বউয়ের আবদার পূরণ করতে গিয়ে একি করলেন বিজেপি নেতা, শেষে শ্রীঘরে ঠাঁই

কবিগুরু বলে গিয়েছিলেন ‘বক্তা-স্বামীর চেয়ে শ্রোতা-স্বামী ঢের ভাল’। তাই বলে ‘স্ত্রীর অন্যায় আবদার মুখ বুজে মেনে নেওয়া’-স্বামী হওয়া কোনওকালেই ভালো নয়! আর বউয়ের সেই আবদার…

কবিগুরু বলে গিয়েছিলেন ‘বক্তা-স্বামীর চেয়ে শ্রোতা-স্বামী ঢের ভাল’। তাই বলে ‘স্ত্রীর অন্যায় আবদার মুখ বুজে মেনে নেওয়া’-স্বামী হওয়া কোনওকালেই ভালো নয়! আর বউয়ের সেই আবদার বাঁকা পথে পূরণ করতে গিয়ে যদি কোনো জনপ্রতিনিধির ‘নাক কাটা’ যায়, তবে এর চাইতে লজ্জাজনক ঘটনা আর হয় না! কথায় আছে ‘অতি চালাকের গলায় দড়ি’! হ্যাঁ, কথাটি যুগ যুগ ধরে সত্যি প্রমাণিত হয়ে এসেছে। চালাকির দ্বারা বউয়ের বহু মূল্যবান গয়নার আবদার পূরণ করতে গিয়ে বিজেপি নেতার স্থান হল অবশেষে গারদে।

সম্প্রতি ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। যেখানে একটি সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা গিয়েছে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাদা রঙের মাহিন্দ্রা স্করপিও (Mahindra Scorpio) গাড়িতে এক দুষ্কৃতী আগুন লাগিয়ে চলে যান। মুহূর্তে সমগ্র গাড়িটিকে গ্রাস করে আগুনের ভয়াবহ শিখা। এইচডব্লিউ নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি গত ১৪ এপ্রিল তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের মাধুরাভয়ালে ঘটেছে। জানা যায় সেটি তিরুভাল্লুর পশ্চিম জেলার বিজেপি সেক্রেটারি সতীশ কুমার (Sathish Kumar)-এর গাড়ি।

ঘটনার পরবর্তীতে বিজেপি নেতা সতীশের কয়েকজন প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজন মিলে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কোনো এক দুষ্কৃতী সতীশের স্করপিও গাড়িতে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায়, সে কারণে গাড়িতে আগুন লাগে। অন্যদিকে সতীশ গাড়ির ক্ষতিপূরণ পেতে বীমা সংস্থার কাছে আর্জি জানান।

অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ আবিষ্কার করে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যাওয়া ঐ ব্যক্তিটি আর কেউ নয়, বরং সতীশ কুমার নিজেই। সতীশ নিজেই একটি পেট্রোল বোমার মাধ্যমে তাঁর গাড়িতে আগুন লাগিয়ে ইন্সুরেন্স পাওয়ার জন্য দাবি জানায়। সত্যিটা সামনে আসতেই সতীশের হাতে হাতকড়া পড়ায় পুলিশ। জেরায় সতীশ নিজের কেচ্ছার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন তাঁর স্ত্রী মূল্যবান সোনার গহনার বায়না করেছিলেন। যা কিনে দেওয়ার অর্থ সতীশের ছিল না। বউয়ের ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ে তিনি এহেন উপায় অবলম্বন করতে বাধ্য হন। যাতে গাড়ির বীমার টাকা দিয়ে তিনি তাঁর স্ত্রীকে সেই গহনা কিনে দিতে পারেন।

এই ঘটনা বীমা সংস্থাগুলোকে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল কিভাবে মানুষ তাদের বোকা বানায়। লাগামহীন লালসার কারণেই কোনো একজন এই ভুল পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। বিজেপি নেতার মাহিন্দ্রা স্করপিওতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাটিও তারই এক দৃষ্টান্ত।