Motorola Edge 30 Ultra, Edge 30 Fusion ভারতে ২০০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সহ লঞ্চ হল, দাম দেখে নিন
Motorola তাদের 'লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ অফারিং' হিসাবে Motorola Edge 30 Ultra এবং Edge 30 Fusion স্মার্টফোন দুটিকে চলতি মাসের...Motorola তাদের 'লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ অফারিং' হিসাবে Motorola Edge 30 Ultra এবং Edge 30 Fusion স্মার্টফোন দুটিকে চলতি মাসের প্রথমার্ধে বিশ্বের একাধিক বাজারে উন্মোচন করেছিল। আর আজ অর্থাৎ ১৩ই সেপ্টম্বর সংস্থাটি অবশেষে Edge 30-সিরিজের এই নয়া সংযোজন-দ্বয়কে ভারতের বাজারে লঞ্চ করলো। ফিচারের কথা বললে, 'Ultra' মডেলটি হল বিশ্ব বাজারের প্রথম ২০০ মেগাপিক্সেল মুখ্য সেন্সরের স্মার্টফোন। এটি কোয়ালকমের লেটেস্ট স্ন্যাপড্রাগন ৮+ জেন ১ চিপসেটের সাথে এসেছে এবং এতে ১২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং টেকনোলজি সাপোর্ট করে, যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুত টার্বো-পাওয়ার (TurboPower) চার্জিং বলে সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে, Moto S30 Pro-এর রিব্র্যান্ডেড সংস্করণ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা Motorola Edge 30 Fusion - কার্ভড এজ সহ ১৪৪ হার্টজের pOLED ডিসপ্লে প্যানেল, কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮+ এসওসি, এবং ৫০ মেগাপিক্সেল মুখ্য লেন্স যুক্ত ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ সহ এসেছে। আর এটি ৬৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৪,৪০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি অফার করে। চলুন Motorola Edge 30 Ultra এবং Edge 30 Fusion স্মার্টফোন দুটির দাম, প্রাপ্যতা এবং বিশেষত্ব সম্পর্কে বিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
মোটোরোলা এজ ৩০ আল্ট্রা, এজ ৩০ ফিউশন -এর দাম ও লভ্যতা (Motorola Edge 30 Ultra, Edge 30 Fusion price & availability)
ভারতে মোটোরোলা এজ ৩০ আল্ট্রা স্মার্টফোনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৯,৯৯৯ টাকা। এই বিক্রয় মূল্য ফোনটির ৮ জিবি র্যাম+১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত একক বিকল্পের। এটি ইন্টারস্টেলার ব্ল্যাক এবং স্টারলাইট হোয়াইট কালার অপশনে কেনার জন্য উপলব্ধ হবে।
অফারের কথা বললে, মোটোরোলা তাদের এজ ৩০ আল্ট্রা ফ্ল্যাগশিপ ফোনকে 'ফ্লিপকার্ট বিগ বিলিয়ন ডেজ সেল ২০২২' (Flipkart Big Billion Days Sale 2022) চলাকালীন 'এক্সক্লুসিভ' লঞ্চ অফারের অংশ হিসাবে ৫৪,৯৯৯ টাকায় বিক্রি করবে বলে ঘোষণা করেছে। অন্যান্য অফারগুলির মধ্যে সামিল রয়েছে - জিও (Jio) -এর তরফ থেকে ১৪,৬৯৯ টাকার বেনিফিট এবং ১০০ টাকার ৪০টি রিচার্জ ভাউচার রূপে মোট ৪,০০০ টাকার ক্যাশব্যাক দেওয়া হবে৷ এছাড়া, পার্টনার অফার হিসাবে - Myntra, Zee5, OYO, Ixigo এবং Ferns & Petals থেকে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে ১০,৬৯৯ টাকার শপিং ভাউচার পাওয়া যাবে।
অন্যদিকে, মোটোরোলা এজ ৩০ ফিউশন স্মার্টফোনও ৮ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত একক ভ্যারিয়েন্টের সাথে ভারতের বাজারে এসেছে, যার দাম বরাদ্দ করা হয়েছে ৪২,৯৯৯ টাকা। এটিকে কসমিক গ্রে এবং সোলার গোল্ড কালার বিকল্পে পাওয়া যাবে।
