চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, এই কারণে Xiaomi-র উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে আমেরিকা?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক যে একেবারেই মধুর ছিলোনা, সেকথা আমরা সকলেই জানি। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনকে বিপাকে ফেলতে ট্রাম্প একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকমাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা সংস্থা শাওমি (Xiaomi) -কে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি নিয়ে ব্যাপক চর্চা হয়। মূলত চীনা সেনাবাহিনীর সাথে যোগসাজশের অভিযোগ তুলেই ট্রাম্পের প্রশাসন শাওমির উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করে! যদিও চীনা মোবাইল নির্মাতা সংস্থাটি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে জানিয়ে দেয় যে, পিপলস লিবারেশন আর্মির স্বার্থের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করার পরেও, শাওমির প্রতি ট্রাম্প বা তার প্রশাসন বিন্দুমাত্র নরম হয়নি, অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা যেমন ছিল ঠিক তেমনটাই রয়ে গিয়েছে।

কিন্তু শাওমি (Xiaomi) নিজেই যখন বলছে যে তারা কোনভাবেই কমিউনিস্ট চীনের সেনাবাহিনীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, তখন ট্রাম্পের এমন একগুঁয়েমির কারণ কি? সম্প্রতি, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ ঠিক কোন কারণে শাওমির উপর এমন খাপ্পা, প্রতিবেদক তার হদিস খুঁজে পেয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাকে তাকে কেন্দ্র করে নয়, খোদ শাওমি’র (Xiaomi) সিইও লি জুনের (Lei Jun) কারণেই যত বিপত্তি। ২০১৯ সালে চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের (MIIT) তরফ থেকে তাকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়, যে জন্য সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোপ পরে শাওমি’র উপর! এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ কেমন সম্মান যা দেখামাত্র ট্রাম্প প্রশাসন শাওমি নামের আড়ালে অন্য কোন ষড়যন্ত্রের ছায়া আবিষ্কার করলো!

২০১৯ সালে শাওমি (Xiaomi) কর্তা লি জুন সহ আরো ১০০ জন আধিকারিককে এমআইআইটি যে সম্মানটি প্রদান করে তার পোশাকী নাম ‘আউটস্ট্যান্ডিং বিল্ডার অফ সোশ্যালিজম উইথ চাইনিজ ক্যারেক্টারিস্টিক অ্যাওয়ার্ড’। এবার নিশ্চয় নাম শুনে ট্রাম্প প্রশাসনের রোষের কারণ কিছুটা হলেও অনুমান করা যাচ্ছে! ব্যাপারটা আর একটু স্পষ্ট করতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে যে, চীনা নাগরিক সমাজের সামরিকীকরণের ক্ষেত্রে এমআইআইটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। এরা প্রধানত বেসরকারি সংস্থাগুলির সাথে জড়িত থেকে সেনাবাহিনীর হাতে উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ করে থাকে।

উল্লেখ্য, এমআইআইটি’র (MIIT) তরফ থেকে সম্মাননা প্রাপ্তির পরে সে কথা আবার শাওমি’র (Xiaomi) কর্পোরেট ওয়েবসাইটে, সিইও(CEO) -র পেজ থেকে ফলাও করে প্রচার করা হয়! ফলে এই সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই যে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার মেয়াদকাল ফুরোনোর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শাওমি’কে (Xiaomi) পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেন, সে সম্পর্কে অনেকেই নিশ্চিত।

এদিকে যে কোন মূল্যে নিষেধাজ্ঞা থেকে বেরিয়ে আসতে আগ্রহী শাওমি'(Xiaomi) পক্ষ থেকে আপাতত এই প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করা হয়নি।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন