শারীরিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ইউজারদের জন্য ডিভাইসে একাধিক অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার নিয়ে আসতে চলেছে Apple
বর্তমানে দ্রুতগতির যুগে নিজ ব্যতীত অন্য কারোর দিকেই এখন আর মানুষের নজর যায় না। নিজের কাজটা মিটে গেলে কমবেশি সকলেই...বর্তমানে দ্রুতগতির যুগে নিজ ব্যতীত অন্য কারোর দিকেই এখন আর মানুষের নজর যায় না। নিজের কাজটা মিটে গেলে কমবেশি সকলেই নিশ্চিন্ত হয়ে যান, আশেপাশে কেউ কোনো বিপদে রয়েছে কিংবা কারোর কোনো সাহায্য লাগবে কি না তা দেখার সময় আর কারোর কাছেই নেই। দুনিয়ার এমন কঠোর পরিস্থিতিতে দৃষ্টিশক্তিহীন অথবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত (বিশেষত যাদের হাত-পা কাজ করে না) মানুষদের দিন গুজরান করা দিন কে দিন ভীষণই কঠিন হয়ে উঠছে। তাই এইসব মানুষগুলির কথা মাথায় রেখে এবার টেক জায়েন্ট Apple (অ্যাপল) নিয়ে আসতে চলেছে একগুচ্ছ নতুন অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার। আসুন, এই ফিচারগুলির সম্পর্কে গুটিকয়েক কথা জেনে নেওয়া যাক।
আসন্ন অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচারগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হল 'Door Detection' (ডোর ডিটেকশন)। এই ফিচারটি ব্যবহারকারীদের গন্তব্যস্থলে যেতে সহায়তা করবে এবং দরজার সামনে পৌঁছোনো মাত্রই হার্ডওয়্যার এবং মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে সেটিকে খোলার পদ্ধতি (অর্থাৎ ধাক্কা দিয়ে, বা টেনে, কিংবা নব ঘুরিয়ে) জানতেও সাহায্য করবে। যে সকল ডিভাইসগুলিতে এই ফিচারটি আসতে চলেছে, তার মধ্যে রয়েছে iPhone 13 Pro, iPhone 13 Pro Max, iPhone 12 Pro, iPhone 12 Pro Max, iPad Pro 11-inch 2020, iPad Pro 11-inch 2021, iPad Pro 12.9-inch 2020 এবং iPad Pro 12.9-inch 2021। এই সকল ডিভাইসগুলিতে প্রি-ইন্সটল থাকা Magnifier (ম্যাগনিফায়ার) অ্যাপে এই ফিচারটি উপলব্ধ হবে।
অ্যাপলের তরফে জানা গিয়েছে যে, ডোর ডিটেকশন ফিচারের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ (compatible) ডিভাইসের হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার উভয়েরই প্রয়োজন হবে, যাতে পথে আসা জিনিসগুলির পাশাপাশি দরজা খোলার পদ্ধতিটি সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়। আর এর জন্য এই ফিচারটি লিডার (LiDAR), ক্যামেরা, এবং অন-ডিভাইস মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করবে। তদুপরি, এই ফিচারটি দরজার আশেপাশে থাকা কোনো সাইন বা সিম্বল চিহ্নিত করার পাশাপাশি রুম নাম্বারও নির্ভুলভাবে ডিটেক্ট করে ইউজারদের সঠিক জায়গায় পৌঁছোতে সক্ষম করে তুলবে।
এর পাশাপাশি অ্যাপল ম্যাপস (Apple Maps)-এও আসছে নতুন ফিচার। জানা গিয়েছে যে, অ্যাপল ম্যাপসে সাউন্ড এবং হ্যাপটিক ফিডব্যাক অ্যাড হতে চলেছে, যাতে সেটি ইউজারদেরকে যাত্রাপথের শুরু (স্টার্টিং পয়েন্ট) এবং শেষ অবস্থানটি (ফিনিশ পয়েন্ট) সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে। এই অ্যাপে এখন ভয়েসওভার (VoiceOver)-এর পাশাপাশি ভাইব্রেশনও হবে, যা ইউজারদের অ্যালার্ট করার সাথে সাথে তাদের ব্যবহারিক অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে তুলবে। এর পাশাপাশি গুগল (Google)-এর লাইভ ক্যাপশনস (Live Captions)-এর মতো অ্যাপলও আইফোন (iPhone), আইপ্যাড (iPad) এবং ম্যাক (Mac) ডিভাইসগুলিতে লাইভ ক্যাপশন অ্যাড করতে চলেছে, যা শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে। এই সুবিধা প্রাথমিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ব্যবহারকারীদের জন্য ইংরেজিতে উপলব্ধ হবে।
এছাড়া, Apple Watch (অ্যাপল ওয়াচ)-এও বেশ কিছু অতিরিক্ত অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার আসতে চলেছে। অ্যাপল জানিয়েছে যে, এবার Apple Watch Mirroring (অ্যাপল ওয়াচ মিররিং) ফিচারের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা তাদের অ্যাপল ওয়াচ রিমোটলি ব্যবহার করতে পারবেন। আবার, Quick Actions (কুইক অ্যাকশনস) ফিচারের সৌজন্যে ব্যবহারকারীরা ডাবল-পিঞ্চ জেশ্চারের মাধ্যমে কল ম্যানেজ করতে, নোটিফিকেশন বাতিল করতে, ফটো তুলতে, এবং প্লেব্যাক কন্ট্রোল করতে সক্ষম হবেন। তবে এর জন্য AssistiveTouch অবশ্যই টার্ন অন করা থাকতে হবে।