WhatsApp Scam: সতর্ক করল পুলিশ, হোয়াটসঅ্যাপে সাহায্যের মেসেজ আসলে এড়িয়ে যান

ইদানীংকালে WhatsApp-কে হাতিয়ার করে সাইবার জালিয়াতি যুক্তরাজ্যে (UK) ভয়াল থাবা বসিয়েছে। গত মাসেই সেদেশে প্রবলভাবে হানা দিয়েছিল WhatsApp-এর “friend in need” স্ক্যাম, যেখানে সাইবার হ্যাকাররা কোনো অভাবী বন্ধু বা নিকট আত্মীয়-পরিজন হওয়ার ভান করে টাকা চেয়ে ইউজারদের কাছে মেসেজ পাঠাচ্ছিল। আর এই ভুয়ো মেসেজের ফাঁদে পা দিয়ে অর্থসাহায্য করে টাকাও খুইয়েছেন বহু সংখ্যক ইউজার। তবে এবার লোক ঠকানোর জন্য আর-এক নতুন পন্থা অবলম্বন করছে জালিয়াতরা।

এখন আর বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-পরিজন নয়, সরাসরি ছেলে বা মেয়ে হওয়ার ভান করে টাকা চেয়ে ইউজারদের কাছে মেসেজ পাঠাচ্ছে হ্যাকাররা। কারণ বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনকে এড়িয়ে গেলেও সন্তানের টাকার প্রয়োজন থাকলে বাবা-মা কি আর না দিয়ে থাকতে পারে! তাই বিন্দুমাত্র সন্দেহ না করে মেসেজ পাওয়া মাত্রই “ছদ্দবেশী” ছেলে বা মেয়েকে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন একাধিক ব্যবহারকারী।

এভাবেই অতি সহজে আজকাল নিরীহ মানুষদের থেকে হাজার হাজার পাউন্ড চুরি করে নিজেদের অ্যাকাউন্ট ভরিয়ে তুলছে হ্যাকাররা। Express UK-র একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জানা গেছে যে, লোক ঠকানোর এই নয়া ফন্দির মাধ্যমে স্ক্যামাররা কয়েক মাসের মধ্যে সহজসরল সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৫০,০০০ পাউন্ড চুরি করতে সক্ষম হয়েছে। এই ভুয়ো মেসেজগুলি সাধারণভাবে “Hello Mum” বা “Hello Dad” দিয়ে শুরু হয়, তারপরে একটি জরুরি পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ছেলে বা মেয়ে হওয়ার ভান করে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা চেয়ে ইউজারদের কাছে কাতর আর্তি জানায় হ্যাকাররা।

বেশিরভাগ পরিস্থিতিতে স্ক্যামাররা বিল পরিশোধ করতে যাওয়ার আগে ফোন হারিয়ে যাওয়া, গাড়ি কেনার সময় অর্থের জরুরি প্রয়োজনের মতো অজুহাত ব্যবহার করে টাকা চায়। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, অজুহাতগুলি তাৎক্ষণিকভাবে ইউজারদের চূড়ান্তভাবে বিব্রত করে তোলে। স্ক্যামাররা এমনভাবে ইউজারদের মেসেজগুলি পাঠায় যাতে তাদের মনে কোনোরকম সন্দেহের উদ্রেক না হয়, এবং অজুহাতগুলি এমন হয় যা শুনে ইউজারদের টাকা না দিয়ে থাকা সত্যিই মুশকিল। ফলে মেসেজটি আসল না ভুয়ো সেসব ভাবার কথা অনেকের মাথাতেই আসে না। আর তাই তৎক্ষণাৎ অর্থসাহায্য করার আগেও তারা দুবার ভাবেন না।

এই বিষয়ে সকল ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে সিটি অফ লন্ডন পুলিশের ডিটেকটিভ ইন্সপেক্টর ক্রেইগ মুলিস (Craig Mullish) বলেছেন যে, যদি কখনো আপনার কাছে এই ধরনের কোনো মেসেজ আসে, তাহলে তৎক্ষণাৎ উত্তেজিত বা চিন্তিত না হয়ে আপনার সন্তানকে ফোন করে জেনে নিন যে যথার্থই মেসেজটি তার কাছ থেকেই এসেছে কি না। মেসেজ পেয়ে অর্থসাহায্য করার আগে দুবার ভাবুন, কারণ যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করাই এই জাতীয় সাইবার জালিয়াতির হাত থেকে আপনাকে এবং আপনার অর্থকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।