Honor: টাচ-স্ক্রিনের দিন শেষ, ব্যাকফুটে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টও! এবার চোখের ইশারাতেই কাজ করবে ফোন

সময়ের সাথে মোবাইল হ্যান্ডসেটের আকার, ধরণ উভয়েই বদল এসেছে। প্রথম প্রথম মানুষ পরিচিত ছিলেন ক্যালকুলেটর সদৃশ ডিজাইন এবং ১৫টি বা তারও বেশি স্যুইচবিশিষ্ট মুঠোফোনের সাথে।…

সময়ের সাথে মোবাইল হ্যান্ডসেটের আকার, ধরণ উভয়েই বদল এসেছে। প্রথম প্রথম মানুষ পরিচিত ছিলেন ক্যালকুলেটর সদৃশ ডিজাইন এবং ১৫টি বা তারও বেশি স্যুইচবিশিষ্ট মুঠোফোনের সাথে। কিন্তু ২০০৭ সালে প্রথম আইফোন লঞ্চের সাথে সাথে ফোন থেকে কীপ্যাড অদৃশ্য হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে তাতে টাচস্ক্রিন ব্যবহার হতে থাকে। এরপর সেই টাচস্ক্রিনই আরও একটু রূপ বদল করে নিলে শুরু হয় স্মার্টফোনের জমানা। কিন্তু এখানেই বাজারের এক্সপেরিমেন্ট বা নতুন কিছু করার খিদে মিটছেনা। ইতিমধ্যে আমরা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিচার দেখেছি, শুনেছি ট্রান্সপারেন্ট ফোনের ওপর রিসার্চারদের কাজ করার কথা – আবার সম্প্রতি Motorola একটি বেন্ডেবল স্মার্টফোনের কনসেপ্ট নিয়ে এসেছে যা হাতের কব্জিতে ঘড়ির মতো ব্যবহার করা যাবে। তবে এখন চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি Honor এমন একটি নতুন AI ফিচার চালু করেছে, যা কেবল চোখের ইশারায় ফোন ইচ্ছেমতো কন্ট্রোল সুবিধা দেবে। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন, ফোনের স্ক্রিনে আঙুল ছোঁয়াতে হবেনা, বরঞ্চ অদূর ভবিষ্যতে চোখ দিয়েই তা ব্যবহার করা যাবে! Honor-এর এই বিশেষ প্রযুক্তিটি ‘ম্যাজিক ক্যাপসুল’ (Magic Capsule) নামে এসেছে এবং এটি আই-ট্র্যাকিংয়ের উপর ভিত্তি করে কাজ করবে।

ইউজারের চোখ দেখে ফোনই বুঝে নেবে প্রয়োজন

অনর জানিয়েছে যে, তাদের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ভিত্তিক আই-ট্র্যাকিং প্রযুক্তির মাধ্যমে ফোনটি নিজে থেকেই বুঝতে পারবে ইউজার স্ক্রিনের কোথায় দেখছেন। এক্ষেত্রে কোনো অ্যাপ খুলতে বা কোথাও ক্লিক করতে হলে সেই জায়গার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু কীভাবে? আসলে নতুন ম্যাজিক ক্যাপসুল প্রযুক্তি ইউজারের চোখের গতিবিধি ট্র্যাক করতে সেলফি ক্যামেরা ব্যবহার করবে এবং তিনি স্ক্রিনের কোথায় তাকিয়ে আছেন তা শনাক্ত করবে। যদিও ইউজারকে ঠিকমতো আই-মুভমেন্ট সেট করে রাখতে হবে, নাহলে তারা স্ক্রিনের দিকে তাকালেই তা কমান্ড হিসাবে গ্রহণ করবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অনর কোম্পানি ইতিমধ্যেই ভয়েস কমান্ড থেকে হ্যান্ড গেস্টচার (gesture) – সব কিছুই তার ফোনের অংশ করে ফেলেছে। কিন্তু তাদের এই নতুন সংযোজন আরও চমক সৃষ্টি করতে চলেছে।

প্রযুক্তি ব্র্যান্ডটি দাবি করেছে যে, তাদের ম্যাজিক ক্যাপসুল সহজেই শনাক্ত করবে ইউজার ২০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার দূরত্ব থেকে ফোনের স্ক্রিনের কোথায় দেখছেন। এক্ষেত্রে যেকোনো অ্যাপ বা হোম স্ক্রিন খুলতে হলে প্রায় ১.৮ সেকেন্ড দেখতে হবে। এর সাহায্যে, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা কোনো কারণে নিজের হাত স্ক্রিনে ব্যবহার করতে না পারলে কল রিসিভ করা, টেক্সট মেসেজ খোলা এমনকি টাইমার বন্ধ করার মতো সুবিধা পাবেন।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

ম্যাজিক ক্যাপসুল প্রযুক্তি আগামী দিনে প্রিমিয়াম স্মার্টফোনের একটি অংশ হয়ে উঠতে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনরের এই প্রযুক্তি সম্পর্কে মিশ্র মতামত রয়েছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে, এআইয়ের কারণে এটিকে স্মার্টফোনের অংশ করা সহজ হবে। তবে অন্যেরা ইউজার প্রাইভেসিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং দাবি করছেন যে, এই ফিচার দিয়ে ফোন ব্যবহার করার সময় ইউজার সর্বদা নজরদারিতে থাকবে এবং এতে তার মুখের ডেটা চুরি হতে পারে।