- Home
- »
- অ্যাপ্লিকেশন »
- দিনে ২৫০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে ইলন...
দিনে ২৫০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে ইলন মাস্কের, Twitter কেনাই কি কাল হল?
Twitter-এর নিয়ন্ত্রণভার হাতে নেওয়ার পর থেকেই টেক দুনিয়ার খবরের শিরোনামে থাকছেন Tesla-র কর্ণধার ইলন মাস্ক (Elon Musk)।...Twitter-এর নিয়ন্ত্রণভার হাতে নেওয়ার পর থেকেই টেক দুনিয়ার খবরের শিরোনামে থাকছেন Tesla-র কর্ণধার ইলন মাস্ক (Elon Musk)। তবে হালফিলে বিশ্বের সবথেকে ধনবান এই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে এমন এক খবর প্রকাশ্যে এসেছে, যা শুনে রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছেন নেটিজেনরা। জানা গিয়েছে যে, মাস্কের ভাঁড়ার এক বড়োসড়ো ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে, যার জেরে তার সম্পত্তির পরিমাণ বেশ অনেকটাই কমে গিয়েছে। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ (Bloomberg)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে মাস্কের সম্পত্তিই সবথেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এক বছর আগে Tesla-র কর্ণধারের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩৪০ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু হালফিলে তা কমে হয়েছে ১৭০ বিলিয়ন ডলার! অর্থাৎ, বছরখানেকের মধ্যে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খুইয়েছেন মাস্ক, যা নিঃসন্দেহে এক চাঞ্চল্যকর খবর। শতাংশের বিচারে হিসাব করলে, ২০২২-এ ৩৭ শতাংশ সম্পত্তি কমেছে Tesla কর্তার, যার ফলে এ বছর প্রতিদিন প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে! সেক্ষেত্রে এই মুহূর্তে যে প্রশ্নটি প্রায় সবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটি হল - তাহলে কি বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির শিরোপা খোয়াতে চলেছেন মাস্ক?
তবে এর পাশাপাশি অন্য যে প্রশ্নটি সবার মাথায় আনাগোনা করছে, সেটি হল - ঠিক কী কারণে এই বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছেন মাস্ক? সেক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, চলতি বছরের গোড়া থেকেই ইলন মাস্ক টুইটার অধিগ্রহণের জন্য লড়াই করছেন। আর দীর্ঘদিনব্যাপী সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষমেশ গত মাসে ৪৪০০ কোটি ডলার খরচ করে টুইটারের রথের রশি অবশেষে নিজের হাতে নিয়ে নেন টেসলা কর্তা। জনপ্রিয় এই মাইক্রোব্লগিং সাইটটি অধিগ্রহণ করার পর থেকেই প্ল্যাটফর্মটিতে একাধিক পরিবর্তনে এনেছেন বিশ্বের অন্যতম এই ধনকুবের। সংস্থার খরচ কমানোর জন্য কর্মী ছাঁটাই থেকে শুরু করে দৈনিক কাজের সময় বাড়ানো সহ একাধিক কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু এর পরেও ঠিক কী কারণে মাস্ককে এই বিপুল লোকসানের বোঝা বইতে হচ্ছে? ব্লুমবার্গের এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, টেসলার বিভিন্ন মডেলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হাজার হাজার গাড়ি বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে, যার ধাক্কা সরাসরি গিয়ে লেগেছে মাস্কের গায়ে।
Tesla-র সাম্প্রতিক অবস্থা মোটেই ভালো নয়
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, টেসলার ৩০,০০০ মডেলে ঠিকমতো এয়ারব্যাগ কাজ করছে না, যার ফলে কোম্পানির শেয়ার কমতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, টেসলার শেয়ার প্রায় ৩% হ্রাস পেয়েছে, যা গত ২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফলে এখন পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে গত ১৭ মাসে টেসলা যা লাভ করেছিল, তার প্রায় সিংহভাগই খোয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কোম্পানিটি তার মার্কেট শেয়ারের অর্ধেকেরও বেশি খুইয়ে ফেলেছে; এবং বর্তমানে বাজারের যা অবস্থা, তাতে আগামী দিনে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Twitter-এ মন দিতে গিয়েই বড়োসড়ো ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন মাস্ক
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে, টুইটার কেনার পর থেকে এই মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটির প্রতি নিজের সমস্ত মনঃসংযোগ উৎসর্গ করে দিয়েছেন মাস্ক। এর ফলে তিনি তার নিজের কাজের সময়ও সপ্তাহে ৭০-৮০ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১২০ ঘণ্টা করে ফেলেছেন। উল্লেখ্য যে, টেসলা এবং টুইটার সহ মোট পাঁচটি কোম্পানির মালিক বিশ্বের অন্যতম এই ধনকুবের; কিন্তু টুইটারে চূড়ান্তভাবে মনোনিবেশ করার ফলে টেসলা সহ তার মালিকানাধীন অন্য সংস্থাগুলির কাজে তিনি হয়তো সেভাবে মনোনিবেশ করতে পারেননি, যার জেরেই মাস্ক এই বিপুল লোকসানের মুখোমুখি হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেও কি আদৌ Twitter-এর হাল ফেরাতে পারবেন ইলন মাস্ক?
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, সংস্থার খরচ কমাতে ইলন মাস্ক এখনও পর্যন্ত ৬০-৭০ শতাংশ Twitter কর্মীকে বরখাস্ত করেছেন এবং প্রায় ১,২০০ জন প্রকৌশলী স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। মাস্কের দাবি অনুযায়ী, চরম আর্থিক সঙ্কটে কার্যত ধুঁকছে Twitter। তাই এই চূড়ান্ত ক্ষতিকে সামাল দিয়ে সংস্থাকে লাভজনক বানাতেই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথ বেছে নিয়েছেন তিনি (তবে সংস্থার উন্নতির স্বার্থে এর মধ্যে স্বল্প কিছু সংখ্যক কর্মীকে পুনর্বহাল করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে)। যদিও দিনকয়েক আগে শোনা গিয়েছিল যে, আর কর্মী ছাঁটাই না করে এবার নাকি নতুন কর্মী নিয়োগ করবে Twitter; তবে সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এখনও পর্যন্ত নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, খরচ বাঁচাতে Tesla কর্তা সংস্থার বিদ্যমান কর্মীদের বেশ কিছু সুযোগসুবিধাতেও রাশ টেনেছেন। জানা গিয়েছে যে, এবার থেকে মধ্যাহ্নভোজের (lunch) জন্য কর্মীদের নিজস্ব গাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে, যা এতদিন পর্যন্ত Twitter কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেতেন কর্মচারীরা। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে সমস্ত ক্ষতিকে পুষিয়ে ব্যবসাকে দাঁড় করাতে ইলন মাস্ক আর কী কী পদক্ষেপ নেবেন, এখন সেটাই দেখার…