টেক ব্র্যান্ডটি তাদের এই দ্বিতীয় নয়া স্মার্টফোনের সাথেও নানাবিধ অফার দেবে। যেমন, ফ্লিপকার্টের সেল লাইভ থাকাকালীন 'এক্সক্লুসিভ' লঞ্চ অফারের অংশ হিসাবে মোটোরোলা এজ ৩০ ফিউশন -কে ৩৯,৯৯৯ টাকায় কেনা যাবে বলে ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যান্য অফারের প্রসঙ্গে বললে, জিও (Jio) -এর তরফ থেকে ৭,৬৯৯ টাকার বেনিফিট দেওয়া হবে। আর, ১০০ টাকার ৪০টি রিচার্জ ভাউচার রূপে মোট ৪,০০০ টাকার ক্যাশব্যাকও অফার করবে টেলিকম সংস্থাটি৷ এছাড়া পূর্ববর্তী মডেলের ন্যায় এটির সাথেও, পার্টনার অফার হিসাবে - Myntra, Zee5, OYO, Ixigo এবং Ferns & Petals থেকে খরিদ্দারী করলে ৩,৬৯৯ টাকার ভাউচার হস্তগত করতে পারবেন গ্রাহকেরা।
উল্লেখিত দুটি মোটোরোলা স্মার্টফোনকেই ই-কমার্স সাইট ফ্লিপকার্টের (Flipkart) পাশাপাশি Reliance Digital সহ দেশের যাবতীয় শীর্ষস্থানীয় রিটেল স্টোরগুলিতে কেনার জন্য উপলব্ধ করা হবে।
মোটোরোলা এজ ৩০ আল্ট্রা -এর স্পেসিফিকেশন (Motorola Edge 30 Ultra Specifications)
ডুয়েল-সিমের (ন্যানো) মোটোরোলা এজ ৩০ আল্ট্রা, ১৪৪ হার্টজ উচ্চ রিফ্রেশ রেটের একটি ৬.৬৭ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস (১,০৮০ x ২,৪০০ পিক্সেল) pOLED কার্ভড ডিসপ্লে সহ এসেছে, যা ১,২৫০ নিট পিক ব্রাইটনেস, এইচডিআর ১০+ এবং DCI-P3 কালার গ্যামেট অফার করে। ফোনটির ফ্রন্ট এবং রিয়ার উভয় প্যানেলেই কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫ দ্বারা সুরক্ষিত। এতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ প্লাস জেন ১ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। স্টোরেজ হিসাবে এতে ১২ জিবি LPDDR5 র্যাম এবং ২৫৬ জিবি রম পাওয়া যাবে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১২ ভিত্তিক মাই ইউএক্স (My UX) কাস্টম স্কিন দ্বারা চালিত। এজ ৩০-সিরিজের এই 'আল্ট্রা' মডেলটি স্ন্যাপড্রাগন এলিট গেমিং ফিচার সাপোর্ট করে।
ফটোগ্রাফির জন্য, Motorola Edge 30 Ultra ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ আছে। যার মধ্যে প্রাইমারি সেন্সরটি - এফ/১.৯ অ্যাপারচার সহ ১/১.২২-ইঞ্চির ২০০ মেগাপিক্সেলের (০.৬৪ µm / মাইক্রোমিটার পিক্সেল আকার)। এই সেন্সরটি অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন (OIS) সাপোর্ট করে এবং ১৬ পিক্সেলকে একটি ২.৫৬ মাইক্রোমিটার আল্ট্রা পিক্সেলে একত্রিত করে, যা আরও বেশি আলো ক্যাপচার করে এবং ভাল আলোকিত ছবি সরবরাহ করে। এছাড়াও, এই ক্যামেরা ইউনিটের মধ্যে - এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ ৫০ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স রয়েছে, যা কোয়াড পিক্সেল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং এই সেন্সরে ১১৪ ডিগ্রি ফিল্ড-অফ-ভিউ ও ম্যাক্রো শট ক্যাপচার করার জন্য ম্যাক্রো ভিশন রয়েছে। এছাড়া ক্যামেরা সেটআপে এফ/১.৬ অ্যাপারচার সহ ১২ মেগাপিক্সেলের একটি টেলিফটো শুটারও মিলবে, যা ২x জুম অফার করে এবং পোর্ট্রেট শট ক্যাপচার করে। এই রিয়ার ক্যামেরা ইউনিটটি ৩০fps রেটে ৪কে (4K) রেজোলিউশনে ভিডিও ক্যাপচার করতে সক্ষম। এছাড়া, ডুয়েল ক্যাপচার, আল্ট্রা-রেস শ্যুটিং মোড এবং প্রো (ডব্লিউ/ লং এক্সপোজার) মোড-এর মতো একাধিক ফটোগ্রাফি ফিচারও সাপোর্ট করে। অন্যদিকে সেলফি ও ভিডিও কলের জন্য ডিভাইসে, এফ/২.২ অ্যাপারচার এবপং কোয়াড পিক্সেল প্রযুক্তি সমর্থিত একটি ৬০ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা বর্তমান।
