- Home
- »
- অ্যাপ্লিকেশন »
- বিপদ ডেকে আনছে WhatsApp, এই পাঁচটি বিষয়...
বিপদ ডেকে আনছে WhatsApp, এই পাঁচটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখুন ব্যবহারকারীরা
WhatsApp বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত একটি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপে পরিণত হয়েছে। মূলত পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বন্ধদের...WhatsApp বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত একটি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপে পরিণত হয়েছে। মূলত পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বন্ধদের পাশাপাশি এর 'বিজনেস' শাখার মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সাথে সর্বক্ষণ সংযুক্ত থাকা সম্ভব হয় বলে উক্ত প্ল্যাটফর্মটি বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এছাড়া দিনকে দিন যেভাবে নিত্যনতুন ফিচারের আমদানি করছে মালিক সংস্থা Meta, তাতে প্রতি বছর হুড়হুড় করে ব্যবহারকারীদের সংখ্যা উর্দ্ধমুখী হতেই থাকছে। তবে কথায় আছে 'অতি জনপ্রিয়তাও বিপদ ডেকে আনতে পারে'। WhatsApp -এর সাথে এমনি কিছু হচ্ছে এখন।
আসলে বর্তমানে এই অ্যাপ হ্যাকারদের জন্য স্ক্যামিং বা লোক ঠকানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। প্রায়শই নতুন নতুন পন্থা অবিলম্বনে প্রতারণা করা হচ্ছে WhatsApp ব্যবহারকারীদের সঙ্গে। এক্ষেত্রে কিছু সাইবার অপরাধী শুধুমাত্র টাকা চুরি করেই ক্ষান্ত থাকছে না, সাথে ব্যক্তিগত ডেটা হাতিয়ে নিয়ে রীতিমতো ব্ল্যাকমেইলও করছে। ফলে আপনারা যারা যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে WhatsApp ব্যবহার করে থাকেন, তবে সর্বদা সচেতন থাকুন এবং স্ক্যামারের ফাঁদে পা দেওয়ার থেকে বিরত থাকুন। এই প্রতিবেদনে আমরা ৫টি এমন WhatsApp স্ক্যাম প্রসঙ্গে আলোচনা করবো যার সম্পর্কে অবগত থাকলে আপনারা সুরক্ষিত থাকবেন।
এই ৫টি হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্যাম দ্বারা সর্বাধিক প্রভাবিত হয়েছে ব্যবহারকারীরা -
১. বন্ধু বা পরিবার নাম করে জরুরী মেসেজ:
বন্ধু বা পরিবারের তরফ থেকে কোনো আপৎকালীন মেসেজ এলে চিন্তিত হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন হোয়াটসঅ্যাপে এমন একটি স্ক্যাম চলছে, যেখানে আপনজনের নাম ভাঙিয়ে হ্যাকাররা আপনাদের থেকে মোটা টাকা হাতানোর চেষ্টা করবে। আরেকটু খুলে বলি বিষয়টা। হোয়াটসঅ্যাপে অজানা নম্বর থেকে মেসেজ পাঠিয়ে দাবি করা হচ্ছে যে, ব্যবহারকারীর বন্ধু বা পরিবারের বিপদ। পরিস্থিতি খুবই খারাপ বুঝিয়ে টাকা চাওয়া হবে। আবার ভিক্টিমের মনে যাতে সন্দেহ না দেখা দেয় তার জন্য কিছু অপরাধী আবার ডিপফেক ভিডিও এবং অডিও প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। তাই এই ধরনের কোনো মেসেজ এলে তা এড়িয়ে চলুন। দরকারে টাকা স্থানান্তর করার আগে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করুন এবং যেই মানুষটির নাম ভাঙিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করুন।
২. ভুয়ো QR কোড:
যদি কখনো আপনাদের কাছে অজানা নম্বর থেকে লটারি জিতেছেন বলে বা অনুদান চেয়ে মেসেজ করা হয় এবং সাথে QR কোডের ছবি পাঠিয়ে তা স্ক্যান করতে বলা হয় তবে বিশেষ সচেতন হয়ে যান। কেননা এগুলি হল স্ক্যামিং মেসেজ। QR কোড স্ক্যান করার পর আপনাদের একটি ফিশিং ওয়েবসাইটে রিডিরেক্ট করা হবে। যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হবে৷ যদি এই ফাঁদে পা দিয়ে দেন, তবে আপনাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মিনিটের মধ্যে খালি হয়ে যেতে পারে।
৩. ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি ছদ্মবেশে স্ক্যাম:
আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের তরফ থেকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য বা ক্রেডিট কার্ড আবেদন করার জন্য মোবাইলে মেসেজ বা ফোন আসে। তবে হালফিলে প্রায় অনুরূপ মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপেও আসছে। যদি এক্ষেত্রে পার্থক্য হল, এই ধরণের মেসেজ ব্যাঙ্ক নয় বরং স্ক্যামাররা পাঠাচ্ছে। এরকম কেলেঙ্কারিতে, সাইবার অপরাধীরা কোনো নামজাদা ফিন্যান্স সংস্থার প্রতিনিধি হওয়ার ভান করে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাঙ্কিং সুবিধা দেওয়ার নাম করে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে থাকে। আপনারা যদি প্রলোভিত হয়ে নিজ ব্যক্তিগত তথ্য বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP) শেয়ার করেন, তবে প্রতারিত হওয়ার থেকে কেউ আটকাতে পারবেন না। জানিয়ে রাখি, চাকরি দেওয়ার নাম করেও এই একই ধরণের স্ক্যামিং চালানো হচ্ছে এখন হোয়াটসঅ্যাপে।
৪. লোভনীয় উপহার:
হোয়াটসঅ্যাপে বহু দিন ধরে এমন একটি স্ক্যাম চলমান আছে, যেখানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, গাড়ি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি দামি উপহার জিতে নেওয়ার লোভ দেখিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য হস্তগত করা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে উক্ত মেসেজিং অ্যাপে এমন একটি মেসেজ পাঠানো হচ্ছে, যাতে প্রথমে উপহার দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তারপর এই উপহার নিজের নামে করার জন্য প্রদত্ত লিঙ্কে ক্লিক করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আপনারা যদি এইধরণের অজানা লিঙ্কে ক্লিক করেন তবে ফিশিং ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যারপর ডিভাইসে ম্যালিশিয়াস কোড সম্পাদন করে যাবতীয় ডেটার অ্যাক্সেস চুরি করে নেবে হ্যাকাররা। তাই ভুলেও এরূপ কোনো অফার দেখে প্রলুব্ধ হবেন না।
৫. অনুদান কেলেঙ্কারি:
এই ধরনের হোয়াটসঅ্যাপ কেলেঙ্কারিতে, হ্যাকাররা আপনাদের কাছে যেকোনো সৎ উদ্দেশ্য সাধনের নাম করে অনুদান দেওয়ার অনুরোধ করবে। যদি আপনি রাজি হয়ে যান, তবে একটি ফিশিং ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দেওয়া হবে। এধরণের ওয়েবসাইট দেখলে বৈধ মনে হলেও, আসলে কিন্তু ম্যালওয়ারের বাহক। তাই এরূপ মেসেজ এড়িয়ে চলুন এবং কোনো অজানা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। নতুবা জড়িয়ে পড়তে হবে প্রতারণার জালে।