ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং ক্ষতিকারক বা অবাঞ্ছিত তথা স্প্যাম মেসেজ প্রেরণের জন্য, অর্থাৎ সোজা কথায় প্ল্যাটফর্মে ক্ষতিকর আচরণের জন্য ইউজারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ক্রমাগত জারি রাখছে Facebook (এখন Meta)-এর মালিকানাধীন বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)। নতুন তথ্য প্রযুক্তি বিধি ২০২১-এর ভিত্তিতে প্রকাশিত সংস্থার মাসিক গ্রিভান্স কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট অনুযায়ী, মেসেজিং অ্যাপটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ৫২৮ টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোট ২০,৭৯,০০০ টি ভারতীয় অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। হ্যাঁ, অঙ্কটা আশ্চর্যজনক লাগলেও ঠিকই পড়েছেন।
আসলে, প্ল্যাটফর্মে যাবতীয় অবৈধ ক্রিয়াকলাপ রুখতে বিগত কয়েক মাস ধরেই হোয়াটসঅ্যাপ এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। সংস্থার মতে, সকল ইউজারদের স্প্যাম-ফ্রি এবং অত্যন্ত সাবলীল-নিরাপদ ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা প্রদান করাই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটির মূল উদ্দেশ্য; আর এই উদ্দেশ্য বজায় রাখতে সংস্থাটি যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতেও বদ্ধপরিকর। তাই ভবিষ্যতেও যে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বন্ধের মত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া ক্রমাগত অব্যাহত রাখবে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, হোয়াটসঅ্যাপ ইতিমধ্যেই ১.৭৫ মিলিয়নেরও বেশি ভারতীয় অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি জানিয়েছে যে, ইউজারদের যাবতীয় ক্ষতিকারক আচরণ রোধ করতে তারা নিজস্ব টুল এবং রিসোর্স ব্যবহার করে এবং তার মাধ্যমে শনাক্ত অ্যাকাউন্টগুলিকেই তারা নিষিদ্ধ করে।
প্রসঙ্গত, নতুন তথ্য প্রযুক্তি আইন চালু হওয়ার পর থেকেই ফেসবুক, টুইটার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো সংস্থাগুলির সঙ্গে ক্রমাগত মতবিরোধ হয়েছে ভারত সরকারের। তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, জাতীয় সুরক্ষাকে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে ভারতের আইন মেনেই এদেশে ব্যবসা করতে পারবে সংস্থাগুলি। এর অন্যথা হলে নতুন আইন অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত বছর সরকারের কড়া নির্দেশিকা চালু করার পর, প্রথমে দেশের আইন মানতে অস্বীকার করলেও চাপের মুখে পড়ে মূল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি তাদের নীতিতে রদবদল করা শুরু করে। কেন্দ্রের নতুন তথ্য প্রযুক্তি আইন অনুযায়ী, ৫০ লক্ষের বেশি গ্রাহক রয়েছেন এমন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে প্রতি মাসেই কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেইসাথে জানাতে হবে, তাদের কাছে কত অভিযোগ জমা পড়ছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই এই ধরণের রিপোর্ট প্রকাশ করা শুরু করেছে হোয়াটসঅ্যাপ।