Courier Scam: দেশজুড়ে চলছে কুরিয়ার জালিয়াতি, ৬ লক্ষ টাকা হারালেন ডাক্তার ও আইটি মহিলা
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ অনলাইনে কাজ করায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। আর এরই পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে অনলাইন...যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ অনলাইনে কাজ করায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। আর এরই পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে অনলাইন স্ক্যামের (Online Scam) ঘটনাগুলিও। সম্প্রতি দিল্লিতে একজন ডাক্তার এই স্ক্যামের স্বীকার হয়ে হারিয়েছেন ৪.৪৭ কোটি টাকা। আবার মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়েও এক মহিলা আইটি প্রফেশনাল সাইবার ফ্রডের পাল্লায় পড়ে হারিয়েছেন ১.৯৭ লক্ষ টাকা।
গেজেটস নাওয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভুক্তভোগী মহিলা এক অজানা নম্বর থেকে একটি কল পান, তারপর এক ব্যক্তি তাকে কুরিয়ার কোম্পানির ইনচার্জ হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন যে, তার তাইওয়ানের একটি ফেডেক্স প্যাকেজ বিমানবন্দরে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে , কারণ এতে কিছু সন্দেহজনক জিনিস রয়েছে। তখন ওই মহিলা বলেন যে, তিনি কোনো পার্সেল তাইওয়ানে পাঠাননি। এরপর ওই ব্যক্তি ভিকটিমকে পরামর্শ দেন যে, তিনি যেন অতিসত্বর অনলাইনে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন, কারণ সেই পার্সেলে পাঁচটি পাসপোর্ট, দুটি ক্রেডিট কার্ড এবং কিছু মাদকদ্রব্যও আছে।
এই কথোপকথনের পরে ওই ব্যক্তি সেই কলটি অন্য একজনের কাছে স্থানান্তর করেন। ওই দ্বিতীয় ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ বিভাগের একজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, যেহেতু কেসটি মাদকদ্রব্য সম্পর্কিত, সেই জন্য তিনি এই কলটি নারকোটিক্স ডিপার্টমেন্টের কাছে ট্রান্সফার করছেন।
কিছুক্ষণ পর স্ক্যামাররা নিজেদের নারকোটিক্স ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই মহিলার কাছে তার আধার নম্বর চায়। এরপর তারা দাবি করে যে, আধার নম্বরটি একাধিক ক্রিমিনাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সাথে যুক্ত। আর সমস্যা সমাধানের জন্য ওই মহিলাকে তারা স্কাইপি অ্যাপ ডাউনলোড করার নির্দেশ দেয়।
ওই ভুক্তভোগী মহিলার রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি প্রতারকদের নির্দেশ অনুসারে যখন স্কাইপি অ্যাপ ডাউনলোড করেন, তখন তাকে একটি আইডি দেওয়া হয় যেখানে ইউজার আইডির নামের জায়গায় নারকোটিক্স ডিপার্টমেন্ট এর উল্লেখ ছিল। যে কারণে তিনি কোনো সন্দেহ না করেই স্কাইপিতে প্রতারকদের সাথে ভিডিও কলে যোগ দেন। সেখানে তাকে কিছু ফটোগ্রাফ দেখানো হয় এবং বলা হয় তার আধার নম্বরটি বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করা রয়েছে।
এরপর ওই মহিলাকে নারকোটিক্স ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয় এবং তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্যও চাওয়া হয়। পাশাপাশি, তার আধার নম্বর যাচাই করার উদ্দেশ্যে দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৮,৮৮৮ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তাকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে তাকে টাকাটি ফেরত দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী মহিলাটি তাদের কথায় বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে দেন এবং দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পরও টাকা ফেরত না আসায় তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। আর এর পরেই তিনি স্ক্যামারদের বিরুদ্ধে থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন।
এইভাবে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে অনলাইন জালিয়াতি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রতারকরা এমন পদ্ধতি অবলম্বন করছে যাতে উচ্চ শিক্ষিত বা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা মানুষেরাও সহজেই তাদের কথায় বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছে। আর যার ফলে তাদের হারাতে হচ্ছে নিজেদের কষ্টের উপার্জনের টাকা। তাই সাধারণ মানুষ যাতে এই ধরনের জালিয়াতির শিকার না হয় সেজন্য তাদের সর্বদা সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং স্ক্যামারদের কথায় বিশ্বাস করে তাদের টাকা ট্রান্সফার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।