Elon Musk: রাষ্ট্রপুঞ্জ শুধু কীভাবে খরচ করতে হবে, বিশ্ব থেকে অনাহার মেটাতে প্রস্তুত এলন মাস্ক

বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তির উত্তরোত্তর উন্নতি মানুষকে অত্যন্ত স্বচ্ছন্দে জীবনযাপনের পাশাপাশি উজ্জল ভবিষ্যতের আশ্বাস দিচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বহু কষ্টসাধ্য কাজ অত্যন্ত সহজে হয়ে যাচ্ছে, যা…

বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তির উত্তরোত্তর উন্নতি মানুষকে অত্যন্ত স্বচ্ছন্দে জীবনযাপনের পাশাপাশি উজ্জল ভবিষ্যতের আশ্বাস দিচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বহু কষ্টসাধ্য কাজ অত্যন্ত সহজে হয়ে যাচ্ছে, যা মানুষকে নিত্যনতুন রুজিরোজগারের সুযোগের পাশাপাশি সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কিন্তু এত উন্নতির মাঝেও এখনও কিন্তু বিশ্বে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা অনাহারে দিন কাটান এবং তার সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। টেকনোলজি যতই উন্নতি লাভ করুক না কেন, এই সমস্যার সমাধান কিন্তু কোনোভাবেই করা যাচ্ছে না। এবং এই সমস্যাকে কেন্দ্র করেই এক বাদানুবাদের সাপেক্ষে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হলেন দুই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব – রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (United Nations World Food Program বা WFP) পরিচালক ডেভিড বিয়াসলি (David Beasley) এবং Tesla ও SpaceX-এর সিইও এলন মাস্ক (Elon Musk)।

উল্লেখ্য যে, মাস্কের মোট সম্পত্তির মূল্য ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও কাছাকাছি। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই সম্প্রতি বিয়াসলি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন যে, মাস্কের মতো বিলিওনেয়ারদের এই বিপুল সম্পদের মাত্র ২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার পেলেই প্রায় ৪২ মিলিয়ন মানুষের খাদ্যসংস্থান করা সম্ভব। বিশ্বের বিপুল খাদ্যসমস্যার বেশ অনেকটা সমাধান এই টাকা দিয়ে করা যায়। এবং মানুষের ক্ষুধা মেটাতে এই সামান্য পরিমাণ টাকা দেওয়া তাদের মতো মানুষের কাছে কোনো ব্যাপারই নয়।

এরপর Deep Instinct নামে একটি কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডঃ এলি ডেভিড (Dr Eli David) সেই প্রতিবেদনটির একটি ছবি টুইট করেন, যেখানে বিয়াসলির এই কথাগুলি উল্লেখ করা রয়েছে। এবং সেটি দেখা মাত্রই উত্তর দেন এলন মাস্ক। তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে টুইট করে বলেন যে, “যদি WFP সঠিকভাবে বর্ণনা করতে পারে যে ৬ বিলিয়ন ডলার ঠিক কীভাবে বিশ্বের খাদ্যসমস্যার সমাধান করবে, তাহলে আমি এখনই টেসলা শেয়ার বিক্রি করে মানুষের স্বার্থে এই টাকা দান করব। তবে এটি অবশ্যই ওপেন সোর্স অ্যাকাউন্টিং হতে হবে, যাতে জনগণ সঠিকভাবে জানতে পারে যে কীভাবে টাকাটা ব্যয় করা হচ্ছে।” তিনি ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে যে তাঁর মনের বেশ খানিকটা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, তা এই টুইট থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়।

এদিকে বিয়াসলি, তাঁর মন্তব্য ঘিরে বেশ ভালোরকম ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে বুঝতে পেরে একটি টুইটে লেখেন, “আমরা কখনও বলিনি যে ৬ বিলিয়ন ডলার বিশ্বের খাদ্যসমস্যার সমাধান করবে। তবে ৪২ মিলিয়ন মানুষের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এটি একটি এককালীন অনুদান হিসেবে কাজে লাগতে পারে। ২০২০ সালে ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের সাহায্যে ১১৫ মিলিয়ন মানুষের খাদ্যসমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়েছিল। তবে বর্তমানে কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্বে খাদ্যসংকট মেটাতে আমাদের এখন ৬ বিলিয়নেরও বেশি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। তাই এই সহজসরল হিসাবে অযথা ভুল বোঝাবুঝির কোনো কারণ নেই। এরপরও যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সরাসরি এলন মাস্ক আমার সাথে বোঝাপড়া করে নিতে পারে।”

বিয়াসলি’র এই টুইটের পর, বিশ্বের খাদ্যসমস্যার সমাধান করার জন্য কোন খাতে কত টাকা খরচ হয় তার বর্তমান এবং প্রস্তাবিত হিসাব দেখতে চান মাস্ক, এবং এই হিসাব তিনি সরাসরি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে বলেন যাতে জনসাধারণও দেখতে পারে যে জাতিসংঘ খাদ্যসংকট মেটাতে কীভাবে টাকা ব্যয় করে। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘকে কোণঠাসা করতে তিনি এমন একটি আর্টিকেলের লিঙ্ক পোস্ট করেন যেখানে তাদের কর্মকর্তাদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এখন এই দু-পক্ষের বাদানুবাদের শেষ কোথায়, তার উত্তর একমাত্র সময়ই দিতে পারবে। তবে এর আগে বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করে থাকলেও, এলন মাস্কের সাম্প্রতিক এই টুইট কিন্তু যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে।