চীন থেকে ব্যবসা সরাতে মরিয়া Apple, বাড়ছে অন্য দেশের ওপর নির্ভরতা, ভারতের কতটা ফায়দা হবে?

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন কোম্পানিই ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাচ্ছে। এর আগে আমরা দেখেছি যে Samsung, Apple-এর মত কোম্পানি তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং, রিসার্চ সংক্রান্ত কাজকর্ম চীন…

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন কোম্পানিই ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাচ্ছে। এর আগে আমরা দেখেছি যে Samsung, Apple-এর মত কোম্পানি তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং, রিসার্চ সংক্রান্ত কাজকর্ম চীন থেকে আমাদের ভারতে স্থানান্তরিত করছে। অন্যদিকে বিশ্ববাজারে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের শিকারও হচ্ছে পড়শি দেশটি। এমত পরিস্থিতিতে প্রিমিয়াম ডিভাইস নির্মাতা Apple চীন থেকে তাদের ব্যবসা সরানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করছে বলেই তাদের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ দেখে মনে হচ্ছে – কারণ এখন মার্কিনি সংস্থাটি চীনের বাইরের কোম্পানিগুলির চুক্তি করার ওপর জোর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে Apple, ভিয়েতনাম ও ভারতের মত দেশগুলির ওপর স্থির নজর দিচ্ছে, যেখানে কারখানা স্থাপন করা সস্তা এবং যেখানে ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি কম।

খুব শীঘ্রই ভিয়েতনামে চালু হবে Apple-এর প্ল্যান্ট

বলে রাখি, অ্যাপল ম্যাকবুক (MacBook)-এর প্রধান নির্মাতা তথা ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি কোয়ান্টা কম্পিউটার (Quanta Computer Inc.), ভিয়েতনামে তাদের প্রথম প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য এই মাসে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কোয়ান্টার ডিরেক্টর সিটি হুয়াংয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কারখানাটি চালু করতে চায়। এদিকে NikkeiAsia.com ওয়েবসাইটের একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, হালফিলে ভিয়েতনামে বিদেশী বিনিয়োগ (পড়ুন FDI) আবারও স্থিতিশীল গতিতে বেড়েছে। এর আগে মূলত জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মত দেশের কোম্পানিগুলি এই দেশে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করলেও, করোনা মহামারীর সময়ে এই ধারা ব্যাহত হয়। কিন্তু চলতি ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে ভিয়েতনামে তাইওয়ানের কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এক্ষেত্রে উত্তর ভিয়েতনাম, অ্যাপলের জন্য পাখির চোখ হয়ে উঠেছে বলে জাপানের এক গবেষক অভিমত প্রকাশ করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, কোয়ান্টা কোম্পানির ভিয়েতনামে প্ল্যান্ট খোলার সিদ্ধান্ত চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে চাওয়ার ভাবনারই একটি সুনির্দিষ্ট ফলাফল। আর, চীন থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং সরিয়ে নেওয়ার এই পরিকল্পনা আজকের নয়, বহু বছর পুরনো। কারণ চীনে শ্রমিক খরচ এখন আর আগের মত সস্তা নয়; এর জেরে অ্যাপল প্রোডাক্টের দাম বেড়েছে। এদিকে বিগত কয়েক মাসে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বেড়েছে প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিরোধও, যার জেরে অ্যাপলের চীনের থেকে মুখ ফেরানো বলতে গেলে অবশ্যম্ভাবী বিষয় হতে দাঁড়িয়েছে।

ভারতেও বাড়ছে Apple-এর বিনিয়োগ

যেমনটা শুরুতেই বলেছি, এই দুই-তিন বছরে ভারতে অ্যাপলের ব্যবসা বেশ প্রসারিত হয়েছে; এখন এদেশে সংস্থার তীব্র বৃদ্ধি ঘটেছে। সম্প্রতি অ্যাপলের পার্টনার ফক্সকন (Foxconn) চেন্নাইতে iPhone 14S মডেলের জন্য একটি অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। এছাড়াও, এই কোম্পানিটি কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানায় তাদের প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে ট্রেন্ডফোর্স অনুমান করছে যে, ২০২৮ সালের মধ্যে থেকে ৩০-৩৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন চীনের বাইরেই হবে।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন