প্রযুক্তির কামাল! ড্রোনের সাহায্যে বাঁচল ১৪ বছরের ডুবন্ত কিশোরের প্রাণ
এই টেকনোলজির উৎকর্ষতার যুগে বিজ্ঞানের অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারগুলির মধ্যে অন্যতম হল ড্রোন (Drone)। বিয়েবাড়ির ফটোশ্যুট থেকে...এই টেকনোলজির উৎকর্ষতার যুগে বিজ্ঞানের অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারগুলির মধ্যে অন্যতম হল ড্রোন (Drone)। বিয়েবাড়ির ফটোশ্যুট থেকে শুরু করে সার্ভের কাজ বা তথ্যচিত্র-সিনেমা নির্মাণ, সবক্ষেত্রেই এখন 'ডানা' লাগানো এই অত্যাধুনিক গ্যাজেটটি নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে। এসবের পাশাপাশি যেকোনো প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এবং আকাশপথে নজরদারিতেও চলতি সময়ে খুবই কার্যকর হয়ে উঠেছে এই ড্রোন। তবে ড্রোন কি শুধু এই কাজগুলিই করে? এই প্রশ্নের উত্তরে কমবেশি সকলেই হ্যাঁ বললেও এই প্রচলিত ধারণা পাল্টে যাবে একটি খবরেই। আসলে এবার, স্পেনের ১৪ বছরের এক কিশোরের প্রাণ বেঁচেছে ড্রোনের জোরে; ফলে, যাবতীয় সুবিধা বাদে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম হিসেবেও নেট দুনিয়ায় তুমুল সাড়া ফেলেছে এই ইলেকট্রনিক গ্যাজেটটি।
সম্প্রতি এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ার একটি সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের ফলে আছড়ে পড়ে সমুদ্রের সুবিশাল ঢেউ। আর সেই ঢেউয়ের মাঝেই আটকে পড়ে ১৪ বছরের এক কিশোর। কোনোক্রমে সে সাঁতার কেটে বাঁচার চেষ্টা করলেও, বড়ো বড়ো শক্তিশালী ঢেউয়ের ধাক্কায় তার সমস্ত চেষ্টা বিফলে যেতে থাকে। ক্রমাগত ঢেউ আছড়ে পড়ার ফলে কিশোরটি যখন প্রায় ডুবতে থাকে, ঠিক সেই সময়ই সেখানে হাজির হয় একটি লাইফগার্ড ড্রোন। এবং সাথে সাথে ড্রোনটি থেকে ফেলে দেওয়া হয় একটি লাইফ ভেস্ট, যেটিকে আঁকড়ে ধরে ভাসতে থাকে ওই কিশোর। এর পর কোস্টগার্ডের নৌকা এসে উদ্ধার করে ওই কিশোরকে।
জেনারেল ড্রোনসের ড্রোন পাইলট মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল পেদ্রেরো (Miguel Angel Pedrero) ওই লাইফগার্ড ড্রোনটি পরিচালনা করছিলেন। ঘটনাটির প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন যে, ড্রোনটি যখন ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছোয়, তখন ওই কিশোরের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সমুদ্রের অতিকায় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার জন্য সে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছিল, কিন্তু তার বেঁচে থাকার শক্তি ক্রমশ ফুরিয়ে আসছিল। তাই তার প্রাণ বাঁচাতে তৎক্ষণাৎ ড্রোন মারফত লাইফ ভেস্টটি তার কাছে পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেছেন যে, বিশাল ঢেউয়ের কারণে কিশোরটিকে উদ্ধার করা খুব একটা সোজা ব্যাপার ছিল না। কিন্তু লাইফগার্ড টিম আসার আগে পর্যন্ত যেকোনো উপায়ে কিশোরটিকে বাঁচিয়ে রাখাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাই শেষ পর্যন্ত ড্রোন মারফতই তার কাছে লাইভ ভেস্ট পৌঁছোনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবার আপনাদের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসছে যে, এখন ওই কিশোর কেমন আছে? প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে যে, ওই কিশোরকে সফলভাবে উদ্ধারের পর তাকে অক্সিজেন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে তড়িঘড়ি একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর ২৪ ঘণ্টা বাদে তাকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে বহুবার দেখা গিয়েছে যে অ্যাপল ওয়াচ বা আইফোনের সহায়তায় আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীর প্রাণ বাঁচানো গেছে, তবে এবার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটির সুবাদে ড্রোনও জুড়ল প্রযুক্তি বা বিজ্ঞানের সুফলের তালিকায়। যদিও এর আগে, আমাদের দেশের কেরালায় কার্যত একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল; ওই সময় ড্রোনের নজরদারির কারণে ডুবতে থাকা মৎস্যজীবিদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল।