- Home
- »
- টেক গাইড »
- TWS Hack: বিপদের নাম ব্লুটুথ ইয়ারফোন,...
TWS Hack: বিপদের নাম ব্লুটুথ ইয়ারফোন, অন থাকলে হ্যাক হতে পারে ফোন, সুরক্ষিত থাকবেন কীভাবে?
বর্তমান ডিজিটাল জমানায় হাতে স্মার্টফোন আর কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন (কিংবা ইয়ারবাডস) খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। উন্নত...বর্তমান ডিজিটাল জমানায় হাতে স্মার্টফোন আর কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন (কিংবা ইয়ারবাডস) খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। উন্নত টেকনোলজির সৌজন্যে এগুলি খুব সহজেই ব্যবহার করা যায় এবং ভালো পরিষেবাও মেলে। তাই এখন ওয়্যারলেস গ্যাজেট ব্যবহারে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এখানেই যে বিপদ! বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হলেও ওয়্যারলেস গ্যাজেটের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে এখনও মানুষ সচেতন নয়, যে কারণে ইদানীংকালে বিভিন্ন ব্লুটুথ ইয়ারবাডস ও ইয়ারফোন হ্যাক হওয়ার ঘটনা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তাই আপনি যদি চলতি সময়ে এই ধরনের ওয়্যারলেস ডিভাইস ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে হ্যাকিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি অবশ্যই একবার খুব ভালো করে মন দিয়ে পড়ে নিন।
কীভাবে হ্যাক হয় ব্লুটুথ ইয়ারফোন?
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লুটুথ হ্যাকিং (Bluetooth hacking) বা ব্লুবাগিং (Bluebugging) বা ব্লুজ্যাকিং (Bluejacking) হল একটি হ্যাকিং প্রক্রিয়া, যেখানে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির দ্বারা ব্যবহৃত ওয়্যারলেস গ্যাজেটকে হাতিয়ার করে সেই ব্যক্তির স্মার্টফোন বা ল্যাপটপকে টার্গেট করে হ্যাকাররা। যেহেতু এই ধরনের ব্লুটুথ ডিভাইসগুলি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খুবই সংবেদনশীল হয়, তাই বিভিন্ন উপায়ে সেটিকে হ্যাক করে তার সাথে সংযুক্ত থাকা ফোন বা ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে দেয় সাইবার অপরাধীরা। আর ফোন বা ল্যাপটপে ক্ষতিকারক ভাইরাস ঢুকে পড়লে যে দুর্বৃত্তরা অতি অনায়াসে ইউজারদের ডিভাইসের সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস পেয়ে যায়, সেকথা তো আমাদের সকলেরই জানা। এবং এর ফলটা যে কী হয়, সে সম্পর্কে আর কাউকেই নতুন করে কিছু বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। তাই বিষয়টি সম্পর্কে অবশ্যই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
কীভাবে Bluebugging-এর শিকার হন ইউজাররা?
হ্যাকিংয়ের এই চমকপ্রদ কৌশলে হ্যাকাররা প্রথমে নির্দিষ্ট কোনো ইউজারের একটি ব্লুটুথ ইয়ারবাডস বা ইয়ারফোনকে টার্গেট করে। তারপর সেই ইয়ারফোন যখন ১০ মিটারের দূরত্বে আসে, তখন তারা সেটিকে কানেক্ট করে হ্যাক করার চেষ্টা করে। এর জন্য মূলত ব্রুট ফোর্স পেয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য হল কানেক্টিভিটি কোডটিকে ক্র্যাক করার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত পাসওয়ার্ড ট্রাই করে দেখা। আরও সহজে বললে, সম্ভাব্য বিভিন্ন পাসওয়ার্ড প্রয়োগ করে ডিভাইসটিকে হ্যাক করার অদম্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় স্ক্যামাররা। আর একবার কানেক্ট হয়ে গেলেই হ্যাকাররা সেই ব্যক্তির ফোনে/ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে ডিভাইসে মজুত থাকা সংবেদনশীল ডেটা, কল হিস্ট্রি, মেসেজ, কন্ট্যাক্টস, ইত্যাদির সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস পেয়ে যায়।
সবচেয়ে চিন্তার ব্যাপার হল, ব্লুটুথ ডিভাইসটিকে হ্যাক করলে সেটির সাথে কানেক্টেড ফোন কিংবা ল্যাপটপে মজুত থাকা ব্যাংকিং অ্যাপ থেকে টাকা ট্রান্সফারও করে ফেলতে পারে দুর্বৃত্তরা। এমনকি ডিভাইস থেকে সংশ্লিষ্ট ইউজারের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে তাকে ব্ল্যাকমেইলও করতে পারে। এক্ষেত্রে বলে রাখি, এই ধরনের ওয়্যারলেস ডিভাইসগুলিতে যেহেতু কল রেকর্ড করা যায়, তাই এগুলি হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে ইউজাররা যদি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করেন, তাহলে তারা যে-কোনো সময়ই সাইবার হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে চাইলে ব্যবহারকারীদেরকে নীচে উল্লিখিত নির্দেশকাগুলি অবশ্যই মেনে করে চলতে হবে।
কীভাবে Bluebugging-এর হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন?
▪️ইয়ারফোন বা TWS (True Wireless Stereo) ব্যবহার করা হয়ে গেলে সেটির ব্লুটুথ সবসময় অফ করে রাখুন।
▪️আপনার ডিভাইসের ব্লুটুথ অন আছে কি না, সেটা যদি অন্য কোনো ডিভাইসে ভিজিবল হয়, তাহলে ব্লুটুথ সেটিংসে গিয়ে সেটা অবিলম্বে টার্ন অফ করে দিন।
▪️হ্যাকিংয়ের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে নিজস্ব ডিভাইসগুলিতে নিয়মিত লেটেস্ট সিকিউরিটি আপডেট ইন্সটল করুন।
▪️ওপেন বা পাবলিক ওয়াই-ফাই (WiFi) ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। তাও একান্ত প্রয়োজনে যদি কোনোসময় পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে তারপর অবশ্যই নিজস্ব ডিভাইসটিকে রিবুট বা রিস্টার্ট করে নিন।
▪️কোনো অপরিচিত ডিভাইস থেকে প্রাপ্ত ব্লুটুথ পেয়ারিং (Bluetooth Pairing) রিকোয়েস্ট খবরদার অ্যাকসেপ্ট করবেন না।
▪️আপনার ব্লুটুথ ডিভাইসের নাম কখনো নিজের নামে রাখবেন না।
▪️সর্বদা নিজের ডিভাইসে একটি অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করুন। এর ফলে তাতে ম্যালওয়্যার আছে কি না, তা অতি অনায়াসে জেনে ফেলা যাবে। এর জন্য নিজের ডিভাইসগুলিকে নিয়মিত স্ক্যান করুন।
▪️আপনার ব্লুটুথের সাথে কোন কোন ডিভাইস কানেক্টেড রয়েছে, তা চেক করে নিন। এবং সেক্ষেত্রে যদি কোনো অবাঞ্ছিত ডিভাইসের সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে অবিলম্বে সেটিকে রিমুভ করে দিন।
▪️ব্লুটুথের মাধ্যমে সংবেদনশীল ডেটা শেয়ার বা ট্রান্সফার করা থেকে সর্বদা বিরত থাকুন।