আর মানুষে তৈরি করবে না iPhone, অটোমেটেড প্লান্ট আনছে Apple
Apple তাদের iPhone তৈরির জন্য চীন ও ভারত জুড়ে একাধিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করেছে। যা লক্ষাধিক মানুষের...Apple তাদের iPhone তৈরির জন্য চীন ও ভারত জুড়ে একাধিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করেছে। যা লক্ষাধিক মানুষের রুজি-রোজগারের উৎস হয়ে উঠেছে। কিন্তু এখন যে খবর সামনে এসেছে, তা একপ্রকার কর্মী ছাঁটায়েরই ইঙ্গিত দিচ্ছে! আসলে জানা গেছে, টেক জায়ান্টটি তাদের ভেন্ডার ও ম্যানুফ্যাকচারিং পার্টনারদের iPhone তৈরির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ অটোমেশন প্রক্রিয়া গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে, iPhone -এর ফাইনাল অ্যাসেম্বলি কারখানায় কর্মীদের সংখ্যাও কমাতে বলছে টিম কুকের সংস্থাটি। যদিও এই পরিবর্তন তাৎক্ষণিকভাবে ঘটানো হবে না। 'অটোমেট প্লান্ট' তৈরীতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। তাসত্ত্বেও এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই Apple অধীনস্ত কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
অটোমেট প্লান্ট নির্মাণ করবে Apple
বর্তমানে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্ষেত্রে অটোমেশন (Automation) একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে। তবে এতদিন অ্যাপল স্বয়ংক্রিয় মেশিন ভিত্তিক প্রোডাকশনের তুলনায় প্রথাগত প্রক্রিয়ায় ডিভাইস অ্যাসেম্বলি করতে অধিক পছন্দ করতো। সর্বোপরি অটোমেশন সেটআপ যেমন ব্যয়বহুল, তেমনি তা রক্ষনাবেক্ষনের সাথেও মোটা টাকার খরচ জড়িত থাকে বলে এই বিকল্প নিয়ে এতো দিন ভাবেনি অ্যাপল।
তবে বিগত কয়েক মাসে চীন ভিত্তিক কারখানাকে কেন্দ্র করে হওয়া শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি ভূমিকম্পের জন্য অ্যাপলের আইফোন প্রোডাকশন ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। একই সাথে, পড়শী দেশের সরকারের সাথে মতবিভেদ যথেষ্টই সমস্যার কারণ হয়ে উঠেছিল সংস্থাটির জন্য। এই সকল কারণে আইফোন অ্যাসম্বলের কাজ প্রভাবিত হওয়াতেই হয়তো টিম কুক অটোমেট প্লান্ট নির্মাণ করার প্রয়োজন অনুভব করেছেন।
এদিকে আইফোন তৈরির ক্ষেত্রে অটোমেশন প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হলে স্বাভাবিকভাবেই কর্মী ছাঁটাই করা হবে। এমনটা হলে ফক্সকনের মতো অ্যাপলের সমস্ত ম্যানুফ্যাকচারিং পার্টনারের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কেননা চীনে অটোমেশন প্রক্রিয়ার ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। যেকারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় চীনে দ্রুততার সাথে অটোমেট প্লান্ট নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এমনটা হলে অ্যাপলের কাছে ম্যানুফ্যাকচারিং পার্টনারদের প্রয়োজনীয়তা কমতে থাকবে। আর সংস্থাগুলির মুনাফাও নিম্নমুখী হয়ে যাবে।
তবে অ্যাপল যে স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে তাদের আইফোন উৎপাদন করে থাকে, তার সাথে সামঞ্জস্য করে অটোমেশন সেটআপ ইনস্টল করতে কিছুটা বেশি সময় লাগবে বলেই মনে হচ্ছে। জানিয়ে রাখি, আইফোন ১৫ (iPhone 15) অ্যাসেম্বলের কাজ আংশিক অটোমেটেড ছিল। কিন্তু আপকামিং আইফোন ১৬ (iPhone 16) -এর জন্য এই প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। আসলে বিশ্লেষক টিম - এই প্রক্রিয়ায় "ডিভাইস অ্যাসেম্বল করা হলে সিস্টেমে ত্রুটি থাকার উচ্চ সম্ভাবনা আছে" মতামত দেওয়ায় টেক জায়ান্টটি কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
অ্যাপল প্রাথমিক ভাবে চীনে অটোমেট প্লান্ট নির্মাণ করার পরিকল্পনায় আছে। পরবর্তীতে ভিয়েতনাম এবং ভারতেও অটোমেশন সেটআপ যুক্ত কারখানা স্থাপন করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রোডাকশন রেট বাড়াতে এই কৌশল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে হচ্ছে।