পকেটে পরমাণু বোমা নিয়ে ঘুরছেন আপনি! স্মার্টফোন কতটা বিপজ্জনক জানলে চমকে উঠবেন
গুরুজনরা প্রায়ই একটা কথা বলে থাকেন যে, কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালোনা। সেক্ষেত্রে এই চলতি ধারণা যেন স্মার্টফোন (Smartphone)...গুরুজনরা প্রায়ই একটা কথা বলে থাকেন যে, কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালোনা। সেক্ষেত্রে এই চলতি ধারণা যেন স্মার্টফোন (Smartphone) ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়েছে। আসলে আমাদের বর্তমান জীবনের সাথে এই খুদে ইলেকট্রনিক্সটি এতই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে যে, কার্যত এক মুহূর্তও এটি ছাড়া চলা যায়না। কাজে তো বটেই, তার পাশাপাশি বিনোদন পেতে, সময় কাটাতে এমনকি অকাজেও (মানে কোনো কাজ না থাকলেও) স্মার্টফোনই সঙ্গী; একটু খেয়াল করলে দেখা যাচ্ছে, ভারতসহ বিশ্বের অনেক জায়গার মানুষই মাদকের মতো মোবাইল আসক্তিতে ভুগছেন। আর এখানেই বেধেছে গোল! ঠিক নিউটনের তৃতীয় সূত্রের মতোই স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারই যাবতীয় সুবিধার পাশাপাশি বিপদ (পড়ুন অসুস্থতা) ডেকে আনছে। যেমন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে ঘটা পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের প্রভাব এখনও সেখানকার শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। আর ঠিক একইভাবে স্মার্টফোনের গুরুতর প্রভাব আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের অর্থাৎ শিশুদের জন্য মানসিক এবং শারীরিক উভয়ভাবেই ক্ষতি করছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় এই বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর এভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে স্মার্টফোন
ইন্ডিয়ান স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন অর্থাৎ ইশা (ISHA), স্বাস্থ্য সংসদের সহযোগিতায় ভারতের বিভিন্ন পরিবারে (বলতে গেলে ঘরে ঘরে) সমীক্ষা চালিয়েছে। মূলত দিল্লি এনসিআর (NCR) এবং জম্মু-কাশ্মীর এলাকা কভার করেছে এই সার্ভে। আর এই সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা গেছে, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে এইসব এলাকার শিশুদের মধ্যে শ্রবণশক্তির সমস্যা হচ্ছে – মানে বাড়ির সন্তানদের মধ্যে বধির বা কালা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও সাউন্ড ডিস-অর্ডারের সমস্যা সাধারণত সব বয়সের মানুষের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, তবে বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ রয়েছে।
সমস্যা পৌঁছেছে এই জায়গায়
– রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লিতে ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪২.৪ শতাংশ শ্রবণ সংক্রান্ত রোগের শিকার হচ্ছে।
– রাজধানীতে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৩১.১ শতাংশ শিশুর মধ্যেও এই একই ব্যাধি দেখা যাচ্ছে।
– শুধু তাই নয়, স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে ০ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ভাষাগত ব্যাধিও দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ৬৯% শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। অন্যদিকে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৪৮.২ শতাংশ শিশুরাও এই ব্যাধির থেকে রেহাই পাচ্ছেনা।
– আবার শুধু শিশুরা নয়, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ১১৭ শতাংশও ভয়েস ডিস-অর্ডার সমস্যা দেখা যাচ্ছে, যেখানে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ১১.৬ শতাংশ এর শিকার।
– কাশ্মীরে ৫৭.৬ শতাংশ মহিলা এবং ৪২.৪ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে যোগাযোগ সংক্রান্ত ব্যাধি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া সার্ভেতে ৬৬.৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৩.৬ শতাংশ মহিলার মধ্যে শ্রবণশক্তির সমস্যাও দেখা গেছে।