Android ফোন থাকলে সাবধান! আপনাকে ফতুর করতে জোকারের পর এবার গার্লফ্রেন্ড ‘হার্লে’-র আক্রমণ
Android স্মার্টফোনে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারের সমস্যা নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহারকারীরা এই ধরনের শব্দগুলির সঙ্গে...Android স্মার্টফোনে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারের সমস্যা নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহারকারীরা এই ধরনের শব্দগুলির সঙ্গে খুব ভালোভাবে পরিচিত হয়ে গিয়েছেন। বহু বছর ধরে Android স্মার্টফোনের চৌহদ্দিতে পা রেখেছে একাধিক কুখ্যাত ভাইরাস, যার মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ম্যালওয়্যারটি হল 'জোকার' (Joker)। Google Play Store-এর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও সেসবের কোনো তোয়াক্কা না করেই স্টোরটি থেকে কয়েক লক্ষ বার ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকে এই ম্যালওয়্যার। আর এই ধরনের ক্ষতিকারক অ্যাপগুলিকে একবার ইন্সটল করে ফেললেই Android স্মার্টফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঠুঁটো করে দিয়ে 'জোকার' সিস্টেমে রীতিমতো জাঁকিয়ে বসে; আর তার ফলটা যে কী হয়, সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই আর কাউকে নতুন করে কিছু বলার কোনো প্রয়োজন নেই। দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীকে কার্যত জেরবার করে দিয়েছে এই ম্যালওয়্যার। আর সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, Android স্মার্টফোন ইউজারদের কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ ফেলতে এবার মাঠে নেমেছে জোকারের গার্লফ্রেন্ড 'হার্লি' (Harly), যেটি জোকারের তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা!
কি, পড়ে নিশ্চয়ই একটু অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন, ম্যালওয়্যারের আবার গার্লফ্রেন্ড! আসলে ব্যাপারটা হল, ডিসি কমিকস ইউনিভার্স (DC Comics universe)-এ ব্যাটম্যান সিরিজের খলনায়ক 'জোকার' নামের একটি চরিত্র এবং তার বান্ধবীর নাম 'হার্লি কুইন' (Harley Quinn)। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই খলনায়ক চরিত্রটির বান্ধবীর নামানুসারে হালফিলে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে হানা দেওয়া নতুন ভাইরাসটির নামকরণ করা হয়েছে। মেকইউজঅফ (MakeUseOf)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি সময়ে 'হার্লি' নামে একটি ম্যালওয়্যার অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেমে প্রবেশ করেছে, এবং এটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ইনস্টল করা অ্যাপগুলির মাধ্যমে ইউজারদের ডিভাইসে প্রবেশ করে তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
হার্লি ম্যালওয়্যার ও জোকারের মধ্যে তফাত কী?
হার্লি ও জোকার - এই দুটি ম্যালওয়্যারের মধ্যে পার্থক্য হল, জোকার মূলত আসল কোনো অ্যাপের অনুরূপ একটি অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। এরপর ইউজাররা সেই ছদ্মবেশী ভুয়ো অ্যাপটিকে ইন্সটল করা মাত্রই জোকার তাদের ডিভাইসে ম্যালিশিয়াস কোড ডাউনলোড করে। অন্যদিকে, হার্লি ম্যালওয়্যার নিজের সাথেই ম্যালিশিয়াস কোড নিয়ে আসে। আর সবচেয়ে বড়ো কথা হল, এই ভাইরাসটিকে দূরবর্তী কোনো স্থান থেকে কন্ট্রোল করারও প্রয়োজন পড়ে না।
কীভাবে হার্লি ম্যালওয়্যার ইউজারদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে?
হার্লি ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীদের সম্পূর্ণ অজান্তেই তাদেরকে একাধিক পেইড সাবস্ক্রিপশন সার্ভিসে সাইন আপ করে দেয়। ম্যালওয়্যারটি মূলত এসএমএস বা ফোন কল ভেরিফিকেশনের সাহায্যে এই কাজ করে থাকে। ডিভাইসে প্রবেশ করা মাত্রই হার্লি একদম চুপিসারে ইউজারদেরকে বিভিন্ন সার্ভিসের প্রিমিয়াম ভার্সনে সাবস্ক্রাইব করে দেয়, যার সম্পর্কে ব্যবহারকারীরা বিন্দুমাত্রও কিছু টের পান না। এরপর ধীরে ধীরে ওই সার্ভিসগুলির জন্য প্রদেয় বিল পরিশোধ করতে করতে অচিরেই খালি হতে থাকে ইউজারদের অ্যাকাউন্ট। ফলে ডিভাইসে হার্লির অস্তিত্ব যে ব্যবহারকারীদেরকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তা নিশ্চয়ই আপনারা বেশ ভালোভাবেই আঁচ করতে পারছেন।
নিরাপদে থাকতে হলে কী করবেন?
ক্যাসপারস্কি (Kaspersky)-র মতে, ১৯০ টিরও বেশি Android অ্যাপ্লিকেশনে হার্লি ম্যালওয়্যারের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, এবং এই অ্যাপগুলি ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ বার ডাউনলোড করা হয়েছে। তাই এই ক্ষতিকারক ম্যালওয়্যারের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা ইউজারদের জন্য একান্ত আবশ্যক। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, Google Play Store থেকে যে-কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করুন। সেইসাথে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় সেটির রিভিউ এবং পূর্বে কতবার সেটিকে ডাউনলোড করা হয়েছে, সেগুলির উপর কড়া নজর রাখুন। যদি রিভিউ খারাপ থাকে এবং অ্যাপটির ডাউনলোডের সংখ্যা নেহাতই কম হয়, তাহলে অবশ্যই সেটিকে ডাউনলোড করা এড়িয়ে চলুন।