Samsung Galaxy A32 5G যেন আইফোন! রয়েছে 30000mAh ব্যাটারি, তাক লাগালো মডিফাই ভার্সন
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আমাদের কমবেশি সকলেরই সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু কথা বলাই নয়, ছবি তোলা থেকে শুরু...বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আমাদের কমবেশি সকলেরই সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু কথা বলাই নয়, ছবি তোলা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে বের করা, নানাবিধ জরুরী কাজ সারা, ইত্যাদি হরেক রকম প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে ইদানীংকালে এই জিনিসটিকে সারাদিন যাবৎ ব্যবহার করা হয়। আর এই অতি প্রয়োজনীয় জিনিসটির প্রাণভোমরা হল ব্যাটারি, যেটি ছাড়া স্মার্টফোন পুরোপুরিভাবে অচল। ফলে সর্বক্ষণের এই সঙ্গীটিকে এক মুহূর্তের জন্য কাছছাড়া করতে হলেই যেন আমাদের মনটা একেবারে ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। তবে চার্জ দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফোনের সঙ্গে আমাদের সকলেরই একটা দূরত্ব তৈরি হয়। সহজে বলতে গেলে, একাকীত্ব যে কী ভয়ঙ্কর জিনিস, তা চলতি সময়ে মোবাইল চার্জে বসালেই যেন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়!
এখন একবার ভাবুন তো, যদি এমন হতো যে, একবার ফোন চার্জ দিলেই বেশ কিছুদিন সেটিকে চালানো যেতো, তাহলে কি ভালোই না হতো! সেক্ষেত্রে আপনারা নিশ্চয়ই বলবেন যে, এমন অবাস্তব কথা ভেবে কী লাভ? এমনটা আবার হওয়া সম্ভব নাকি? তাহলে বলি, বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে অনেক অসম্ভবকেই মানুষ সম্ভব করে দেখাচ্ছে। আর সম্প্রতি স্যামসাং (Samsung)-এর একটি সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্টফোনে ৩০,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি লাগিয়ে তার কর্মক্ষমতা ছয়গুণ বাড়িয়ে এক অত্যাশ্চর্য ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছেন এক ব্যক্তি, যা দেখে রীতিমতো তাজ্জব বনে গিয়েছেন নেটিজেনরা। আসুন, এই আশ্চর্যজনক ঘটনাটির সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
Samsung Galaxy A32 5G ফোনে 30,000mAh ব্যাটারি লাগিয়ে সেটিকে পাওয়ারহাউস বানিয়ে ফেললেন এক ব্যক্তি
এমনিতে মার্কেটে যে সকল স্মার্টফোনগুলি উপলব্ধ রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশতেই ৫,০০০ কিংবা ৬,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারির দেখা মেলে। কিন্তু সম্প্রতি Downtown_Cranberry44 নামের এক রেডিট (Reddit) ব্যবহারকারী তার স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৩২ ৫জি (Samsung Galaxy A32 5G) ফোনে ৩০,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি ইনস্টল করে সকলকে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এখন নিশ্চয়ই আপনাদের মনে প্রশ্ন আসছে যে, কীভাবে এই চমকপ্রদ কাজ করলেন ওই ব্যক্তি? সেক্ষেত্রে বলি, এর জন্য তিনি তার অরিজিনাল ফোনটিতে মজুত থাকা ইন্টারনাল ব্যাটারিটিকে সরিয়ে পরিবর্তে সেখানে ছয়টি স্যামসাং ৫০ই সেল (Samsung 50E cells) যুক্ত করেন। এর ফলে হ্যান্ডসেটটির ব্যাটারি ক্যাপাসিটি পূর্বের তুলনায় ৬ গুণ বেড়ে যায়। স্বভাবতই এর সুবাদে ডিভাইসটির চার্জও যে দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, সেকথা নিশ্চয়ই আর আলাদা করে বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
ব্যাটারির কর্মক্ষমতার পাশাপাশি ফোনের ওজনও বেড়ে যায়
