ইচ্ছে মতো টেনে বড় করা যাবে ডিসপ্লে, ফিউচার স্মার্টফোনের ঝলক দেখালো LG
গত কয়েক বছরে মোবাইল ফোনের দুনিয়ায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এই ইলেকট্রনিক গ্যাজেটটি এখন আর শুধু ফোন কল করার মাধ্যম নয়,...গত কয়েক বছরে মোবাইল ফোনের দুনিয়ায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এই ইলেকট্রনিক গ্যাজেটটি এখন আর শুধু ফোন কল করার মাধ্যম নয়, বরঞ্চ অনলাইন কাজের প্রয়োজনে কিংবা অবসর সময় কাটানোর জন্য ডিজিটাল যুগের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। আজকাল প্রায় প্রতিটি মানুষের হাতেই এই জিনিসটির দেখা মেলে, এবং ইউজারদের বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রায়শই এই ডিভাইসটিতে হরেক রকমের পরিবর্তন আনছেন নির্মাতারা। প্রথম যখন চালু হয়েছিল, তখন মোবাইল ফোন মৌলিক কিছু ফিচার অফার করতো, কিন্তু এখন ছবিটা পুরোপুরিভাবে পাল্টে গিয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে গ্রাহকদের হাতে হাতে নজরকাড়া ডিজাইন এবং একগুচ্ছ কার্যকর ফিচারে ঠাসা বিভিন্ন রেঞ্জের স্মার্টফোনের দেখা মেলে।
তদুপরি, ইউজারদেরকে আকর্ষিত করতে বর্তমানে মার্কেটে একাধিক রোলেবল এবং ফোল্ডেবল ডিভাইসের আগমন ঘটেছে, যার প্রধান কান্ডারী হল স্যামসাং (Samsung)। ইউজারদের আকর্ষিত করার পাশাপাশি স্মার্টফোনে নিত্যনতুন পরিবর্তন এনে গ্রাহকদের চমকে দেওয়ার জন্য অহরহ পরিশ্রম করে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্টটি, যার ফলে আর অন্য কোনো ব্র্যান্ড ফোল্ডেবল এবং ফ্লিপ স্মার্টফোনের বাজারে সংস্থাটিকে এখনও পর্যন্ত টেক্কা দিতে পারেনি। আর এই নিত্যনতুন পরিবর্তনের সুবাদে ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের চেহারাটা ঠিক কীরকম হবে, সেই নিয়ে অনেকের মনেই নানা ধরনের প্রশ্নের উদ্রেক ঘটে। আগামী দিনে স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলি কোন নতুন টেকনোলজি এনে ইউজারদেরকে চমকে দেবে, সে সম্পর্কে জানতে অনেকের মনেই চরম আগ্রহ দেখা যায়। সেক্ষেত্রে এবার ভবিষ্যতের এমন এক স্মার্টফোনের ডিজাইন সামনে এসেছে, যা দেখে রীতিমতো তাজ্জব বনে গিয়েছেন নেটিজেনরা!
ভবিষ্যতে স্ট্রেচেবল ডিসপ্লেসহ স্মার্টফোন আনতে পারে LG
জনপ্রিয় টেক কোম্পানি এলজি (LG) জানিয়েছে যে, আগামী দিনে স্মার্টফোনে এমন ডিসপ্লের দেখা মিলবে, যেটিকে টেনে বাড়ানো যাবে। অর্থাৎ, অদূর ভবিষ্যতে স্মার্টফোনে থাকবে হাই-রেজোলিউশনের ডিসপ্লে, যেটি নমনীয় হওয়ায় ফোল্ড এবং টুইস্ট করার পাশাপাশি সেটিকে স্ট্রেচ করে (অর্থাৎ টেনে) ১২ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে ১৪ ইঞ্চি করে নেওয়া যাবে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, এর ফলে ডিসপ্লেটির বিন্দুমাত্রও ক্ষতি হবে না! কি, শুনে খুব অবাক লাগছে? তবে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব বলে মনে হলেও আগামী দিনে এরকম চমকপ্রদ টেকনোলজির মার্কেটে আগমন ঘটার বেশ সুনিশ্চিত ইঙ্গিত দিয়েছে এলজি, যার ফলে নেটিজেনদের চোখ রীতিমতো কপালে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, রেসিলিয়েন্ট ফিল্মের মাধ্যমে তৈরি হবে এলজির ফোনের এই ডিসপ্লে। সংস্থাটি এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছে, এই ডিসপ্লেতে মাইক্রো-এলইডি লাইট ব্যবহার করা হবে। এছাড়া, এতে লিনিয়ার ওয়্যার্ড সিস্টেমের পরিবর্তে এস-ফর্ম স্প্রিং ওয়্যার্ড সিস্টেম থাকবে। সত্যি সত্যিই যদি আগামী দিনে এলজি এরকম চমকপ্রদ জিনিস মার্কেটে আনতে পারে, তাহলে স্মার্টফোনের দুনিয়ায় সংস্থাটি যে এক যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হবে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।
স্মার্টফোন ছাড়া অন্যান্য একাধিক ক্ষেত্রে এই টেকনোলজি ব্যবহার করা যেতে পারে
এসবের পাশাপাশি সংস্থাটির তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, এই অত্যাশ্চর্য টেকনোলজির ব্যবহার স্কিনওয়্যার, পোশাক, আসবাবপত্র, অটোমোবাইল এবং এয়ারক্র্যাফটেও করা যেতে পারে। কোম্পানির দাবি অনুযায়ী, এই টেকনোলজি ব্যবহার করে লাইটওয়েট ডিজাইন অতি অনায়াসে তৈরি করা সম্ভব; তাই পোর্টেবল ডিভাইস নির্মাণের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে নির্মাতা সংস্থাগুলি। মূলত কোনো ডিভাইসের ওজন কম রাখতে এই টেকনোলজি ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে।
LG-র পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তারা আলোচ্য ডিভাইসটি তৈরি করার জন্য বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেক সংস্থার সাথে কাজ করছে। তবে আপাতত শুধুমাত্র এই প্রযুক্তির একটি ডেমোই সামনে এসেছে, এবং এখনও পর্যন্ত কোনো কমার্শিয়াল ডিভাইসে এই টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে LG-র কোনো স্মার্টফোন বা অন্য কোনো প্রোডাক্টে অতি অবশ্যই এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত বলে আশা করা যেতে পারে।