Dark Pattern: অনলাইন শপিং করতে গিয়ে আর অন্ধকারে থাকবেননা ক্রেতারা, সরকার ব্যান করল ‘ডার্ক প্যাটার্ন’

বিগত এক দশকের কাছাকাছি সময় ধরে ভারতীয় জনজীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে Flipkart, Amazon-এর মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলি – বাড়ি বসে সস্তায় পছন্দের বা প্রয়োজনের জিনিস কিনতে…

বিগত এক দশকের কাছাকাছি সময় ধরে ভারতীয় জনজীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে Flipkart, Amazon-এর মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলি – বাড়ি বসে সস্তায় পছন্দের বা প্রয়োজনের জিনিস কিনতে অধিকাংশই এই সমস্ত অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করছেন। এদিকে, সাধারণ মানুষের এই নির্ভরশীলতাকে কাজে লাগিয়ে বারংবার জালিয়াতির ফাঁদ পাতা হচ্ছে। এমনকি প্ল্যাটফর্মগুলিও ক্রেতাদের আকর্ষিত করতে গিয়ে কার্যত শপিংয়ের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি করছে! সেক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান অনলাইন জালিয়াতির বিষয়টি এড়িয়ে কাস্টমারদের স্বার্থ রক্ষা এবং সুরক্ষার জন্য নতুন নিয়ম চালু করল মোদী সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্র, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিতে ‘ডার্ক প্যাটার্ন’ (Dark pattern)-এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে যাতে করে গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়ার বা তাদের পছন্দের অর্ডার হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি (CCPA), গত ৩০শে নভেম্বর এই বিষয়ে ‘গাইডলাইনস ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড রেগুলেশন অফ ডার্ক প্যাটার্নস’ শিরোনামে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল এবং তার ভিত্তিতেই এই নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এটি, ভারতে প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস প্রোভাইডার সমস্ত প্ল্যাটফর্ম, এমনকি বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিক্রেতাদের জন্য প্রযোজ্য।

কাস্টমারদের স্বার্থে ঠিক কী বলছে সরকার?

সরকারের নতুন নির্দেশে গ্রাহকদের ‘অন্ধকারে’ রেখে অনলাইন ব্যবসা চালানোর বিষয়ে জরিমানা ও আইনি শাস্তির কথা বলা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ‘ডার্ক প্যাটার্ন’ অবলম্বন করে বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন ছড়ানো বা অন্যায্য ট্রেড প্র্যাক্টিস করার বিষয়টি কাস্টমার রাইট লঙ্ঘনের সমান হবে। আর একবার নিয়মটি কার্যকর হয়ে গেলে কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘ডার্ক প্যাটার্ন’ নীতি অনুসরণ করা যাবেনা, নাহলে সেই সংস্থার বিরুদ্ধে কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। শুধু তাই নয়, গ্রাহক সুরক্ষা আদালতে সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জরিমানা বা অন্যান্য আইনি শাস্তি ধার্য করা হতে পারে।

এই বিষয়ে কনজিউমার অ্যাফায়ার্স সেক্রেটারি রোহিত কুমার সিং, সংবাদমাধ্যম পিটিআই (PTI)-কে বলেন যে – বর্তমান ডিজিটাল বিজনেসের প্ল্যাটফর্মগুলি দ্বারা অন্ধকার প্যাটার্নগুলি ডার্ক প্যাটার্ন ব্যবহার করে গ্রাহকদের করছে। আর তাই, তাদের কোন পদক্ষেপ অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন হিসেবে গ্রহণযোগ্য এবং কোনটি নয়, সে বিষয়ে কড়াকড়ি আনতেই এই নিয়ম। জানিয়ে রাখি, এর আগে গত জুন মাসেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছিল সরকার – মূলত ওই সময় থেকেই অনলাইন শপিংয়ের হার এবং ইন্টারনেট ইউজার সংখ্যার ক্রম বৃদ্ধিই সরকার এবং কনজিউমার প্রোটেকশন রেগুলেটরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

‘ডার্ক প্যাটার্ন’ আদতে কী?

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ইন্টারফেস, তার নেওয়া পদক্ষেপ-এক্সপিরিয়েন্স জাতীয় মিথস্ক্রিয়া ব্যবহার করে যেকোনো অনুশীলন বা প্রতারণামূলক ডিজাইন প্যাটার্ন ব্যবহার করাকেই প্রযুক্তির ভাষায় বলা হয় ‘ডার্ক প্যাটার্ন’। সোজাভাবে বললে, কোনো অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের কেনাকাটার অফার নোটিফিকেশন হিসেবে বারবার প্রদর্শিত হওয়া, কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কিছু প্রোডাক্ট দেখলে ইন্টারনেটের যেখানে সেখানে সেটির বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়া, কোনো জিনিস কেনার জন্য প্রলুব্ধকর সাজেশন আসা কিংবা একটি প্রোডাক্টের সাথে আরেকটি কিছু কিনলে ছাড় পাওয়া যাবে এমন অপশন ইত্যাদি সমস্ত কিছুই আসলে ‘ডার্ক প্যাটার্ন’। এছাড়া, ‘বাস্কেট স্নিকিং’-ও ক্রেতাদের অন্ধকারে রাখার এমন একটি উপায় যেখানে ইউজারের সম্মতি ছাড়াই চেকআউটের সময় কার্টে অতিরিক্ত আইটেম যুক্ত হয়ে যায়। আবার ‘ফোর্সড অ্যাকশন’ নামক আরেকটি ডার্ক প্যাটার্ন, যাতে কাউকে কোনো প্রোডাক্ট-পরিষেবা গ্রহণ করতে বা সাবস্ক্রিপশন নিতে কার্যত বাধ্য করা হয়। সেক্ষেত্রে, সিসিপিএ, নেটদুনিয়ার মোট ১৩টি মূল ডার্ক প্যাটার্নকে চিহ্নিত করেছে, যেগুলি ইউজারদের বিভ্রান্ত করতে বা প্রতারণা করার জন্য ডিজাইনড্।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন