4G পরিষেবা চালু করতে ফের BSNL কে আর্থিক সাহায্য করতে পারে ভারত সরকার
ভরাডুবি মোকাবিলায় বিএসএনএলের (BSNL) পাশে দাঁড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। বহু আবেদন-নিবেদনের পর অবশেষে তারা রাষ্ট্রায়ত্ত...ভরাডুবি মোকাবিলায় বিএসএনএলের (BSNL) পাশে দাঁড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। বহু আবেদন-নিবেদনের পর অবশেষে তারা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবী মেনে নিয়েছে। এর ফলে যাবতীয় লোকসান থেকে পরিত্রাণের পাশাপাশি স্বদেশী প্রযুক্তি-নির্ভর 4G পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজেও BSNL নতুন করে উজ্জীবিত হবে বলে একাংশের দাবী। FinancialExpress -এর প্রতিবেদন অনুযায়ী আলোচ্য ত্রাণ প্যাকেজকে কেন্দ্র করে দেশীয় টেলিকম সংস্থাটি ইতিমধ্যেই ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশনস বা ডটের (DoT) সাথে প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু করেছে। যদিও সরকারি সাহায্য পেয়ে BSNL ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালেও কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএনএলের জন্য প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ বরাদ্দ করে। প্রাপ্ত অর্থকে কাজে লাগিয়ে সেবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকা সাশ্রয়ে সমর্থ হয়। ভলেন্টিয়ারি রিটায়ারমেন্ট স্কিমে প্রায় ২৯,৯৩৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তারা উক্ত অর্থ সাশ্রয় করে। যদিও এজন্য মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বহু পঞ্চাশোর্ধ কর্মচারীকে তাদের পদ থেকে সরতে হয়।
রিলিফ প্যাকেজ দ্বারা BSNL ঠিক কিভাবে লাভবান হবে
তবে অতীতের কথা সরিয়ে রেখে নতুন ত্রাণ প্যাকেজের কথা বলতে গেলে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে এটি দেশব্যাপী 4G পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএসএনএলের সহায় হবে। এর আগে বহুবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলকোর পক্ষ থেকে দেশীয় প্রযুক্তি-নির্ভর 4G পরিষেবা সরবরাহের ব্যাপক খরচ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এক্ষেত্রে বিএসএনএল সরকারের তরফ থেকে প্রায় ৩৭,১০৫ কোটি টাকার অর্থ সাহায্য দাবী করে। আর্থিক প্যাকেজ মঞ্জুর হওয়ায় সংস্থার এই দাবী কিছুটা হলেও পূর্ণ হল বলে মনে করা হচ্ছে।
4G পরিকাঠামো গড়ে তোলায় সাহায্য ছাড়াও পরিচালনাগত খরচ নির্বাহেও নতুন আর্থিক প্যাকেজ বিএসএনএলকে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি যে বার্ষিক হিসেব অনুযায়ী ২০২১ অর্থবর্ষে বিএসএনএলের আয় প্রায় ২ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৮,৫৯৫ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। তবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও একইসময়ে সংস্থা গতবারের তুলনায় শেষোক্ত অর্থবর্ষে ৫০ শতাংশ লোকসান এড়াতে সমর্থ হয়েছে যা অত্যন্ত আশার কথা। মূলত কর্মচারীদের জন্য খরচ কমিয়েই সংস্থাটি '২০ অর্থবর্ষের ১৫,৪৪৯ কোটি টাকা লোকসান, '২১ অর্থবর্ষে ৭,৪৪১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনতে পেরেছে।
এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে 4G রোলআউটের জন্য এই মুহূর্তে BSNL অনেকাংশেই সরকারের মুখাপেক্ষী। আপাতত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি সারা দেশে স্বদেশী প্রযুক্তিতে নির্মিত প্রায় এক লক্ষ 4G সাইট সংস্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য তাদের প্রায় ১২,৫০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সরকারি ত্রাণ প্যাকেজে এই প্রয়োজন যে অনেকটাই মিটবে তা বলা বাহুল্য। এছাড়া ফাইবারাইজেশন, আইটি ব্যবস্থা এবং ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উপকরণ কেনার জন্যেও সংস্থার প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা দরকার যা পূরণে আর্থিক প্যাকেজ বিশেষ সহায়ক হবে বলে আমাদের ধারণা।