4G-র তুলনায় দশগুণ দ্রুত, ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বদলে যাবে, জুলাইয়ে স্পেকট্রাম নিলাম 5G-র
ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে 5G (৫জি) পরিষেবা উপলব্ধ...ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে 5G (৫জি) পরিষেবা উপলব্ধ হলেও, ভারতীয় নাগরিকরা এখনও পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্কের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছেন। তবে খুব শিগগিরই এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হবে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, কারণ গতকাল, বুধবার 5G স্পেকট্রামের নিলামের আয়োজন করার জন্য টেলিযোগাযোগ বিভাগকে (ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশনস বা DoT) অনুমতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম সংস্থাগুলি 5G স্পেকট্রামের নিলামের জন্য আর্জি জানিয়ে আসছে কেন্দ্রের কাছে, অবশেষে গত বুধবার সেই প্রস্তাবেই অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় সরকার। আর একবার স্পেকট্রাম নিলামের কাজে যখন সবুজ সংকেত মিলেছে, তখন 5G পরিষেবা হাতের মুঠোয় পেতে দেশের জনগণকে যে আর খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না, সেকথা বলাই বাহুল্য।
মন্ত্রিসভার তরফে জানানো হয়েছে যে, জুলাইয়ের শেষেই ৫জি স্পেকট্রামের নিলাম হবে। এক সরকারি বিবৃতি অনুসারে জানা গিয়েছে, ২০ বছরের বৈধতা সহ মোট ৭২০৯৭.৮৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম জুলাইয়ের শেষে নিলাম করা হবে। দেশের তিনটি সেরা বেসরকারি টেলিকম সংস্থা রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio), ভারতী এয়ারটেল (Bharati Airtel) ও ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea) এই নিলামে অংশগ্রহণ করবে। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, ৫জি স্পেকট্রামের নিলামে শুধুমাত্র টেলিকম সংস্থাগুলিই নয়, বড়ো বড়ো টেক কোম্পানিগুলিও অংশ নিতে পারবে।
এসবের পাশাপাশি গোটা দেশজুড়ে খুব তাড়াতাড়ি ৫জি পরিষেবা আনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তরফে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে যে, ৫জি স্পেকট্রামের টাকা একেবারে দিতে সমস্যা হলে ২০ টি সমান বার্ষিক কিস্তিতে প্রতি বছরের শুরুতে সেই টাকা দিতে পারবেন সফল দরদাতারা। অর্থাৎ সোজা কথায় বললে, ৫জি স্পেকট্রামের জন্য পুরো টাকা অগ্রিম না দিয়ে প্রতি বছরের শুরুতে ধাপে ধাপে সমানভাবে সেই টাকা দেওয়ার সুযোগ পাবে সংস্থাগুলি। এমনকি কোনো কোম্পানি চাইলে ১০ বছর পরে স্পেকট্রাম সারেন্ডারও করতে পারে, এবং সেক্ষেত্রে কিস্তির বাকি টাকা পরিশোধ করার ক্ষেত্রে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা থাকবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই 5G রোলআউটকে কেন্দ্র করে নানারকম জল্পনা-কল্পনা মার্কেটে ঘোরাফেরা করছে। তবে কেন্দ্রের এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মুখে যে চওড়া হাসি ফুটবে, সেকথা বলাই বাহুল্য। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে যে, মিড এবং হাই-ব্যান্ড স্পেকট্রাম ব্যবহার করে টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডাররা গোটা দেশে 5G নেটওয়ার্ক সার্ভিস চালু করবে। 4G (৪জি)-র তুলনায় ১০ গুণ বেশি গতিসম্পন্ন হবে 5G পরিষেবা। এছাড়া, অডিও ও ভিডিও কলের মানও আরও উন্নত হবে। তদুপরি, গেমিং সেক্টরেও আমূল পরিবর্তন ঘটাবে পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক। এককথায় বললে, ভারতে 5G সার্ভিস চালু হলে সাধারণ মানুষ যেমন উন্নত পরিষেবা পাবেন, তেমনই দেশের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও প্রভূত উন্নতিসাধন হবে।