- Home
- »
- স্মার্টওয়াচ »
- হার্টে ছিল বড়োসড়ো ব্লকেজ, Apple...
হার্টে ছিল বড়োসড়ো ব্লকেজ, Apple Watch-এর আগাম সতর্কতায় ফের বাঁচল ইউজারের প্রাণ!
মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য Apple Watch (অ্যাপল ওয়াচ) প্রায়শই খবরের শিরোনামে থাকে। মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট হিসেবে...মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য Apple Watch (অ্যাপল ওয়াচ) প্রায়শই খবরের শিরোনামে থাকে। মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত না হলেও Apple-এর এই স্মার্টওয়াচটি এখন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা শনাক্ত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ টুল হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তিগত সাধারণ সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি একাধিক কার্যকর হেল্থ ট্র্যাকিং ফিচার (যেমন – ইসিজি ট্র্যাকার, এমার্জেন্সি কল ফিচার, ফল ডিটেকশন ফিচার ইত্যাদি) মজুত থাকায় Apple Watch বর্তমানে ‘লাইভ সেভার’ (life saver) ডিভাইসে পরিণত হয়েছে বললেও ভুল কিছু বলা হবে না। সেক্ষেত্রে এবার ম্যাজিশিয়ান এই স্মার্টওয়াচ ফের তার জাদুকরির আর একটা নমুনা দেখাল! আসলে সম্প্রতি এক রিপোর্ট থেকে গিয়েছে যে, Apple Watch-এর ইসিজি (ECG) সেন্সর, লন্ডনে বসবাসকারী এক ব্যক্তির হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আগাম সতর্কতা দিয়েছে; আর এতে সময়মতো তার জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। আসুন, এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটির সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দুদিনে প্রায় ১৩৮ বার বন্ধ হয়েছে হার্ট বিট!
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট (The Independent)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা ৫৪ বছর বয়সী ডেভিড লাস্ট (David Last)-কে তার হাতে থাকা অ্যাপল ওয়াচটি বহুদিন ধরে একাধিক সতর্কবার্তা পাঠিয়ে জানায় যে, তার হৃদস্পন্দনের হার প্রায় ৩,০০০ বার অত্যন্ত কম বলে লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই সতর্কতা মেলার পর তিনি অবিলম্বে হাসপাতালে যান এবং সেখানে তাকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, এই দুদিনের মধ্যেই ডেভিডের হৃদস্পন্দন প্রায় ১৩৮ বার বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীকালে পরীক্ষা করে জানা যায় যে, তার হৃদযন্ত্রে বড়ো ধরনের ব্লকেজ রয়েছে, যার জেরে প্রাণও হারাতে পারতেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ডেভিডের হৃদস্পন্দন ৩০ বিপিএমে নেমে এসেছিল, যেখানে একজন স্বাভাবিক মানুষের বিপিএম ৬০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকা উচিত।
বলে রাখি, প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে ইসিজি এবং তারপরে এমআরআই (MRI)-এর মতো পরীক্ষার পরে ডেভিডের হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার এবং তার ধীর গতির কারণটিও প্রকাশ্যে আসে। চিকিৎসকরা তাকে জানায় যে, তার হার্টে একটি বড়োসড়ো ব্লকেজ রয়েছে। এরপরে ডেভিডের হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি আগামী দিনে তিনি যাতে সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারেন, তার জন্য চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে তার শরীরে একটি পেসমেকার বসিয়ে দেন। চমকপ্রদভাবে, এত বড়োসড়ো শারীরিক গোলযোগ পরীক্ষামূলকভাবে ধরা পড়ার অনেক আগেই এর আগাম পূর্বাভাস দিয়ে দিয়েছিল অ্যাপল ওয়াচ, যার জেরেই এ যাত্রায় রক্ষা পেয়ে গেলেন ডেভিড।
Apple Watch না থাকলে হয়তো আর এই দুনিয়ায় থাকা হতো না, জানালেন ডেভিড
বিপদ কাটিয়ে ওঠার পর সংবাদমাধ্যমকে ডেভিড জানান যে, গত এপ্রিলে তার জন্মদিনে তিনি তার স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে ওই অ্যাপল ওয়াচটি পেয়েছিলেন। এবং তার পর থেকেই তিনি সেটি থেকে তার অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন সম্পর্কিত সতর্কতা পেতে শুরু করেন। এক্ষেত্রে গোটা ঘটনায় অ্যাপল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নিজের স্ত্রীকেও অশেষ ধন্যবাদ দিয়ে তিনি জানিয়েছেন যে, তার স্ত্রী যদি জন্মদিনে তাকে অ্যাপল ওয়াচটি উপহার না দিতেন তাহলে তিনি আজ আর হয়ত এই পৃথিবীতে থাকতেন না। সাথে তিনি একথাও বলেছেন যে, শুধুমাত্র চার্জ দেওয়ার সময় ছাড়া তিনি নিজের হাতঘড়িটিকে এরপর থেকে এক মুহূর্তের জন্যেও কখনও কাছছাড়া করবেন না।
ভবিষ্যতে আরও অনেক চমৎকার ঘটাবে Apple Watch
সবমিলিয়ে, আলোচ্য ঘটনাটি যে Apple Watch-এর হাজারো বিজয়গাথার পোর্টফোলিওতে আর একটি নতুন সংযোজন, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর ভবিষ্যতে এই ডিভাইসটি আরও অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়, কেননা iOS 16 (আইওএস ১৬) এবং WatchOS 9 (ওয়াচওএস ৯) আপডেটের মাধ্যমে এতে একাধিক নতুন ফিচার যুক্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হাতঘড়িটি স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস সম্পর্কিত ১৭টি প্যারামিটারের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখবে। হার্টের অবস্থা, ঘুম, মহিলাদের স্বাস্থ্য, এবং অন্যান্য ফিটনেস সম্পর্কিত বিষয় জানার জন্য এটি আগামী দিনে ইউজারদেরকে আরও অনেক ভালোভাবে সহায়তা করবে। তদুপরি, Apple সম্প্রতি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় Apple Heart Study (অ্যাপল হার্ট স্টাডি) তৈরি করার কথাও ঘোষণা করেছে। ফলে মার্কিনি প্রযুক্তি সংস্থাটির এই ডিভাইসটির সৌজন্যে টেক দুনিয়া যে ভবিষ্যতে এরকম আরও অনেক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী থাকবে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।