ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করবেন ভাবছেন? লক্ষ লক্ষ মানুষ জালিয়াতির শিকার

বিশ্ব অর্থনীতিতে ঊর্ধ্বগামী জনপ্রিয়তার মধ্যেই এবার বড়সড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি ক্রিপ্টো বাজার। ক্রিপ্টো বিনিয়োগ নিয়ে এখনও সতর্ক না হলে সমস্যা উত্তরোত্তর বাড়বে, পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। স্কুইড কয়েন,…

বিশ্ব অর্থনীতিতে ঊর্ধ্বগামী জনপ্রিয়তার মধ্যেই এবার বড়সড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি ক্রিপ্টো বাজার। ক্রিপ্টো বিনিয়োগ নিয়ে এখনও সতর্ক না হলে সমস্যা উত্তরোত্তর বাড়বে, পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। স্কুইড কয়েন, ডোজকয়েন, থেকে শুরু করে শিবা ইনুর মতো নিত্যনতুন ক্রিপ্টোকয়েনের মার্কেটে প্রচলন ও তাদের আকাশছোঁয়া বাজার মূল্য এক দিয়ে যেমন লগ্নিকারীদের প্রলুব্ধ করছে, পাশাপাশি বাড়িয়ে তুলেছে কারচুপি, জালিয়াতির মতো ঝুঁকিও।

সম্প্রতি, সর্বমোট তিন ট্রিলিয়ন ডলার (প্রায় ২,২২,২৬,৩৮৫ কোটি টাকা ) মার্কেট ভ্যালু ছাড়ায় বিনিয়োগ দুনিয়ার নয়া আকর্ষণ, ভার্চুয়াল কারেন্সি। বুধবার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্রিপ্টো মুদ্রা, বিটকয়েন পৌঁছায় ৬৮,৫১৩ ডলারে। তবে প্রচলিত ক্রিপ্টো মুদ্রায় লেনদেনকারীরা সম্মুখীন হচ্ছেন মুদ্রা জালিয়াতির। ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং প্ল্যার্টফর্ম, Bequant- এর গবেষণা মূলক কার্যক্রমের প্রধান, মার্থা রেয়েস(Martha Reyes) এ প্রসঙ্গে বলেন , যে কোনো গোষ্ঠীই বর্তমানে একটি অ্যাপ তৈরি করতে এবং তা থেকে মার্কেটে নতুন কয়েন চালু করতে সক্ষম। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো ক্রিপ্টো দুনিয়া।

গত অক্টোবরে, নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় স্কুইড গেম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে মার্কেটে আসে স্কুইড কয়েন (Squid coin) নামের এক ক্রিপ্টো মুদ্রা। লগ্নিকারীদের সর্বশান্ত করার আগে রকেটের গতিতে বাজার মূল্য বাড়িয়ে ৩০ মিলিয়েন ডলারের গন্ডি টপকায় এই কারেন্সি। আর তারপরেই ঘটে বিপত্তি। প্রায় ৮৯,০০০ মানুষকে কার্যত পথে বসিয়ে, সোমবার নাগাদ স্কুইড কয়েন এর মূল্য প্রায় শূন্যতে এসে ঠেকে। এই আচমকা ধাক্কায় কার্যত মাথায় হাত বিনিয়োগকারীদের। ক্রিপ্টো মহলে অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্রার নিরাপত্তা নিয়েও বাড়ছে আশঙ্কার জল্পনা।

এই ধরনের জালিয়াতি কে ‘রাগপুল’ (Rug pull) অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের পায়ের তলা থেকে আস্তরণ টেনে সরিয়ে নেওয়ার সাথে তুলনা করা চলে।

যুক্তরাষ্ট্রের করনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ এসওয়ার প্রসাদ (Eswar Prasad) মন্তব্য করেন, ‘রাগপুল’ হল কুখ্যাত জালিয়াতিগুলির মধ্যে একটি, যা লগ্নিকারীদের অতিরিক্ত মুনাফার আশা দেখিয়ে তাদের অসুরক্ষিত অবস্থায় ছেড়ে দেয়।

Chainalysis-এর রিসার্চ ডিরেক্টর, কিম গ্রাউয়ের (Kim Grauer) বলেন, বিকেন্দ্রীভূত অর্থনীতির (DeFi) বিপুল উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের উচ্চাভিলাষই ‘রাগপুলে’-র মতো জালিয়াতির প্রবণতা বাড়াচ্ছে। চলতিবছরের শুরুতে, গ্যারি জেন্সলার (Gary Gensler), যুক্তরাষ্ট্র্রীয় মার্কেট ওয়াচডগ -SEC- এর চেয়ারপার্সন, ক্রিপ্টো বাজার কে ‘ওয়াইল্ড ওয়েস্ট ‘ (Wild West) এর সাথে তুলনা করেন।

আলোচিত স্কুইড কয়েন কেনার জন্য লগ্নিকারীদের ‘PancakeSwap’ নামের একটি বিকেন্দ্রীভূত প্ল্যার্টফর্ম এর দ্বারস্থ হতে হয়, যেখানে লেনদেনে মধ্যস্থতাকারীর অস্তিত্ব থাকে না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই জালিয়াতির ঝুঁকি থেকে যায়।

বর্তমানে নিয়ন্ত্রিত প্ল্যার্টফর্মগুলিতেও ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে উঠেছে আমজনগণ। তবে বিশেষজ্ঞরা যুক্তির দ্বারা ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে জালিয়াতি কে আলাদা করতে সচেষ্ট হয়েছেন। রেয়েস, যিনি অতীতে জনপ্রিয় মিমকয়েনের সাথে AMC-এন্টারটেনমেন্ট, গেমস্টপ এর মতো উঠতি কোম্পানিগুলোর তুলনা করেছিলেন, ক্রিপ্টো মুদ্রার জালিয়াতি সম্পর্কে মন্তব্য করেন, এটি নিছক অপযশ আরোপের উদ্দেশ্যে হওয়া এক চর্চা।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন