকে ট্যাগ করে টুইটারের বিরুদ্ধে সরকারী বিবৃতির দাবী করেছেন। তার বক্তব্য, যেখানে ছোট-বড় যে কোন অপরাধ করলে ভারতীয় আইনে তার শাস্তির বিধান রয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র মার্কিন বৃহৎ বাণিজ্যিক সংস্থা হওয়ার কারণেই যেন টুইটারের দোষ চাপা না পড়ে। আর তাছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চীনা আগ্রাসন সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হওয়াটা যে ভারতীয় মাত্রেই সাধারণ কর্তব্য সে বিষয়টিও প্রশ্নাতীত।

নীতিন গোখলের পরে আরো বহু মানুষ এদিন টুইটারে সংগ্রহশালার লোকেশনটিকে ট্যাগ করেছেন। কিন্তু সকলের মনে অসংখ্য প্রশ্নের জন্ম দিয়ে টুইটার বারবার জম্মু-কাশ্মীরকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অংশ হিসেবে দাবী করেছে! এই বিতর্কের মুখে সামাজিক মাধ্যমটি প্রাথমিকভাবে কোন সদুত্তর জোগাতে না পারলেও, পরে ভারতীয় নেটিজেনদের প্রতিবাদে তারা মুখ খুলতে বাধ্য হন। Hindustan Times কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টুইটারের জনৈক মুখপাত্র এই ত্রুটিকে ‘যান্ত্রিক’ বলে দাবী করেছেন। তার বক্তব্য, রবিবার এই যান্ত্রিক ভুল তাদের নজরে আসে। ভবিষ্যতে এইধরণের অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে তারা আরো বেশীমাত্রায় সচেতন হবেন বলেই টুইটারের প্রতিনিধির আশ্বাস।