তবে ছয়টি স্যামসাং ৫০ই সেল সংযুক্ত হওয়ায় ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যাকআপ টাইম বাড়লেও খুব একটা লাভ কিন্তু হয়নি। কারণ এতগুলি ব্যাটারি একযোগে ইনস্টল হওয়ার ফলে ফোনটির ওজন বেড়ে ৪৫০ গ্রামেরও বেশি হয়ে যায়। স্পষ্টতই, পকেটে এত ভারী ফোন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো কার্যত অসম্ভব ব্যাপার। প্রসঙ্গত বলে রাখি, ছয়টি ব্যাটারি অ্যাড হওয়ার পরে পরিবর্তিত ফোনটিতে একাধিক পোর্ট উপলব্ধ হয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউএসবি-এ, ইউএসবি-সি, মাইক্রো ইউএসবি এবং আইফোন (iPhone)-এর বিভিন্ন মডেলে থাকা লাইটনিং পোর্ট৷
পরিবর্তিত ফোনের নকশা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, ৩০,০০০ এমএএইচ ব্যাটারিযুক্ত স্মার্টফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় নেয় ৭ ঘণ্টা, এবং একনাগাড়ে ব্যবহার করা হলে ডিভাইসটি দুই দিন পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ অফার করে। তবে চলনসই ব্যবহারের ক্ষেত্রে হ্যান্ডসেটটি কয়েক সপ্তাহের স্ট্যান্ডবাই টাইম প্রদান করতে সক্ষম। উল্লেখ্য, পরিবর্তিত ডিভাইসটি যেহেতু কোনো ব্র্যান্ডেড সংস্থা তৈরি করেনি, কেবল একজন সাধারণ মানুষের হাতের কারিগরিতে এটি গঠিত হয়েছে, তাই এটির ব্যাটারি পার্সেন্টেজ সঠিক ডেটা শো করে না; সব সময়ই ডিভাইসের স্ক্রিনে ১% ব্যাটারি চার্জ দেখা যায়। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ না করে কেবল নিজের হাতযশের দৌলতে এরকম একটা ডিভাইস বানিয়ে সেটিকে ব্যবহার করা চূড়ান্ত অনুচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাড়িতে কেউ ভুলেও যেন ফোনে এই ধরনের পরিবর্তনের চেষ্টা করবেন না
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আপাতদৃষ্টিতে গোটা ঘটনাটি পড়ে বেশ মজাদার বলে মনে হলেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখলে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এই ধরনের কাজ করা কিন্তু একেবারেই অনুচিত। কারণ স্মার্টফোন নির্মাতা সংস্থাগুলি অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফোনে একটি নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটির ব্যাটারি ইনস্টল করে। ফলে সাধারণ মানুষের সেটির সঙ্গে কারচুপি করা মোটেই উচিত নয়। এই ধরনের পরিবর্তন কেবলমাত্র কোনো সার্টিফায়েড বিশেষজ্ঞ কিংবা হ্যান্ডসেট নির্মাণকার্যের সঙ্গে যুক্ত কোনো ব্যক্তিই করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বাড়িতে বসে ফোনে এই ধরনের কারিগরি করলে শুধু যে শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনাই বাড়বে তা নয়, সেইসাথে ফোনটি আচমকা বিস্ফোরিতও হতে পারে, যার জেরে অকালে মানুষ প্রাণও হারাতে পারেন।
তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, নিজেদের মস্তিষ্কপ্রসূত সাধারণ বুদ্ধি অবলম্বন করে স্মার্টফোনে কোনো কারচুপি করা একেবারেই উচিত নয়। সেক্ষেত্রে একান্তই যাদের বেশি ক্যাপাসিটির ব্যাটারিযুক্ত ফোনের প্রয়োজন, তারা বাজার থেকে কোনো নামজাদা কোম্পানির এমন কোনো হ্যান্ডসেট কেনার কথা ভাবতে পারেন, যাতে ৬,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি রয়েছে। আর একথা আমাদের সকলেরই জানা যে, আজকাল প্রায় অনেক ফোনেই ফাস্ট চার্জিং টেকনোলজি উপলব্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে উক্ত দুটি জিনিসের মেলবন্ধন ঘটলেই একেবারে নিশ্চিন্তে তথা নির্বিঘ্নে দৈনন্দিন জীবনে যে-কোনো কাজে একদম সাবলীলভাবে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন ইউজাররা।