চীনা ব্র্যান্ড Xiaomi কে সরিয়ে ভারতীয় স্মার্টফোন মার্কেটের দখল নিল Samsung

Xiaomi দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে, এদেশের স্মার্টফোন বাজারের শেয়ার খোয়াতে শুরু করেছে চীনা ব্র্যান্ডটি।…

Xiaomi দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে, এদেশের স্মার্টফোন বাজারের শেয়ার খোয়াতে শুরু করেছে চীনা ব্র্যান্ডটি। আর এরফলে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি Samsung প্রিমিয়াম স্মার্টফোন সেগমেন্টে Xiaomi কে সরিয়ে উপরে উঠে এসেছে। মূলত লেই জুন (Lei Jun) পরিচালিত সংস্থাটির দুর্বল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির কারণেই Samsung তাদের লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছে।

সেক্ষেত্রে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার ভারতে দীর্ঘ ব্যবধানের পর কোনো সংস্থা Xiaomi -এর মুকুট ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হল। আর এর পিছনে সংস্থাটি নিজেই দায়ী। আসলে আমরা সকলেই জানি যে, শুরুতে সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্টফোন লঞ্চ করার উপর অধিক মনোনিবেশ করেছিল Xiaomi। আর এই স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করে দরুন উপকৃতও হয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু সময়ের সাথে মার্কেট এবং গ্রাহকদের মনোভাবনা উভয়ই পরিবর্তিত হয়েছে। যার দরুন এখন আর গ্রাহকেরা দামি স্মার্টফোন কিনতে পিছপা হন না। Samsung, দ্রুত পরিবর্তনশীল ভারতীয় বাজারের প্রকৃতি বুঝতে পেরে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী মিড-প্রিমিয়াম সেগমেন্টের অধীনে নতুন ফোন লঞ্চ করতে থাকে। কিন্তু Xiaomi এই পরিবর্তনকে উপলব্ধি না করায়, ১০,০০০-২০,০০০ টাকার মধ্যে অধিক ফোন বাজারে আনে। যার ফলস্বরূপ আজ ভারতের স্মার্টফোন মার্কেটের সিংহাসন ছাড়তে হল Xiaomi -কে।

ভারতের স্মার্টফোন বাজারের নতুন অধীশ্বর Samsung, দাবি করলো Counterpoint

হংকং ভিত্তিক মার্কেট রিসার্চার ফার্ম কাউন্টারপয়েন্ট (Counterpoint) তাদের একটি লেটেস্ট রিপোর্টে দাবি করেছে যে, শাওমিকে পরাজিত করে ভারতীয় স্মার্টফোন বাজারের সবচেয়ে বেশি মার্কেট শেয়ার দখল করে নিয়েছে স্যামসাং। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের চতুর্থ কোয়ার্টারে স্যামসাংয়ের মার্কেট শেয়ার ছিল প্রায় ২০%। এই একই সময়ে, শাওমি ১৮% মার্কেট শেয়ার পেয়েছিল। যার ফলে সংস্থাটি দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে যায়।

বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। এদেশে, ৬২৬ মিলিয়ন বা ৬২.৬ কোটিরও বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। ফলে এমন জনবহুল দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও শাওমির হঠাৎ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইলেক্ট্রনিক্স বাজারে গ্রাহকদের চাহিদা বুঝে এবং দ্রুত পরিবর্তিত ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে স্যামসাং, ট্রেন্ড বজায় রেখে যেমন মিড-রেঞ্জ এবং বাজেট সেগমেন্টের অধীনে Galaxy M-সিরিজ এবং F-সিরিজ স্মার্টফোন নিয়ে আসছে। পাশাপাশি, মিড-প্রিমিয়াম সেগমেন্টে নতুন A-সিরিজ হ্যান্ডসেট লঞ্চ করে বাজারের চাহিদাও পূরণ করছে।

যদিও শাওমির পোর্টফোলিওতে বিকল্পের অভাব আছে, এমনটা নয়। তবে সংস্থাটির পোর্টফোলিও অন্তর্গত বেশিরভাগ ডিভাইসই বাজেট নইলে হাই বাজেট সেগমেন্ট অন্তর্গত। আর দাম কম রাখার জন্য, ফিচারের উপরও কিছুটা প্রভাব পড়ছে। বিপরীতে, আজকাল মানুষ উন্নত ফিচার সমৃদ্ধ স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য ৩০,০০০ টাকা বা তারও বেশি খরচ করতেও দ্বিধা বোধ করছেন না৷ এই কারণেই স্যামসাং এবং ওয়ানপ্লাসের (OnePlus) মতো ব্র্যান্ডগুলি বর্তমানে শাওমির থেকে ভাল পারফর্ম করছে এবং অধিক ক্রেতা আকর্ষণে সফল হচ্ছে। যদিও চলতি সময়ে শাওমি প্রিমিয়াম রেঞ্জেও ফোন আনছে। তাই চীনা ব্র্যান্ডটি ফের পুরানো জায়গায় ফিরে আসতে পারবে কিনা তা জানতে পরের রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।