AI Deepfake Scam: নতুন প্রতারণার ফাঁদ, ভিডিও কলে পরিচিত মানুষের রুপ ধারণ করে টাকা চাইছে জালিয়াতরা
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠছে। আর AI অর্থাৎ কৃত্রিম...আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠছে। আর AI অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে মানুষ ধীরে ধীরে প্রযুক্তিকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে ফেলছে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপকারী হলেও, সব ক্ষেত্রে নয়। কারণ এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে স্ক্যামাররা প্রতারণা করার নুতন কৌশল খুঁজে চলেছে। আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে কাজে লাগিয়ে তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থও চুরি করছে।
সম্প্রতি কেরালায় একটি এআই ডিপ ফেক স্ক্যামের (AI-deepfake scam) মামলা দায়ের করায় এই বিষয়টি সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে কেরালার এক ব্যক্তি এই প্রতারণার শিকার হয়ে চল্লিশ হাজার টাকা হারিয়েছেন। ডেকান হেরাল্ডের মতে, ভিক্টিম রাধাকৃষ্ণান কেরালার কোঝিকরের বাসিন্দা। ওই ব্যক্তি একটি অজানা নম্বর থেকে একটি ভিডিও কল পান। কলটি রিসিভ করার পর তিনি দেখেন ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিটি অন্ধপ্রদেশের এক প্রাক্তন সহকর্মীর মতন দেখতে। আর কল করে ওই ব্যক্তিটি রাধাকৃষ্ণানের আস্থা অর্জনের জন্য কয়েকজন বন্ধুর নামও উল্লেখ করেন।
এরপর ভিক্টিম সেটিকে একটি আসল কল ভেবে কথা চালিয়ে যান। কথা বলতে বলতে ওই ব্যক্তি হঠাৎ রাধাকৃষ্ণানকে ৪০ হাজার টাকা চেয়ে বসেন। এরপর বন্ধুকে সাহায্য করার জন্য ভুক্তভোগী অনলাইন টাকা ট্রান্সফার করে দেয়। তবে কিছুক্ষণ পর ওই একই ব্যক্তি আবার ৩৫ হাজার টাকা চায়, তখন ভিক্টিমের সন্দেহ হয় এবং তিনি ক্রস চেক করার জন্য প্রাক্তন সহকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পর তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারিত হয়ে গেছেন আর এই কলটি আসল কল নয়। এরপর তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে প্রতারণার অভিযোগ জানান।
অভিযোগের পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং মহারাষ্ট্রের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক-এর অ্যাকাউন্ট ট্র্যাক করা শুরু করলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ করে দেয়। কেরালা পুলিশের সাইবার সেলের মতে, কেরালাতে এই ধরনের প্রতারণার এটি প্রথম ঘটনা, যেখানে স্ক্যামাররা ভুয়ো ভিডিও কল করার জন্য এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। জানা যায় প্রতারকেরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছবি ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই তারা অন্যান্য বন্ধুদের নাম সহ বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করেছিল।
Artificial Intelligence বেসড ডিপ ফেক কল কি?
এআই ভিত্তিক ডিপ ফেক কল হল এক ধরনের স্ক্যাম, যা মানুষের নকল ভিডিও বা অডিও রেকর্ডিং তৈরি করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে থাকে। স্ক্যামাররা যে কোনো বিশ্বস্ত বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের অনুকরণ করে এই কলগুলি তৈরি করে প্রতারণা করতে পারে।
ফেসিয়াল রিন্যাকটমেন্ট (Facial Reenactment) নামের একটি ফিচার ব্যবহার করে এই ডিপ ফেক কল তৈরি করা হয়। এই ফিচারের মাধ্যমে কোনো ভিডিও বা অডিও রেকর্ডিং, একজন কৃত্রিম ব্যক্তির মুখের গতিবিধির সাথে যুক্ত করা হয়। এটি এতটাই নিখুঁত হয় যে, রেকর্ডিংটি বা ভিডিওটি আসল না নকল তা বলা খুব কঠিন হয়ে যায়।
যদিও স্ক্যামারদের কাছে এআই ভিত্তিক কল প্রতারণা করার পদ্ধতিটি নতুন, তবে এটি এরই মধ্যে সারা বিশ্বে স্ক্যামারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করে খুব সহজেই সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করা যায়।
Artificial Intelligence বেসড ডিপ ফেক কল থেকে নিরাপদ থাকবেন কি ভাবে?
যদিও এআই দ্বারা তৈরি করা ভিডিও কলগুলি আসল না নকল , তা বোঝা বেশ কঠিন । তবুও এই সকল প্রতারণা থেকে নিরাপদে থাকার কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।
ভিডিও কলের মাধ্যমে যদি কেউ বন্ধু বা পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে অর্থ দাবি করে তাহলে সেই ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হন এবং তাদের এমন কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করুন, যেগুলি কেবলমাত্র তারাই জানবে। যদি তারা সেগুলির সঠিক উত্তর দিতে পারে তাহলে বুঝতে পারবেন কলটি আসল নাকি ফেক।
আপনি চেনেন না বা বিশ্বাস করেন না এমন কোনো ব্যক্তির সাথে ভিডিও কলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না।
কেউ যদি ভিডিও কলে সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর বা ক্রেডিট কার্ড নম্বর জিজ্ঞাসা করে তাহলে এই ধরনের তথ্যগুলি তার সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
এছাড়াও কোন সন্দেহজনক কল দেখলে অবিলম্বে পুলিশকে রিপোর্ট করুন।