Valorant: অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে প্রেম, বোনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে পেরে কুপিয়ে খুন তরুণীর

জীবন হল অসংখ্য মুহূর্তের সমষ্টি, নিত্যদিনের চলার পথে অতিবাহিত করা প্রতিটি মুহূর্তই হল জীবনের অবিচ্ছেদ্য ও অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই এক মুহূর্তের রাগের বশে এমন…

জীবন হল অসংখ্য মুহূর্তের সমষ্টি, নিত্যদিনের চলার পথে অতিবাহিত করা প্রতিটি মুহূর্তই হল জীবনের অবিচ্ছেদ্য ও অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই এক মুহূর্তের রাগের বশে এমন কিছু কখনোই করে ফেলা উচিত নয়, যার জন্য বাকি জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত আক্ষেপ করে পস্তাতে হয়। আমরা সকলেই জানি যে, রাগ মানুষের অনেক ক্ষতি করে। কিন্তু সঠিক সময়ে রাগকে সংবরণ করতে না পারলে দুই বোনের সুমধুর সম্পর্কেরও যে কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে, আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনে উল্লিখিত ঘটনাটি তারই এক জ্বলন্ত উদাহরণ। অরল্যান্ডো সেন্টিনেল (Orlando Sentinel)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ফ্লোরিডার ২১ বছর বয়সী ফাতিহা মারজান (Fatiha Marzan) নামের এক মহিলা গত ২৬ সেপ্টেম্বর লক্ষ্য করেন যে, তার ছোটো বোন ভ্যালোরান্ট (Valorant) মারফত তার বহুদূরনিবাসী বয়ফ্রেন্ডের সাথে ফ্লার্ট করছে। বিষয়টি নজরে আসায় তিনি এতটাই রেগে যান যে, বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করে নিজের বোনকে খুন করে ফেলেন ফাতিহা, যার ফলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। আসুন, এই রোমহর্ষক ঘটনাটির সম্পর্কে একটু বিশদে জেনে নেওয়া যাক।

নিজের বয়ফ্রেন্ডের সাথে ফ্লার্ট করতে দেখে ছুরির আঘাতে বোনকে নৃশংসভাবে খুন করল দিদি!

রিপোর্ট অনুযায়ী, ফাতিহা মারজান অরেঞ্জ কাউন্টি শেরিফের (Orange County Sheriff) ডেপুটিদের কাছে নিজমুখে স্বীকার করেছেন যে, তিনি এবং তার অজ্ঞাতনামা বয়ফ্রেন্ড দুজনেই একসঙ্গে ভ্যালোরান্ট খেলতেন, এবং তাদের দুজনের মধ্যে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে সম্পর্কও রয়েছে। তবে উক্ত মর্মান্তিক ঘটনাটি সেই সময় ঘটে যখন তিনি জানতে পারেন যে, তার ২০ বছর বয়সী ছোটো বোন সায়মা মারজান (Sayma Marzan) তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ভ্যালোরান্টের ইন-গেম কমিউনিকেশন সিস্টেম মারফত টেক্সট মেসেজ করে ফ্লার্ট করছে। নিজের প্রেমিকের সাথে বোনের ঘনিষ্ঠতা কোনোমতেই মেনে নিতে পারেননি তিনি, আর এর জেরেই চূড়ান্ত রাগের বশে ফাতিহা তার ছোটো বোনকে খুন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

Amazon থেকে অর্ডার করা ছুরি ব্যবহার করে নিজের বোনকে নৃশংসভাবে খুন করেন ফাতিহা

উল্লেখ্য যে, এই ঘটনার মাত্র ২ সপ্তাহ আগে ফাতিহা অ্যামাজন (Amazon) থেকে একটি ছুরি অর্ডার করেছিলেন। তবে উক্ত ঘটনার আগে পর্যন্ত ছুরিটিকে নিজের ব্যাগে লুকিয়ে রাখলেও ছোটো বোনকে খুন করার ক্ষেত্রে তিনি এই ছুরিটিই ব্যবহার করবেন বলে মনস্থ করেন। যদিও বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়েই সম্পূর্ণ সজ্ঞানে এই জঘন্য কাজ করার পরিকল্পনা করেন ফাতিহা। তাই রাতের অন্ধকারে বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে পড়ার পর ভোর সাড়ে ৪টের দিকে তাদের ব্যক্তিগত শয়নকক্ষে তিন থেকে চারবার নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা নিজের আদরের ছোটো বোনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন তিনি।

তবে সত্যি সত্যিই যখন নিজের ছোটো বোন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, তখন চূড়ান্ত অনুতপ্ত হয়ে যান ফাতিহা, যার জেরে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ সদস্য তাকে তাড়াহুড়ো করে এই ধরনের সিদ্ধান্ত না নেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে এই জঘন্য অপরাধের জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে না পারায় তিনি অবশেষে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাই ছোটো বোনকে হত্যা করার ১৫ ঘণ্টা পর ৯১১ ডায়াল করে পুলিশকে ফাতিহা জানান যে, তার ছুরির আঘাতেই সায়মা মারা গিয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর অরেঞ্জ কাউন্টি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে সাইমার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন, এবং সেইসাথে ফাতিহাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তাকে অরেঞ্জ কাউন্টি জেলে (Orange County Jail) ফার্স্ট-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগে বিনা বন্ডে বন্দি করে রাখা হয়েছে।