কলকাতা পুলিশের বিশেষ সতর্কতা, নতুন উপায়ে হ্যাক হচ্ছে WhatsApp ও Facebook
স্ক্যামাররা সাধারন মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিতে ফেসবুক (Facebook) এবং হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে শুরু করেছে

বর্তমানে আমাদের দেশে Online Scam দ্রুতগতিতে বাড়ছে। হ্যাকাররা নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে ঠকিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল একটি নতুন ধরনের স্ক্যাম সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, স্ক্যামাররা সাধারন মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিতে ফেসবুক (Facebook) এবং হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে শুরু করেছে। এক ছাত্র এবং এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এই সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ।
স্ক্যামারা কিভাবে হ্যাক করছে WhatsApp?
বিশ্ব যোগা দিবস অর্থাৎ ২১ জুনের একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর জানা যায়, প্রতারকেরা প্রথমে যোগা ক্লাসের অজুহাত দিয়ে বেশ কয়েকজন মানুষের সাথে যোগাযোগ করে। তারপর তাদের যোগা ক্লাসে যুক্ত হবার আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি লিঙ্ক পাঠায় এবং সেই লিঙ্কে ক্লিক করে ক্লাসে জয়েন হতে বলে। লিঙ্কে ক্লিক করার পর প্রত্যেকে একটি ছয় সংখ্যার ওটিপি পায়, যা তাদের শেয়ার করতে বলা হয়। যে সমস্ত মানুষেরা এরকম অনলাইন প্রতারণার সম্পর্কে কিছু জানতেন না তারা সেই ওটিপি তাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেয়। আর এরপর স্ক্যামাররা ভিক্টিমের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করে তার পরিচিত মানুষদের কাছে নানান অজুহাতে টাকা চাইতে থাকে। বেশ কয়েকটি দেশে এই প্রতারণাকে ” হ্যালো মম” স্ক্যাম নামে অভিহিত করা হয়েছে। জানা গেছে , কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার স্ক্যামাররা ভিক্টিমকে তাদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস ফিরে পাওয়ার জন্য ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগ করার জন্য বাধ্য করেছে।
WhatsApp হ্যাকিং কেলেঙ্কারি থেকে কিভাবে নিরাপদে থাকবেন?
কলকাতা পুলিশ বলছে যে, অজানা বা অচেনা কোনো নম্বর থেকে কোনো রকম বার্তা পেলে সেটি শেয়ার বা ফরওয়ার্ড করবেন না এবং অজানা কোনো নম্বর থেকে কোনো লিঙ্ক পাঠালে সেই লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
WhatsApp হ্যাকিং কেলেঙ্কারি থেকে নিরাপদে থাকার কয়েকটি উপায় –
১. সন্দেহজনক মেসেজ দেখলে সতর্ক থাকুন
অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কোড বা যে কোনো ধরনের ওটিপি জানতে চেয়ে কোনো মেসেজ এলে সেটি এড়িয়ে চলুন।
২. এই ধরনের মেসেজ শেয়ার করা এড়িয়ে চলুন
কোনো অজান নম্বর থেকে কেউ যদি কোনো রকম সংবেদনশীল তথ্য জানতে চেয়ে মেসেজ পাঠায় তাহলে সেই ধরনের মেসেজগুলি কারো সাথে শেয়ার করবেন না বা কাউকে ফরওয়ার্ড করবেন না।
৩. ক্রস-চেক করুন
যদি আপনার পরিচিত কোনো ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে টাকা চায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওই পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে বা কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে যাচাই করুন।
৪. টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করুন
হোয়াটসঅ্যাপ একটি টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ফিচার প্রদান করে যা আপনার অ্যাকাউন্টটি নিরাপদ রাখতে সাহায্য করে। এটি ফিচার চালু করতে, হোয়াটসঅ্যাপ সেটিংসে যান, তারপর অ্যাকাউন্টে যান এবং টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনের অপশন খুঁজে বের করে এটি চালু করুন।
৫. সন্দেহজনক কিছু দেখলেই রিপোর্ট করুন
আপনি যদি হোয়াটসঅ্যাপে কোনও সন্দেহজনক বার্তা, অ্যাকাউন্ট বা কার্যকলাপ খুঁজে পান, তবে সেগুলি হোয়াটসঅ্যাপে রিপোর্ট করুন বা পুলিশের সাইবার সেলে যোগাযোগ করুন।