Oil India Limited: সাইবার হানার শিকার অয়েল ইন্ডিয়ার সদরদপ্তর, বসে গেল সিস্টেম
বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে সাইবার হামলার কথা শোনা যায়। প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন উপায় অবলম্বন...বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে সাইবার হামলার কথা শোনা যায়। প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন উপায় অবলম্বন করে ছোটো-বড়ো সংস্থা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলকেই প্রতারণার জালে ফাঁসাচ্ছে হ্যাকাররা। ধনী কিংবা দরিদ্র, কারোরই নিস্তার নেই সাইবার আক্রমণকারীদের হাত থেকে। এবার আসামের ডিব্রুগড় জেলার দুলিয়াজানে অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড বা OIL (ওআইএল)-এর সদর দপ্তর কে টার্গেট করল হ্যাকাররা, যার ফলে সংস্থাটি তার সমস্ত কম্পিউটার এবং আইটি সিস্টেম বন্ধ করে দিয়েছে।
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, উত্তর-পূর্ব ভারতে অবস্থিত দুলিয়াজান ওআইএল-এর ফিল্ড হেডকোয়ার্টারের জন্য একটি আদর্শ স্থান। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সাইবার হামলার খবর রীতিমতো সেখানে একটি ভীতসন্ত্রস্ত তথা আতঙ্কিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে জানা গেছে যে, গত রবিবার ওই সংস্থায় র্যানসমওয়্যার হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, র্যানসমওয়্যার অ্যাটাক দিন কে দিন বেড়েই চলেছে। ফলে হালফিলের এই ঘটনা সেই পোর্টফোলিওতে একটি নতুন সংযোজন মাত্র। এই ঘটনার ফলে সোমবার সংস্থার অফিসের সামনে কর্মীদের ব্যাপক ক্ষোভও লক্ষ্য করা গেছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে ওআইএল-এর মুখপাত্র ত্রিদিভ হাজারিকা (Tridiv Hazarika) জানিয়েছেন যে, সংস্থার তিন থেকে চারটি কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে - একথা জানার পরেই সোমবার LAN (লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক) কানেকশন থেকে কোম্পানির সমস্ত কম্পিউটার সিস্টেমের সংযোগকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সদর দফতরের কোনো কম্পিউটারে বর্তমানে ইন্টারনেট কানেকশন নেই। এবং সেইসাথে সমস্যাটির সমাধানের জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে জোরকদমে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনার পর ওআইএল দুলিয়াজান সদর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছে। পুলিশ বর্তমানে এই কেলেঙ্কারির সরেজমিনে তদন্ত চালাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে হাজারিকা জানিয়েছেন যে, এই ভাইরাস অ্যাটাকের জন্য ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও আইটি বিভাগ নির্ধারণ করতে পারেনি। ওআইএল-ও এই সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে জোরকদমে কাজ করছে। তিনি আরও বলেছেন যে, এর আগেও সংস্থাটি এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। তবে এবারের এই ঘটনাটি একটি বড়োসড়ো আইটি-সম্পর্কিত সংকট বলেই মনে করা হচ্ছে, যার সমাধান হতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে।
দিন-কে-দিন টেকনোলজি যত উন্নত হচ্ছে, হ্যাকিংয়ের ঘটনাও যেন গোটা বিশ্বজুড়ে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেকনোলজিকে হাতিয়ার করে একাধিক অসম্ভবকে সম্ভব করা গেলেও হ্যাকারদের রোখা কিন্তু কিছুতেই আর সম্ভব হচ্ছে না। তাবড় তাবড় প্রযুক্তিবিদ থেকে শুরু করে নামজাদা সংস্থার গবেষক, কেউই আর হ্যাকারদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। দিনের পর দিন, একের পর এক দুর্বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে গোটা বিশ্বকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছে একদল সাইবার আক্রমণকারী। তাই প্রযুক্তিকে টেক্কা দিয়ে এভাবেই হ্যাকাররা তাদের এই নিত্যনতুন কার্যাবলী চালিয়ে যাবে, নাকি সত্যিই অদূর ভবিষ্যতে গোটা বিশ্বে হ্যাকিংয়ের ঘটনা রোখা সম্ভবপর হবে, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।