আলোচ্য ফোনটির কানেক্টিভিটি অপশনের মধ্যে সামিল রয়েছে - 5G, 4G LTE, ওয়াই-ফাই ৬ই, ব্লুটুথ ভি৫.২, জিপিএস/এজিপিএস, এনএফসি, ডিসপ্লেপোর্ট ১.৪, এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট। সেন্সর হিসাবে এতে - প্রক্সিমিটি, অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট, অ্যাক্সেলেরোমিটার, জাইরোস্কোপ এবং কম্পাস সেন্সর অন্তর্ভুক্ত। নিরাপত্তার জন্য ডিভাইসে আন্ডার-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের পাশাপাশি ফেস আনলক এবং থিঙ্কশিল্ড (ThinkShield)-এর মতো ফিচারগুলিও মিলবে। তদুপরি এতে ডলবি অ্যাটমস সমর্থিত ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার, লিনিয়ার এক্স-অ্যাক্সিস ভাইব্রেশন এবং এজ লাইটস বিদ্যমান থাকছে৷ পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য, Motorola Edge 30 Ultra-এ ১২৫ ওয়াট টার্বোপাওয়ার (TurboPower) ওয়্যার্ড চার্জিং, ৫০ ওয়াট পর্যন্ত ওয়্যারলেস চার্জিং এবং ১০ ওয়াট ওয়্যারলেস পাওয়ার শেয়ারিং সহ ৪,৬১০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও, মোটোরোলার এই ফ্ল্যাগশিপ হ্যান্ডসেট ধুলো এবং জল প্রতিরোধের জন্য IP52 রেটিং প্রাপ্ত। এর পরিমাপ ১৬১.৭৬x৭৩.৫x৮.৩৯ মিমি এবং ওজন ১৯৮.৫ গ্রাম।
মোটোরোলা এজ ৩০ ফিউশন -এর স্পেসিফিকেশন (Motorola Edge 30 Fusion Specifications)
মোটোরোলা এজ ৩০ ফিউশন স্মার্টফোনে কার্ভড এজ সহ একটি ৬.৫৫ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস (১,০৮০x২,৪০০ পিক্সেল) pOLED ডিসপ্লে রয়েছে, যা ২০:৯ এসপেক্ট রেশিও, ৪০৯ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি, ১৪৪ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, ৩৬০ হার্টজ টাচ স্যাম্পলিং রেট, ১০-বিট কালার, DCI-P3 কালার গ্যামেট, ১,১০০ নিট পিক ব্রাইটনেস এবং এইচডিআর১০+ সাপোর্ট করে৷ এজ ৩০-সিরিজের এই 'ফিউশন' মডেলে একটি মেটাল ফ্রেম রয়েছে এবং এর ফ্রন্ট ও রিয়ার প্যানেল-দ্বয় গরিলা গ্লাস ৫ দ্বারা সুরক্ষিত। ডিভাইসটি কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ প্লাস প্রসেসর সহ এসেছে। এতে ৮ জিবি LPDDR5 র্যাম ও ১২৮ জিবি UFS 3.1 স্টোরেজ পাওয়া যাবে। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ১২ অপারেটিং সিস্টেমে রান করে। যদিও পরবর্তী সময়ে এটি আরও দুটি অর্থাৎ অ্যান্ড্রয়েড ১৩ এবং অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ওএস আপগ্রেড পাবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য, এই নতুন মোটোরোলা ফোনে আন্ডার-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এবং ফেস আনলক ফিচার মিলবে।
ছবি তোলার জন্য, Motorola Edge 30 Fusion ফোনের রিয়ার প্যানেলে ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ অবস্থিত। এগুলি হল - অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন (OIS) সহ ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা সেন্সর, ১৩ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স এবং ২ মেগাপিক্সেল ডেপ্থ সেন্সর। এই রিয়ার সেন্সরগুলি সর্বাধিক ৩০fps রেটে ৪কে (4K) আল্ট্রা-এইচডি ভিডিও রেকর্ডিং সাপোর্ট করে। আর সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য, ফোনটিতে ৩২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে।
কানেক্টিভিটির জন্য আলোচ্য হ্যান্ডসেটে - 5G, 4G LTE, ওয়াই-ফাই ৬ই ৮০২.১১ এএক্স, ব্লুটুথ ভি৫.২, জিপিএস, এনএফসি, ডুয়েল সিম স্লট এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট অন্তর্ভুক্ত। অডিও সিস্টেমের ক্ষেত্রে, এতে ডলবি অ্যাটমস টেকনোলজির সাপোর্ট সহ ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার বর্তমান। এছাড়া এতে রেডি ফর ফিচারের সাপোর্ট পাওয়া যাবে। আর পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য, Motorola Edge 30 Fusion -এ ৪,৪০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ৬৮ ওয়াট টার্বো-পাওয়ার ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। ফোনটি IP52 সার্টিফায়েড জল ও ধুলো প্রতিরোধী চ্যাসিসের সাথে এসেছে। এর পরিমাপ ১৫৮.৪৮ x ৭১.৯৯ x ৭.৪৫ মিমি এবং ওজন ১৭৫ গ্রাম।