Cryptocurrency Scam: ডিজিটাল কারেন্সিতে বিনিয়োগের নামে ৩,০০,০০০ ডলার খোয়ালেন মহিলা

এই মুহুর্তে গোটা বিশ্বে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ডিজিটাল মুদ্রার প্রভাব ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। আর ক্রিপ্টোকারেন্সির আকাশছোঁয়া বাজার মূল্য কেবল বিনিয়োগকারীদের মধ্যেই নয়, সাধারণ মানুষকেও এটির প্রতি চরমভাবে আকৃষ্ট করেছে। কিন্তু সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, ক্রিপ্টোকারেন্সির এই তুমুল জনপ্রিয়তাকে প্রত্যক্ষ করে সাইবার জালিয়াতিও কিন্তু ব্যাপকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ফলে সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়ে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ খোয়ানোর সম্ভাবনাও যে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের নামে এক মহিলার ৩,০০,০০০ ডলার হারানোর খবর সামনে এসেছে। আসুন ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

ক্রিপ্টোকারেন্সি জালিয়াতিতে টাকা খোয়ালেন মহিলা

টেনেসির ২৪ বছর বয়সী নিকি হাচিনসন যিনি পেশায় একজন সোশ্যাল মিডিয়া প্রযোজক হিঞ্জ (Hinge) নামক একটি ডেটিং অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে হাও নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের দুজনের মধ্যে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বার্তালাপ চলতে থাকে, যার পরে তিনি এই অনলাইন ক্রিপ্টো জালিয়াতির শিকার হন। New York Times (NYT)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সুমধুর বাক্যালাপের মাধ্যমে হাও প্রথমে নিকির বিশ্বাস অর্জন করে। এরপর হাও যখন জানতে পারে যে নিকি তার মায়ের মৃত্যুর পরে তার জন্মভিটে বিক্রি করে প্রায় ৩,০০,০০০ ডলার উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন, তখন তিনি নিকিকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করার জন্য উৎসাহিত করেন। এতে প্রচুর টাকা মুনাফা অর্থাৎ অতিরিক্ত আয় হবে বলেও তিনি নিকিকে আশ্বাস দেন।

হাও-এর কথায় আশ্বস্ত হয়ে নিকি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে সম্মত হন, এবং তিনি হাও-এর দেওয়া একটি ওয়ালেট অ্যাড্রেসে অল্প পরিমাণ টাকা প্রেরণ করেন। স্ক্যামার (হাও) তাকে এই বলে বিভ্রান্ত করেছিল যে, তিনি যে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাচ্ছেন তা ICAC নামক একটি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জের সাথে যুক্ত রয়েছে। এরপর সত্যিই যখন নিকি দেখেন যে ওয়েবসাইটটিতে বেশি পরিমাণ টাকা এসে উপস্থিত হয়েছে, তখন তিনি হাও-এর সাহায্য নিয়ে আরও অনেক বেশি টাকা বিনিয়োগ করা শুরু করেন। কারণ তার মনে হয়েছিল যে, এভাবেই হয়তো খুব সহজে অনেক অনেক টাকা উপার্জন করা যাবে। তাই তিনি ক্রিপ্টো-ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে তার যাবতীয় সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগ করে দেন।

এরপর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে হাচিনসন তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে না পারায় তার মনে খটকা লাগে। তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করলে ICAC-র একজন কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট তাকে বলেন যে, তার অ্যাকাউন্টটিকে ফ্রিজ করা হয়েছে, এবং এজন্য তাকে প্রথমে কয়েক হাজার ডলার কর (ট্যাক্স) দিতে হবে। NYT-এর মতে, এরপর হাজার চাইলেও নিকি আর হাও-এর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি, হাও যেন বেমালুম অদৃশ্য হয়ে যায়!

তবে বর্তমানে নিকি স্থানীয় ফ্লোরিডা পুলিশের সাথে স্ক্যামারকে খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতারিত ওই মহিলা NYT-কে জানিয়েছেন যে, তিনি তার অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা করছেন না, তবে তিনি চান যে মানুষ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ সম্পর্কে সতর্ক হোক। তাঁর টাকা খোয়া যাওয়ার পর যাতে অন্য লোকেরা আর এই ধরনের জালিয়াতির শিকার না হয়, তাই জনসচেতনতা বাড়াতে তিনি সকলকে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করার আর্জি জানিয়েছেন।