বাজারে ঠেলা দাম! অনলাইনে 49 টাকায় 48টি ডিম কিনতে গিয়ে 48000 টাকা খোয়ালেন মহিলা

বাজারে গিয়ে দরদাম করার ঐতিহ্য ভুলে, গোটা দেশের মতো বাঙালিও এখন অনলাইনে কেনাকাটার অভ্যেস করে ফেলছে। ইলেকট্রনিক্স থেকে...
Anwesha Nandi 27 Feb 2024 7:36 AM IST

বাজারে গিয়ে দরদাম করার ঐতিহ্য ভুলে, গোটা দেশের মতো বাঙালিও এখন অনলাইনে কেনাকাটার অভ্যেস করে ফেলছে। ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে খাবার-মুদিখানার জিনিস, বিউটি প্রোডাক্ট, পোশাক – প্রয়োজনের জিনিস যাইহোক না কেন, বাড়ি বসে ফোনের কয়েক ক্লিকে তা হাতে পেতে একাংশেরই এখন ভরসার জায়গা অনলাইন শপিং। তাছাড়া এই ধরণের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিতে প্রায়শই আকর্ষণীয় অফার মেলে, চলে সেলও। ফলত এইসব অফার কাজে লাগিয়ে টাকা বাঁচানোর সুযোগ ছাড়তে চাননা কেউই। কিন্তু প্রত্যেক জিনিসেরই ভালো, খারাপ দু'রকম ফলাফল আছে, নিউটন সাহেবও সেই কথাই বলে গেছেন। বাস্তবে, সাধারণ মানুষের অনলাইন শপিংয়ের ওপর এই নির্ভরশীলতার কারণে গোটা ভারতে প্রতারণার ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, মাথাব্যথার আরেক নাম এখন অনলাইন স্ক্যাম। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে, যা জানলে আপনি একইসাথে হাসবেন আবার অবাকও হবেন!

অনলাইনে ডিমের অফার! লোভে পড়ে পস্তাচ্ছেন বেঙ্গালুরুর মহিলা

রিপোর্ট অনুযায়ী, হালফিলে বেঙ্গালুরুর বসন্ত নগরের এক মহিলা অনলাইনে দারুণ সস্তা অফার দেখে ডিম কেনার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেই চক্করে তিনি খুইয়ে ফেলেন হাজার হাজার টাকা। কীভাবে? গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি ওই মহিলা অনলাইনে বিভিন্ন জিনিসের দাম-অফার ঘেঁটে দেখেছিলেন। ওই সময় ডিমের ওপর একটি লোভনীয় অফারের বিজ্ঞাপন তাঁর নজর আসে। তিনি দেখেন যে পুরো ৪৮টি অর্থাৎ চার ডজন ডিম মাত্র ৪৯ টাকায় কেনার সুযোগ মিলছে। যেহেতু বাজারে বর্তমানে ডিমের দাম অনেকটাই বেশি – গড়ে প্রায় ৭ টাকা, তাই হিসেব অনুযায়ী ৪৮টি ডিমের দাম ৩০০ টাকারও বেশি হয়। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই লোভ সামলাতে না পেরে টাকা বাঁচিয়ে পেটপুজো সারার উদ্দেশ্যে, বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন বেঙ্গালুরুবাসিনী। ব্যস, এরপরেই বাঁধে গণ্ডগোল।

পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানিয়েছেন যে, তিনি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতেই একটি ওয়েব পেজ খোলে যেখানে মুরগি প্রতিপালন, ডিম সংগ্রহ ইত্যাদি বিষয়ে অনেক তথ্য ছিল। আর পেজের নিচে ছিল ৪৯ টাকায় ৪৮টি ডিম কেনার অফার। সেই অফারে আবার ক্লিক করতেই আরও একটি নতুন পেজ খোলে, সেখানে ডিম সংক্রান্ত কিছু তথ্যের পাশাপাশি পেমেন্টের অপশন দেখা যায়। ওই অপশন অনুযায়ী, মহিলাটি টাকা মেটানোর জন্য নিজের ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেন এবং অর্ডার প্লেস করার চেষ্টা করেন। সেখানে তাঁর থেকে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, CVV নম্বর ইত্যাদি চাওয়া হয়। সেইসব তথ্য দিয়ে টাকার পরিমাণ লিখে ক্লিক করতেই ফোনে একটি ওটিপি (OTP) মেসেজ আসে।

কিন্তু, আশ্চর্যের ব্যাপার এটাই যে ওটিপি এন্টার করার আগেই মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮,১৯৯ টাকা এক লহমায় গায়েব হয়ে যায়। সাথে সাথেই ব্যাঙ্ক থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে এবং এই ট্রানজাকশন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। সব শুনে মহিলাটিও অবাক হয়ে ব্যাঙ্কে গোটা বিষয়টি জানান, ব্যাঙ্ক যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাকাউন্টটি ব্লকও করে দেয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে! উপায় না পেয়ে অবশেষে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনও ঘটনার নিষ্পত্তি হয়নি।

সব শেষে একটাই কথার বলার, মন ভরে অনলাইনে জিনিস কিনুন, কিন্তু অবশ্যই চোখ-কান খোলা রেখে! কেননা স্ক্যামারদের টোপ চারদিকে ছড়িয়ে আছে, এভাবে অসতর্ক হলে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।

Show Full Article
Next Story