Bharat Drone Mahotsav 2022: দেশে ড্রোনের ব্যবহার বাড়াতে নতুন উদ্যোগ সরকারের, অনুষ্ঠানে Jio-র ড্রোন ওড়ালেন প্রধানমন্ত্রী
বর্তমানে টেকনোলজির উৎকর্ষতার যুগে বিজ্ঞানের অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারগুলির কথা বললে প্রথমেই নাম আসে ড্রোনের। বিয়েবাড়ির...বর্তমানে টেকনোলজির উৎকর্ষতার যুগে বিজ্ঞানের অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারগুলির কথা বললে প্রথমেই নাম আসে ড্রোনের। বিয়েবাড়ির ফটোশ্যুট থেকে শুরু করে তথ্যচিত্র কিংবা সিনেমা, সবক্ষেত্রেই এখন ডানা লাগানো এই গ্যাজেটটি নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, যেকোনো প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এবং আকাশপথে নজরদারিতেও খুবই কার্যকর হয়ে উঠেছে এই ড্রোন। আর এই চমকপ্রদ গ্যাজেটটির ব্যবহার তথা জনপ্রিয়তা আরও বহুল পরিমাণে বাড়িয়ে তুলতে সম্প্রতি ভারতে শুরু হয়েছে 'Bharat Drone Mahotsav 2022' (ভারত ড্রোন মহোৎসব ২০২২) নামক নতুন ক্যাম্পেইন। গতকাল অর্থাৎ ২৭ মে রাজধানী নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেইসাথে সকলকে চমকে দিয়ে নিজের হাতে একটি ড্রোনও উড়িয়েছেন তিনি। আজ মানে ২৮ মে পর্যন্ত চলবে এই ফেস্টিভ্যাল।
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, জিও প্ল্যাটফর্মস (Jio Platforms)-এর দুটি সংস্থা এই প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে একটি হল 'অ্যাস্টেরিয়া অ্যারোস্পেস লিমিটেড' (Asteria Aerospace Limited)। এটি একটি ফুল-স্ট্যাক ড্রোন টেকনোলজি কোম্পানি, যা ড্রোন হার্ডওয়্যারের পাশাপাশি সফ্টওয়্যারেও কাজ করে। আর দ্বিতীয় সংস্থাটি হল 'সাংখ্যসূত্র ল্যাবস' (SankhyaSutra Labs) যেটি মূলত মাল্টিফিজিক্স, এরোডাইনামিক্স সিমুলেশন সফ্টওয়্যার এবং ডিপ টেকনোলজি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী যে ড্রোনটি উড়িয়েছেন সেটি অ্যাস্টেরিয়া অ্যারোস্পেসের তৈরি। এক্ষেত্রে ড্রোন উৎসবের উদ্বোধন করতে এসে প্রথমেই সমস্ত স্টল পরিদর্শন করেন মোদী। যখন তিনি অ্যাস্টেরিয়ার স্টলে পৌঁছান, তখন ড্রোন প্রযুক্তি সম্পর্কে বিশদে জানতে পেরে তিনি রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে নির্মিত বিজ্ঞানের এই অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারের স্বাদ চেখে দেখতে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিজেই একটি ড্রোন ওড়ান।
এসবের পাশাপাশি শুক্রবার ড্রোন উৎসবে সামিল হয়ে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন যে, কয়েক মাস আগে পর্যন্ত ড্রোনের উপর অনেক বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু এখন দেশের উন্নতির কথা মাথায় রেখে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ নিষেধাজ্ঞাই তুলে নেওয়া হয়েছে। পিএলআই (PLI)-এর মত প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দিনে ভারত বিশ্বমানের ড্রোন হাব হয়ে উঠতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। সেইসাথে এও বলেছেন যে, কীভাবে ড্রোন প্রযুক্তি দেশে একটি বড়োসড়ো বিপ্লবের ভিত্তি হয়ে উঠছে, তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হল প্রধানমন্ত্রী স্বামীত্ব যোজনা (PM Swamitva Yojana)। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথমবারের মতো দেশের গ্রামগুলির প্রতিটি সম্পত্তি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ম্যাপ করা হচ্ছে এবং সেইসাথে ডিজিটাল প্রপার্টি কার্ড দেওয়া হচ্ছে মানুষকে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি যে, আগামী দিনে এই ড্রোনকে কাজে লাগিয়ে দেশের প্রভূত উন্নতিসাধন করা সম্ভবপর হবে বলেও আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, একটা সময় মনে করা হত যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত জিনিসগুলি কেবলমাত্র অভিজাত শ্রেণীর জন্যই উপলব্ধ। কিন্তু বর্তমানে শুধুমাত্র উচ্চবিত্তদের জন্য নয়, বরং প্রত্যেকটি মানুষের ভালো থাকার জন্য এবং সবার মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য উন্নত টেকনোলজি ব্যবহৃত হচ্ছে। আর সবচেয়ে বড়ো কথা হল, উচ্চমানের প্রযুক্তি যাতে জনসাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সমস্ত কাজ করা হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে দেশে কৃষি, ক্রীড়া, প্রতিরক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খাতে ড্রোনের ব্যবহার আরও বহুল পরিমাণে বাড়বে। এছাড়া, সাপ্লাই চেইন সেক্টরেও (মূলত যাতে খুব দ্রুত দেশের সব জায়গায় ওষুধ পৌঁছে দেওয়া যায়) ড্রোনের ব্যাপক ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন মোদী। আর এই উন্নত ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তায় আগামী দিনে দেশে কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্র গড়ে ওঠার সম্ভাবনা যে প্রবল, তা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে খুব স্পষ্টভাবেই বোঝা যায়।