4G স্মার্টফোনের থেকে আলাদা 5G স্মার্টফোন, এর কারণ কি শুধুই কানেক্টিভিটি?
পৃথিবীর বিবর্তনের ইতিহাসে মানব সভ্যতার প্রতিটি ধাপ এক-একটি যুগ হিসেবে (যেমন - ব্রোঞ্জ, তাম্র ইত্যাদি) ইতিহাসের পাতায়...পৃথিবীর বিবর্তনের ইতিহাসে মানব সভ্যতার প্রতিটি ধাপ এক-একটি যুগ হিসেবে (যেমন - ব্রোঞ্জ, তাম্র ইত্যাদি) ইতিহাসের পাতায় চিহ্নিত হয়েছে। তবে এখন যে সময়ে আমরা বসবাস করছি, সেটাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগ, কিংবা আরও সহজে স্মার্টফোনের যুগও বললেও খুব একটা ভুল কিছু বলা হবে না! এক্ষেত্রে যে জিনিসটি ছাড়া স্মার্টফোনের কথা আমরা ভাবতেই পারি না, তা হল কানেক্টিভিটি। বর্তমানে সবার হাতেই 4G (৪জি) কিংবা 5G (৫জি) ফোন ঘোরাফেরা করছে। বছরখানেক আগে 4G-র আগমন দেশে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। আর সম্প্রতি চতুর্দিকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, এই বছরের শেষেই 5G নেটওয়ার্ক রোলআউট হতে চলেছে। এদিকে পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক রোলআউট হওয়া মাত্রই যাতে তা উপভোগ করা যায়, তাই অনেকেই আগাম 5G ফোন কিনে রাখছেন। কিন্তু 4G আর 5G ফোনের মধ্যে তফাৎ কী? অর্থাৎ, একটি 5G ফোন কিনলে 4G ফোনের তুলনায় কী কী বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে? এই প্রশ্ন যদি আপনাদের মাথায় এসে থাকে, তাহলে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনে রয়েছে তার উত্তর। আসলে এখন আমরা যে সমস্ত কথা বলব তা পড়লে আপনি অনায়াসে বুঝে যাবেন যে, 5G স্মার্টফোনগুলি 4G কানেক্টিভিটিযুক্ত স্মার্টফোনের থেকে কেন আলাদা।
5G প্রযুক্তি কেন 4G-র থেকে আলাদা?
৫জি, ৬ গিগাহার্টজ নেটওয়ার্কে ১০০ এমবি/সেকেন্ড থেকে ৪০০ এমবি/সেকেন্ড এবং এমএমওয়েভ (mmWave) নেটওয়ার্কে প্রায় ১ গিগাবাইট/সেকেন্ড ডাউনলোড স্পিড সরবরাহ করে। অন্যদিকে, ৪জি সাধারণত ইউজারদের ১০ এমবি/সেকেন্ড থেকে ৫০ এমবি/সেকেন্ড ডাউনলোড স্পিড অফার করতে সক্ষম। ফলে উভয় নেটওয়ার্কের মধ্যে ফারাকটা ঠিক কতটা, তা নিশ্চয়ই আপনারা সকলেই স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছেন।
সেক্ষেত্রে দেশের আপামর জনগণ মূলত যে কারণে ৫জি-র প্রতীক্ষায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছেন, তা হল দুরন্ত ডাউনলোড স্পিড উপভোগ করা। একথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ৫জি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের রকেটের গতির ডাউনলোড স্পিড অফার করবে। শোনা যাচ্ছে যে এতে, চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই ডাউনলোড হবে একটা আস্ত সিনেমা! অর্থাৎ এককথায় বললে, আগামী নেটওয়ার্ক এমন সব অত্যাশ্চর্য ঘটনা ঘটাবে যা হয়তো আগে আপনি কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেননি। আপনি শুনলে অবাক হবেন যে, ৫জি-র মাধ্যমে কোনো বাফারিং ছাড়াই স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটারে ৪কে (4K), এমনকি ৮কে (8K) ভিডিও-ও স্ট্রিম করা যাবে।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, অন্তর্জাল বা ইন্টারনেটে এক বিন্দু থেকে অন্য-একটি বিন্দুতে নির্দিষ্ট তথ্যের পরিবহনে যে পরিমাণ সময় লাগে, তা ল্যাটেন্সি নামে পরিচিত। এই পরিমাপটি ইন্টারনেট-গতি নিরপেক্ষ। তবে গবেষণা বলছে, ৪জি নেটওয়ার্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ল্যাটেন্সি ৫০ এমএস (ms) হলে ৫জি-তে এই সময় মাত্র ১ এমএস (ms)-এ নেমে আসবে।
আবার, 4G-র তুলনায় 5G-র নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি অনেক বেশি হওয়ায় এটি ১০০ গুণ বেশি ট্র্যাফিক সাপোর্ট করতে পারে। এর অর্থ হল, 4G-র বদলে 5G নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে আরও অনেক বেশি মানুষ এবং ডিভাইসকে একসাথে কানেক্ট করা যাবে। সোজা কথায় বললে, 4G-র তুলনায় আরও উন্নত, কার্যকর তথা দুরন্ত পরিষেবা প্রদান করবে 5G। সুতরাং এই কানেক্টিভিটিযুক্ত হ্যান্ডসেটও যে এর পূর্বসূরির তুলনায় চমকপ্রদ পারফরম্যান্স অফার করবে – সে কথা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না!